জুমবাংলা ডেস্ক : ঈদযাত্রায় ৬০ লাখ মোটরসাইকেল চালকদের জন্য সুখবর। দুই চাকার এই যান চলাচলে কোনো বিধিনিষেধ থাকছে না। নিজস্ব বাইকে আন্তঃজেলা রুটে চলাচল করা যাবে। এমনকি পদ্মা সেতুও পারি দেওয়া যাবে। তবে কোনো রাইড শেয়ারিং গাড়িতে চলাচল করা যাবে না। করলেই ব্যবস্থা।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এদিকে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে যাত্রী অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনের নেতারা বলছেন, এ সিদ্ধান্তের কারণে সড়কপথে দুর্ঘটনা বাড়তে পারে। দুর্ঘটনা এড়াতে আইন মেনে মোটরসাইকেল চলাচল নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশে মোট রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত যানবাহনের সংখ্যা ৫৯ লাখ ৮২ হাজার ৭৬৫টি। এরমধ্যে মোটরসাইকেলের সংখ্যা ৪৩ লাখ ৪৩ হাজার ৮৮৩টি। রাজধানীতে রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত ২০ লাখ ৯৩ হাজার যানবাহনের মধ্যে বাইকের সংখ্যা ১১ লাখ ১৪ হাজার ৮০১টি। মোটরসাইকেলে একটি অংশ অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং অর্থাৎ ভাড়ায় চলে। আরেকটি অংশ অনুমোদনহীনভাবে সরাসরি চুক্তিতে চলে।
সড়ক সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে বিআরটিএকে নির্দেশ দিয়েছি ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল যেন চলাচল করতে পারে। এ ব্যাপারে বিআরটিএ পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেলে দুজনের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। উভয়ের হেলমেট থাকা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি গাড়ির প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। কেউ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটালে পথে থাকা মোবাইল টিম মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ঈদযাত্রায় সড়কপথে মোটরসাইকেল চলাচলে কোনো বাধা নেই। তবে ভাড়া করা মোটরসাইকেলে চলাচল করা যাবে না। ব্যক্তিগত বাইকে যাতায়াত করা যাবে। তিনি বলেন, এবারের ঈদে পদ্মা সেতু দিয়েও মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে। এজন্য সেতুতে আলাদা লেন তৈরি করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেলের টোল আদায়ে থাকবে পৃথক ব্যবস্থা।
২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালুর পর লঞ্চে মোটরসাইকেল পারাপার নিষিদ্ধ করে সরকার। গত বছরের ঈদুল ফিতরের সময়ও তা নিষিদ্ধ ছিল। তবে গত ঈদুল আজহার সময় অনানুষ্ঠানিকভাবে মোটরসাইকেল পরিবহন চালু করা হয়। ২০২২ সালে ঈদের আগে-পরে মিলিয়ে সাত দিন মহাসড়ক ও এক জেলা থেকে অন্য জেলায় মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করে সড়ক বিভাগ। মূলত সড়ক দুর্ঘটনা কমানোর চিন্তা থেকেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে।
গত বছর সরকার ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েও শেষ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন হিসেবে বলা হচ্ছে, সড়ক দুর্ঘটনার জন্য অন্যতম দায়ী দুই চাকার যান বাইক। মোট দুর্ঘটনার প্রায় ৪০ ভাগই মোটরসাইকেলের কারণে হচ্ছে।
তবে এবার আর আন্তঃজেলা মোটরসাইকেল চলাচলেও কোনো বিধিনিষেধ থাকছে না। ঈদে মোটরসাইকেলে যারা বাড়ি যাওয়ার চিন্তা করছেন তাদের জন্য এটি অনেক বড় সুখবর। তবে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান বলেছেন, দেশে রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত যানবাহনের ৭০ ভাগের বেশি এখন মোটরসাইকেল। সড়কপথে দুর্ঘটনা এড়াতে এই যানটি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দেন তিনি।
আর নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে বলেন, সড়কপথে মৃত্যুদূত হিসেবে পরিচিত মোটরসাইকেল। এবারের ঈদযাত্রায় এই বাহনে যাতায়াতের সুযোগ দেওয়ায় হয়ত গণপরিবহনে চাপ কিছুটা কমবে। তবে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়বে। এজন্য ঈদের আগে ও পরে অন্তত ১০ দিন সড়ক মহাসড়কে কঠোর নজরদারির পরামর্শ দেন তিনি।
অধিকাংশ লোক দুর্নীতিকে দুর্নীতি মনে করে না : দুদক চেয়ারম্যান
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।