ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের ইতিহাস: এ সংকটের সমাধান কী?(পর্ব ০৬)

জুমবাংলা ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন, দীর্ঘমেয়াদি শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ইসরাইল ও আমেরিকার সাথে আরববিশ্বের বিরোধ ও দ্বন্দ্বের চিরস্থায়ী অবসানের ক্ষেত্রে ইসরাইল-ফিলিস্তিন সমস্যার চিরস্থায়ী একটা সমাধান হওয়া সে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তা বিশ্বের রাজনীতি সচেতন সব মানুষই বোধহয় কমবেশি জানেন। বিশেষ করে ‘ইসরাইল বনাম আরববিশ্ব’ মনোভাব বা দ্বন্দ্ব আরবি ভাষার ও আরব ভূখন্ডের গন্ডি পেরিয়ে সময়ের সাথে ক্রমে যেভাবে ‘ইসরাইল বনাম মুসলিম বিশ্ব’ মনোভাব বা দ্বন্দ্ব হিসেবে রূপ ধারণ করেছে, তা একজন বাংলাদেশি মুসলমান হিসেবে সেই রাজনৈতিক প্রাথমিক জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই সবার কাছে বেশ কৌতূহলপূর্ণ একটা বিষয়। আজ আপনাদের জন্য রয়েছে ষষ্ঠ পর্ব।

যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ক্ষমতার পট পরিবর্তন হলেও, ইসরায়েল নীতির তেমন কোন পরিবর্তন দেখা যায় না। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্য বজায় রাখতে ইসরায়েলকে বেছে নেয় দেশটি।

১৯৭৩ সালের দিক থেকে প্রকাশ্যে ইসরায়েলকে সহায়তা করতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। তখন থেকে এখন পর্যন্ত এই দুই দেশের সম্পর্ক উন্নতির দিকে এগিয়েছে। ইসরায়েলের সব ধরনের সিদ্ধান্ত ও নীতিকে সমর্থন দিয়ে সেসবের বাস্তবায়নে ইসরায়েলকে সহযোগিতা করে পাশে থেকেছে যুক্তরাষ্ট্র।

এসব সহায়তার মধ্যে আর্থিক ও কূটনৈতিক সহায়তাকে সব সব থেকে বড় করে দেখা হয়। কিন্তু ভাতৃত্বসুলভ এই সহায়তার পিছনে কারণগুলো কি কি?

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, স্নায়ুযুদ্ধ চলার সময় মধ্যপ্রাচ্যকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সোভিয়েত রাশিয়ার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ‘কী বাফার’ রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলকে সমর্থন দেয় যুক্তরাষ্ট্র। তখন থেকে অব্যাহতভাবে সেই সমর্থন চলছে।

মুখে গণতন্ত্র ও জিহাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বন্ধুত্বের কথা বললেও দেশ দুটির বন্ধুত্বের মূল ভিত্তি ‘সুপার পাওয়ারে টিকে থাকতে একে-অপরের প্রয়োজনীয়তা’। আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের যে বিকাশ, তা মূলত দেশটির অর্থনীতি ও প্রযুক্তির উপর ভর করে গড়ে ওঠেছে। নতুন তথ্য, জ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন জ্ঞান, বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তির উন্নতির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারের প্রক্রিয়ায় ইসরায়েল উল্লেখযোগ্য ভাবে এগিয়ে গেছে।

১৯৫৬ সালের সুয়েজ যুদ্ধেও ইসরায়েলের প্রতি তেমন বন্ধুত্বপূর্ণমনোভাব ছিলো না দেশটির। যদিও তখন দেশটির অন্য দুই মিত্র যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে মিশরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে।

প্রচারণা এবং অর্থনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিন থেকে ইসরাইলের নাগরিকদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সহানুভূতি বেড়েছে।

অধ্যাপক জন মেয়ারশেইমার এবং স্টিফেন ওয়াল্ট এই দুই দেশের সম্পর্কের ফ্যাক্টর হিসেবে আমেরিকান ইসরায়েল পাবলিক অ্যাফেয়ার্স কমিটির (এআইপিএসি) প্রতি ইঙ্গিত দেন। তবে ইরানের সঙ্গে ওবামা প্রশাসনের পারমাণবিক চুক্তি ব্যর্থ হবার পর এআইপিএসির কার্যকারিতা প্রশ্ন ওঠে।

 

Previous Article

ভারতের সুপারিশে শীর্ষ বীরের সম্মান পেয়েছিলেন যে পাকিস্তানি সৈনিক

Next Article

বনানীতে আবারও বহুতল ভবনে আগুন