বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : বিশ্বব্যাপী ইলেকট্রিক গাড়ির (ইভি) উত্থান শুরু হলেও হাইব্রিড গাড়িই বেশি কিনছেন ক্রেতারা। বলা যায় এখনো ইলেকট্রিক গাড়ি ওতটা জনপ্রিয়তা পায়নি। যতটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে হাইব্রিড গাড়ি।
বাজারে এখন মারুতি সুজ়ুকি গ্র্যান্ড ভিটারা, টয়োটা আর্বান ক্রুজ়ার হাইরাইডার, হোন্ডা সিটির কয়েকটি হাইব্রিড গাড়ি রয়েছে। নভেম্বর নিয়ে টানা তিন মাস ব্যাটারি-চালিত গাড়ির (ইভি) থেকে হাইব্রিড গাড়ির বিক্রি বেশি হয়েছে।
হাইব্রিড গাড়ি কেন এত জনপ্রিয়?
হাইব্রিড গাড়ির জনপ্রিয়তার বাড়ার কারণ পেট্রোল বা ডিজেলচালিত গাড়ির তুলনায় হাইব্রিড গাড়িতে জ্বালানি কম লাগে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইলেকট্রিক গাড়ির ক্ষেত্রে সীমিত দূরত্বের ব্যাটারি রেঞ্জ ও চার্জিং পরিকাঠামোর যে সমস্যা রয়েছে, তা হাইব্রিডে না থাকার জন্যই নতুন গাড়ির ক্রেতাদের কাছে তা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে ভারতে মোট ২৪ হাজার ৬২টি হাইব্রিড গাড়ি বিক্রি হয়েছে। এই একই সময়ে ইভি বিক্রি হয়েছে ২১ হাজার ৪৪৫টি। যদিও ভারতের বাজারে এখন ১৬টি মডেলের ইভি বিক্রি হয়। সেখানে জনপ্রিয় হাইব্রিড গাড়ির মাত্র ৪টি মডেল রয়েছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম থেকেই ভারতে হাইব্রিড গাড়ির বিক্রি বেড়েছে। তবে সেপ্টেম্বরে প্রথম বিক্রির দিক থেকে হাইব্রিড টপকে যায় ইভি-কে। এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে ভারতে মোট ২৫ হাজার ২০০ ইভি বিক্রি হয়েছিল। সেখানে হাইব্রিড গাড়ি বিক্রি হয়েছিল ১৪,৪০০টি। জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে ইভি ও হাইব্রিড গাড়ি বিক্রির সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ২৩ হাজার ৯০০ ও ২২ হাজার। তবে গাড়ি শিল্প সংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর থেকেই বিক্রির নিরিখে ইভিকে পিছনে ফেলতে শুরু করেছে হাইব্রিড।
কেন ইলেকট্রিক গাড়ি জনপ্রিয়তা পায়নি?
গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো শীর্ষ কর্মকর্তাদের মতে, ইভির মতো হাইব্রিড গাড়ির জন্য চার্জিং পরিকাঠামোর প্রয়োজন নেই, পেট্রল গাড়ির তুলনায় হাইব্রিডে মাইলেজ বেশি এবং ইভি-র তুলনায় জিএসটি হার ৩৮ শতাংশ বেশি হলেও দাম কম পড়ে।
মারুতি সুজুকির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার (মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস) শশাঙ্ক শ্রীবাস্তব জানান, গত তিন মাসে ইভি-র তুলনায় হাইব্রিড গাড়ির বিক্রি বেশি হয়েছে। তিনি বলেন, কনসেপ্ট হিসেবে ক্রেতাদের মধ্যে হাইব্রিড অনেক বেশি জনপ্রিয়। ক্রেতারা মনে করছেন এখন ইভির চার্জিং পরিকাঠামো যেহেতু সীমিত তাই হাইব্রিড কেনাটাই বেশি যুক্তিসঙ্গত। এছাড়া শহরের মধ্যে হাইব্রিডে পেট্রোল, ডিজেলচালিত গাড়ির তুলনায় বেশি মাইলেজ পাওয়া যায়। হাইব্রিড গাড়ি পরিবেশ-বান্ধব এবং ইভি-তে কর খাতে সুবিধা মিললেও হাইব্রিড গাড়ির দাম বিরাট কিছু নয়।
হাইব্রিড গাড়ি কী?
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের সমন্বয়ে চালিত গাড়ি হল হাইব্রিড। এধরনের গাড়িতে ইঞ্জিন এবং (ব্যাটারিচালিত) মোটর দুটাই থাকে। প্রাথমিকভাবে ইঞ্জিনের শক্তিতে গাড়ি চলে এবং সেই সঙ্গে ব্যাটারিও চার্জ হয়। একটি নির্দিষ্ট গতিতে পৌঁছে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় এবং মোটর চালু হয়ে যায়। আবার স্পিড কমে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোটর থেমে যায় আর ইঞ্জিন চলতে শুরু করে। হাইব্রিড গাড়ির ব্যাটারি ইভির মতো বাইরে থেকে চার্জ করতে হয় না।
ব্যাটারিচালিত গাড়ি (ইভি) কী?
ইভি শুধুমাত্র ব্যাটারিতে চলে। তাই বায়ু দূষণ হয় না। ইভিতে একটি ব্যাটারি প্যাক থাকে। ওই ব্যাটারি প্যাকের শক্তিতে গাড়ির মোটর চলে। নির্দিষ্ট দূরত্ব চলার পর ব্যাটারি প্যাককে বাইরে থেকে চার্জ করতে হয়। এজন্য পেট্রোল পাম্পের মতো ইভি চার্জিং স্টেশনের প্রয়োজন। ব্যাটারি চার্জ করার দুইরকম মোড আছে। ফাস্ট চার্জিং ও স্লো চার্জিং।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।