বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রতিষ্ঠান এক্সএআই নতুন করে ৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় সংখ্যাটা ৭১ হাজার ৬০০ কোটি টাকারও বেশি। সাম্প্রতিক এই অর্থ উত্তোলনের রাউন্ডে বিশাল অংকের বিনিয়োগ প্রাপ্তি এটাই প্রমাণ করে যে, এআই খাতে লম্বা রেসের ঘোড়া হতে চলেছে মাস্কের এক্সএআই স্টার্টআপটি।
চলতি মাসেই (৯ ডিসেম্বর) এক্সএআই তাঁদের জেনারেটিভ এআই চ্যাটবট গ্রোকে যুক্ত করেছে নতুন একটি ইমেজ জেনারেশন মডেল ‘অরোরা’। এর কয়েক দিন পরই (১২ ডিসেম্বর) গ্রোকের সবচেয়ে উন্নত সংস্করণ ‘গ্রোক ২’ মাস্কের মালিকানাধীন প্ল্যাটফর্ম এক্সের সকল ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করে এক্সএআই। এর আগে শুধু এক্সের পেইড সাবসক্রাইবাররাই গ্রোক ২ অ্যাক্সেস করতে পারত।
সাম্প্রতিক সময়ে তাই এক্সএআই স্টার্টআপে বিনিয়োগে আগ্রহীদের তালিকাটা আরও লম্বা হয়েছে। অর্থ উত্তোলনের এবারের রাউন্ডে বিনিয়োগ করেছে শীর্ষ দুই চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এনভিডিয়া ও এএমডি। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব ও কাতার থেকে বড় অংকের বিনিয়োগ উত্তোলনে সক্ষম হয়েছে এক্সএআই।
বিভিন্ন সময় ইলন মাস্ক এআই প্রযুক্তির বিভিন্ন ঝুঁকি নিয়ে কথা বলেছেন। বিশেষ করে এআই’র কারণে মানব সভ্যতা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলেও অনেকবার সতর্ক করেছেন তিনি। অথচ নিজের এআই স্টার্টআপ এক্সএআই-তেই উন্নত সব এআই মডেল তৈরির যাবতীয় সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত মে’তেও ৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ উত্তোলন করেছে এক্সএআই। বর্তমানে এই স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানটির বাজারমূল্য ৫০ বিলিয়ন ডলার। প্রতিদ্বন্দ্বী এআই স্টার্টআপ ওপেনএআই’র ১৫৭ বিলিয়ন ডলার বাজারমূল্যের চেয়ে কম হলেও, এক্সএআই এই মুহুর্তে বিশ্বের সবচেয়ে দামি স্টার্টআপগুলোর একটি।
নতুন বিনিয়োগ প্রাপ্তির বিষয়টি গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে এক্সএআই। বিনিয়োগের অর্থ দিয়ে তাঁরা উদ্ভাবনী সব পণ্য তৈরি করবে বলে জানায় যেগুলো বিশ্বের কোটি মানুষ ব্যবহার করবে। এছাড়া ভবিষ্যৎ প্রযুক্তির গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কাজকে ত্বরান্বিত করতেও সহায়ক হবে নতুন এই বিনিয়োগ। এর মাধ্যমে বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সম্পর্কে জানার মিশনেও এক্সএআই আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলে বিশ্বাস প্রতিষ্ঠানটির।
উল্লেখ্য, এক্সএআই’র পাশাপাশি ইলন মাস্ক মহাকাশ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মান প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। জনপ্রিয় মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্ম এক্স-এরও স্বত্বাধিকারী তিনি।
নতুন ৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ সম্পর্কে মাস্ক নিজের এক্স অ্যাকাউন্টে লিখেছেন যে, এআই প্রোডাক্ট তৈরির জন্য আরও বিপুল পরিমাণ কম্পিউটিং সক্ষমতার প্রয়োজন। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জুলাইতে এক্সএআই প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। অথচ এর কিছুদিন আগেই তিনি শক্তিশালী সব এআই মডেল তৈরিতে বিরতি দেওয়ার খোলা আহ্বান জানান এআই খাতের সক্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি সম্পর্কে ইলন মাস্কের এই দ্বিচারিতা নিয়ে অনেকেই কথা বলেছেন, সমালোচনাও হয়েছে। কিন্তু তাতে মাস্কের এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানগুলোর জনপ্রিয়তা কমেনি এতোটুকুও। বরং এক্সএআই’তে ৬ বিলিয়ন ডলারের সাম্প্রতিক বিনিয়োগ এবং সেখানে এএমডি ও এনভিডিয়া’র মতো প্রতিষ্ঠানের সক্রিয় অংশগ্রহণ এটাই প্রমাণ করে, এআই খাতে ‘বিগ প্লেয়ার’ হতে যা যা করা প্রয়োজন তার সবটাই করছে ইলন মাস্ক ও তাঁর স্টার্টআপ এক্সএআই।
তথ্যসূত্র: ইনকোয়ারার বিজনেস, ব্যারনস
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।