জুমবাংলা ডেস্ক: বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকে শিক্ষার্থীদের ই-কমার্স নিয়ে ক্যারিয়ার গঠন এবং ই-কমার্স সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিতে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে ই-কমার্স ক্লাবের যাত্রা শুরু হয়েছে।
রবিবার (৯ জানুয়ারি) ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ‘ই-কমার্স ক্লাব’- এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য, অধ্যাপক ড. সহিদ আকতার হুসাইন, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সাবেক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাজিব আহমেদ, রেজিস্ট্রার ড. আবুল বাশার খান।
আরও উপস্থিত ছিলেন সাজেদ ফাতেমী (পরিচালক), আবু মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (সহকারী অধ্যাপক), মো. আতিকুজ্জামান লিমন (ডেপুটি ডিরেক্টর), দেশি পণ্যের ই-কমার্স উদ্যোক্তা কাকলী তালুকদার (কাকলী‘স এটিয়্যার), নিগার ফাতেমা (আরিয়া’স কালেকশন), উম্মে সাহেরা এনিকা (তেজস্বী), প্রতাপ পলাশ, সালমা নেহা (টেস্ট বিডি), রাকিমুন বিনতে মারুফ জয়া (পরিধানশৈলী), (খাদিবিডি), মো. দেলোয়ার হোসেন (আওয়ার শেরপুর) প্রমুখ।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় উপাচার্য বলেন, দেশে বর্তমানে অনলাইনের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত ব্যবসা হচ্ছে ই-কমার্স। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এটি ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। এখানে মার্কেটে বা মলে গিয়ে শপিংয়ের সুবিধা পাওয়া না গেলেও গ্রাহকেরা নিজেদের পছন্দমতো প্রয়োজনীয় পণ্যের অর্ডার করতে পারছেন ঘরে বসেই। পছন্দ না হলে তা বদলে নেয়া বা ফিরিয়ে দেয়ার সুযোগও থাকছে। আর সে কারণেই অনলাইন কেনাকাটা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ই-কমার্স খাতে দক্ষ করে তুলতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যার যে বিষয়ে আগ্রহ বা দক্ষতা আছে, তার সেই আগ্রহকে কাজে লাগানোর উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম এটি। এই খাতের খুঁটিনাটি জানাতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বেরিয়ে যাওয়ার আগেই তারা স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারবে। এই ক্লাব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একইসঙ্গে প্রযুক্তিগত জ্ঞান বাড়াবে, ব্যবসায় আগ্রহী করে তুলবে ও উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে সহায়তা করবে।
কাকলী’স এটিয়্যারের স্বত্বাধিকারী ও ইস্টর্ন ইউনিভার্সিটির এক্সটার্নাল এডভাইজর কাকলী তালুকদার বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম ই-কমার্স ক্লাব উদ্বোধন করেছে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি। এই ক্লাব প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং ই-কমার্স ইন্ড্রাস্ট্রির মাঝে সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করবে। শিক্ষার্থীরা ই-কমার্স ক্লাবের মাধ্যমে দেশের ই-কমার্স ইন্ড্রাস্ট্রির সুযোগ ও সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে পারবে। ক্লাবে থাকা অবস্থায় তারা ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে খণ্ডকালীন কাজ করে দক্ষতা অর্জন ও ভবিষ্যতে ক্যারিয়ার গড়তে পারবে। ই-কমার্স ক্লাবে দেশীয় পণ্যকে গুরুত্ব দেয়া হবে, এই আশাবাদ ব্যক্ত করি।
দেশি পণ্যের ই-কমার্স উদ্যোক্তা, তেজস্বীর স্বত্বাধিকারী উম্মে সাহেরা এনিকা বলেন, দেশের ই-কমার্স খাতে দিনে দিনে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা বাড়ছে। ই-কমার্স ক্লাবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতা ও ইন্ড্রাস্ট্রির চাহিদা বুঝতে পারবে। এতে করে তারা ই-কমার্সে ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্ন দেখবে। আমি বিশ্বাস করি ভবিষ্যতে আমাদের দক্ষ জনবলের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে ই-কমার্স ক্লাব। আর তারা যদি দেশি পণ্য নিয়ে কাজ করে তাহলে বাজার বৃদ্ধি পাবে। যার সুফল একজন দেশীয় বাটিকের ই-কমার্স উদ্যোক্তা হয়ে আমিও পাবো। ক্লাবগুলোর মাধ্যমে বাটিক নিয়ে জানার ও জানানোর আরও বেশি সুযোগ পাবো।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ই-কমার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মিফতাউল জান্নাতী সিনথিয়া বলেন, ‘ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ই-কমার্স ক্লাব’ একটি নতুন দিনের নতুন স্বপ্নের অগ্রযাত্রার নাম। বর্তমানে ই-কমার্স বহুল আলোচিত একটি শব্দ। প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ই-কমার্সের আওতায় নিজেদের প্রকাশ করছে৷ উদ্যোক্তারা শূন্য থেকে ক্যারিয়ার শুরু করতে পারছে। কিন্তু দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ই-কমার্স নিয়ে শেখার ব্যবস্থা নেই৷ অথচ কর্মসংস্থানে বড় একটি অংশ দখল করে নিচ্ছে ই-কমার্স।
ই-কমার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকে শিক্ষার্থীরা ই-কমার্স ক্লাবের মাধ্যমে ক্যারিয়ার গঠনের প্রস্তুতি নিতে পারবে। ক্লাবের বিভিন্ন সেমিনার বা ওয়ার্কশপ থেকে ই-কমার্স ও তথ্যপ্রযুক্তির খুটিনাটি জানতে পারবে৷ খুঁজে পাবে নিজের ভালো লাগার কাজ বা প্রতিভা বিকাশের সুযোগ। দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ই-কমার্স ক্লাবের প্রথম প্রেসিডেন্ট অতিব আনন্দের বিষয়! কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই ইক্যাবের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সভাপতি রাজিব আহমেদ স্যারের প্রতি, যার থেকে বিগত চার বছর যাবৎ ই-কমার্স নিয়ে প্রতিনিয়ত শিখেছি। স্যারের প্রচেষ্টায় ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিতে ই-কমার্স ক্লাবের শুভ সূচনা হয়েছে। সেই সাথে ধন্যবাদ জানাই উপাচার্য স্যারসহ আমার শিক্ষকদের যারা এই ক্লাব গঠনে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন। আমি আশা করি, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সকল বিভাগের শিক্ষার্থীরা ই-কমার্স ক্লাবে যোগ দিয়ে ই-কমার্স সম্পর্কে জানার সুযোগ কাজে লাগাবে।
প্রসঙ্গত, ই-কমার্স ক্লাব ছাড়াও এই ইউনিভার্সিটিতে আরও ১৮ ক্লাব হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যেন পাঠ্যপুস্তকের বাহিরে সামাজিক সাংস্কৃতিক ও বাস্তবধর্মী কার্যক্রমের নিজেকে এগিয়ে রাখতে পারে তাই এ ইউনিভার্সিটির ভর্তি ফরমে ‘কে কোন ক্লাব করতে চাও’ নাম বিশেষ ঘর পূরণ করতে হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।