আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিগত কয়েক বছরে বিশ্ব নিরাপত্তার পরিস্থিতি একেবারেই পরিবর্তিত হয়ে গেছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে। এর মধ্যে ইরানের সামরিক সক্ষমতা ক্রমেই উন্নত হচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। সম্প্রতি ইরান তাদের নতুন যুদ্ধজাহাজ ‘শাহান’ উন্মোচন করেছে, যা শত্রুদের মোকাবেলায় তাদের শক্তি প্রদর্শন করছে। অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সজ্জিত এই জাহাজটি ভবিষ্যৎ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইরানের প্রতিরক্ষার মূল স্তম্ভ হতে পারে।
Table of Contents
ইরানের নতুন যুদ্ধজাহাজ ‘শাহান’: শক্তির এক নতুন সঙ্গীত
ইরানের নতুন যুদ্ধজাহাজ ‘শাহান’ সম্পূর্ণ নতুন প্রযুক্তি এবং সক্ষমতা নিয়ে সজ্জিত। ইরানের নৌবাহিনীর কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহারাম ইরানি বলেন, “আমাদের নৌবাহিনী এখন শত্রুর বিরুদ্ধে পূর্ণ সক্ষমতা অর্জন করেছে। ধারাবাহিক নৌ অভিযানের মাধ্যমে শত্রুপক্ষের অপারেশনাল ক্ষমতা নস্যাৎ করতে সক্ষম হয়েছি।” তিনি যুদ্ধজাহাজটির খুঁটিনাটি এবং এর কার্যকারিতা বিষয়ে ধারণা দেন, যা সত্যিই ইরানের সামরিক বাহিনীর উন্নতির দিকে ইঙ্গিত করে।
এই যুদ্ধজাহাজটিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সৈয়দ-থ্রি এবং নবাব মডেলের উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি, যা শত্রুপক্ষের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র মুহূর্তেই ধ্বংস করতে সক্ষম। এর ফলে শত্রুদের উপর আক্রমণের সময় ইরানের নৌবাহিনী আরও কার্যকরভাবে আত্মরক্ষার সক্ষমতা অর্জন করেছে।
ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির উন্নতি: আগের তুলনায় অনেক শক্তিশালী
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদে জানান, নতুন ‘কাশেম বশীর’ নামের দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও উৎক্ষেপণ করা হয়েছে, যা ১২০০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এই নিজের সংরক্ষিত মিসাইলগুলো দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য এক শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। তিনি জানান, “২০২৪ সালের এপ্রিল ও অক্টোবর মাসে ইরান যে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছিল, কাশেম বশীর তার তুলনায় বহুগুণে শক্তিশালী।”
বরাবরের মতোই ইসরাইলের প্রতিশোধ
বিগত কয়েকদিন আগে ইসরাইলের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের হামলার পর এক নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে, যা ইরানের নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর একই সঙ্গে সতর্কতার ইঙ্গিত দেয়। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাদের প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের বিমান বাহিনী নিজেদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতির কথা জানায়।
কৌশলগত নিরাপত্তার নতুন দিগন্ত
মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক শক্তির এই উত্থান এবং প্রযুক্তির উন্নতি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। ইরানের বিমানবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদ ভায়েদী মন্তব্য করেন, “আমাদের বিমান বাহিনী কেবল যুদ্ধ ইউনিট নয়, বরং জাতীয় প্রতিরক্ষার প্রথম সারির শক্তি। আমরা যেকোনো দূরবর্তী হুমকি শনাক্ত ও প্রতিরোধে এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত।”
যতই উত্তেজনা বাড়ছে, ততই আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইরানের সামরিক সক্ষমতা নিয়ে আলোচনা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে, এই নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার যুদ্ধের পরিস্থিতিকে সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করতে পারে এবং ইরানের প্রতিরক্ষা কৌশলগুলোর ভিত্তি নষ্ট করতে সক্ষম।
বিশ্বজুড়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও প্রযুক্তিগত উন্নতির উপর আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য গভর্নমেন্ট অফ দি ইউনাইটেড স্টেটস ওয়েবসাইট ঘুরে দেখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
FAQs
1. ইরানের নতুন যুদ্ধজাহাজ ‘শাহান’ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
‘শাহান’ যুদ্ধজাহাজটি উন্নত প্রযুক্তি এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সজ্জিত, যা ইরানের সামরিক শক্তিকে শক্তিশালী করে।
2. ইরানে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির গুরুত্ব কী?
নতুন ‘কাশেম বশীর’ দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সাহায্যে ইরান তাদের আক্রমণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে, যা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা পরিস্থিতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
3. ইসরাইলের প্রতিশোধের হুমকি সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে?
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী হামলার পর প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছেন, যা উত্তর-পূর্ব মধ্যপ্রাচ্যে নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে।
4. ইরানের সামরিক বাহিনীর প্রস্তুতি কেমন?
ইরানের বিমান বাহিনী যেকোনো দূরবর্তী হুমকি শনাক্ত করতে সক্ষম ও পুরোপুরি প্রস্তুত আছে, যা তাদের সামরিক সক্ষমতা প্রদর্শন করে।
5. মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রযুক্তির উন্নতি যুদ্ধ পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে সক্ষম এবং এটি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।