ঈদুল আজহা মুসলমানদের জন্য একটি ত্যাগের উৎসব, যেখানে ইমান, আত্মত্যাগ এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হয়। এই সময়ে পশু কোরবানি করা হয় শুধু ধর্মীয় অনুশীলনের অংশ হিসেবে নয়, বরং এটি আমাদের আর্থিক সাধ্য, হালাল উপার্জন ও ন্যায়সঙ্গত জীবিকা অর্জনেরও প্রমাণ। ইসলাম ধর্মে হালাল উপার্জনের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ থেকে কোরবানি দেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত।
ঈদুল আজহার হালাল কোরবানির গুরুত্ব
কোরবানির পশু কেনার অর্থ যদি হারাম উৎস থেকে আসে, তবে সেই কোরবানি আল্লাহর দরবারে গ্রহণযোগ্য হবে না। হাদিসে এসেছে: “নিশ্চয়ই আল্লাহ পবিত্র, এবং তিনি পবিত্র জিনিসই গ্রহণ করেন।” (মুসলিম)
এখানে বোঝানো হয়েছে, কোরবানির ইবাদতের প্রাথমিক শর্তই হলো হালাল উপার্জন থেকে তা করা। এক ব্যক্তি যদি হারাম পথে আয় করে কোরবানি দেয়, তবে তা বাহ্যিকভাবে সঠিক মনে হলেও আত্মিকভাবে তা বাতিল হতে পারে।
বিশেষ করে ঈদুল আজহার মতো পবিত্র সময়ে ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয় যেন আমরা শুধুমাত্র শরিয়ত মোতাবেক উপার্জিত অর্থ থেকেই ইবাদত করি।
হালাল উপার্জনের সংজ্ঞা ও এর প্রভাব
হালাল উপার্জন বলতে বোঝায়—সৎ ও ন্যায়সঙ্গত পন্থায় উপার্জিত অর্থ, যেখানে প্রতারণা, সুদ, ঘুষ বা জুয়া নেই। কোরআনে আল্লাহ বলেন: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের উত্তম সম্পদ থেকে ব্যয় কর।” (সূরা বাকারা: ২৬৭)
হালাল উপার্জনের প্রভাব:
- ইবাদতে বরকত আসে: হালাল অর্থে কোরবানি দিলে তা আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য হয়।
- পরিবারে শান্তি: হালাল উপার্জন থেকে খরচ করলে পরিবারে সুখ ও শান্তি বজায় থাকে।
- সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা: সৎ উপার্জন সমাজে বিশ্বাস ও সুবিচারের ভিত্তি তৈরি করে।
Zakat Foundation -এর মতো ইসলামিক সংস্থাগুলো হালাল উপার্জনের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা করে থাকে।
সুদমুক্ত অর্থনীতি গড়ে তুলতে হালাল উপার্জন অপরিহার্য ভূমিকা রাখে।
হালাল উপার্জনের মাধ্যমে ঈদুল আজহার কোরবানি প্রদান আমাদের ইবাদতকে শুধু শারীরিক বা বাহ্যিক নয়, বরং আত্মিক ও নৈতিকভাবে পূর্ণ করে তোলে।
FAQs: হালাল উপার্জন ও কোরবানি
- হালাল উপার্জন না হলে কি কোরবানি গ্রহণযোগ্য হবে?
না, হারাম উপার্জন থেকে কোরবানি দিলে তা গ্রহণযোগ্য নয়। - হালাল উপার্জনের সংজ্ঞা কী?
সৎ, বৈধ ও শরিয়ত সম্মতভাবে আয় করা অর্থ। - সুদ বা ঘুষের অর্থ দিয়ে কোরবানি দিলে কি হবে?
এটি হারাম এবং ইবাদত বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। - হালাল উপার্জন থেকে কোরবানি দিলে কী সওয়াব বেশি হয়?
হ্যাঁ, কারণ এতে ইখলাস ও ত্যাগের গভীরতা থাকে। - হারাম উপার্জনের ক্ষেত্রে করণীয় কী?
তা থেকে দূরে থাকা, তওবা করা এবং হালাল পথে উপার্জনের চেষ্টা করা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।