জুমবাংলা ডেস্ক : আগামী সোমবার সারাদেশে পালিত হবে ঈদুল আযহা। ওইদিন ঈদ জামাত কিংবা পশু কোরবানির সময় বাংলাদেশের আবহাওয়া কেমন থাকবে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের দুঃশ্চিন্তাও রয়েছে।
শনিবার আষাঢ়ের প্রথম দিন রাজধানী ঢাকায় মেঘলা আবহাওয়া থাকলেও বৃষ্টির দেখা মেলেনি সন্ধ্যা পর্যন্ত। তাই ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটগুলোতেও বেচা-কেনা জমে উঠেছে।
শনিবার বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস আগামী তিন দিনের আবহাওয়ার একটি পূর্বাভাস দিয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, ঈদের আগে ররিবার দেশের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টিপাত হবে। এছাড়া ঈদের দিন অর্থাৎ সোমবার দেশের কয়েকটি বিভাগে ভারি কিংবা অতি ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথাও বলা হচ্ছে এই পূর্বাভাসে।
আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম বলেন, ঈদের দিন রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, এবং চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, ঈদের দিন খুবই কম বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে।
আগামী সোমবার অর্থাৎ ঈদের দিন সকালে রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোতে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কেমন থাকবে তারও পূর্বাভাস দিয়েছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস।
শুরু হয়েছে বর্ষা মৌসুম। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেড়েছে। দু’য়েকদিন ধরে সারাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও বইছে মৃদু তাপপ্রবাহও।
আবহাওয়া অফিস বলছে, রবি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় দমকা বাতাসসহ প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হলে তাকে মাঝারি ধরনের এবং ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার রেকর্ড হলে তাকে বলা হয়ে থাকে ভারি বৃষ্টিপাত।
আর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৮৮ মিলিমিটারের বেশি হলে সেটিকে বলা হয় অতি ভারি বর্ষণ।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস যে পূর্বাভাস জানাচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে ঈদের দিন অর্থাৎ সোমবার রংপুর, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে এই বৃষ্টিপাতের কারণে দিন ও রাতের তাপামাত্রায় খুব একটা পরির্বতন আসবে না। তবে কোরবানির দিন সারাদেশে দিনের চেয়ে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, বাতাসে জলীয় বাষ্পের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজ করতে পারে।
প্রতি বছর বাংলাদেশে যে পরিমাণ পশু কোরবানি হয় তার মধ্যে বড় একটা অংশই হয় ঢাকা বিভাগে। গত বছর ঢাকা বিভাগে পশু কোরবানি হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৫ লাখ।
গত কয়েক বছর ধরে ভরা বর্ষা মৌসুমে কোরবানি হওয়ায় ঈদের পশুর হাটে প্রভাব পড়ছে। অন্যদিকে কোরবানির দিন সকালে ঈদ জামাত ও পশু কোরবানি ঘিরেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় রাজধানীবাসীকে।
সাধারণত বৃষ্টিপাত বেশি হলে রাজধানীর পশুর হাটগুলোতে কাঁদাপানি জমে, সেই সাথে কমে ক্রেতাও।
শনিবার রাজধানী ঢাকার আকাশ মেঘলা ছিল সকাল থেকে। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হতে পারে রবিবার।
গত দুই বছর কোরবানির ঈদের দিন সকালে রাজধানীতে মাঝারি বৃষ্টিপাত হলেও এবার বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস যে পূর্বাভাস দিচ্ছে তাতে সোমবার ঈদের দিন সকালে ঢাকায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কম।
ময়মনসিংহ বিভাগে ভারি বৃষ্টিপাতের প্রভাবে ঈদের দিন সকালে কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল কিংবা গাজীপুরের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টিপাত হবে। তবে ঢাকায় যদি বৃষ্টি হয় সেটি দু’য়েক জায়গায় খুবই সামান্য পরিমাণ হতে পারে, আবার নাও হতে পারে।
রাজধানীবাসীর জন্য ঈদের দিন কিছুটা স্বস্তির সম্ভাবনা থাকলেও দুশ্চিন্তা রয়েছে চট্টগ্রামবাসীর জন্য।
কেননা, আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে, রবিবার ও ঈদের দিন সোমবার চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এখন পর্যন্ত যে পূর্বাভাস, তাতে মনে হচ্ছে ঈদের দিন চট্টগ্রাম বিভাগের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ জায়গায় বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে সেটি সর্বোচ্চ মাঝারি আকারের বৃষ্টিপাত হতে পারে।
শনিবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অফিস যে বুলেটিন প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে খুলনা ও গোপালগঞ্জ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
শনিবার সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ জেলার বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টিপাত হলেও খুলনায় অব্যাহত রয়েছে তাপপ্রবাহ। শনিবার সারাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে খুলনায় ৩৮ দশমিক ২ শতাংশ।
আবহাওয়া অফিস বলছে, সারাদেশে শনিবার যে আবহাওয়া বিরাজ করছিল আগামী তিনদিনও প্রায় একই আবহাওয়া বিরাজ করবে।
সেক্ষেত্রে রবিবার ও সোমবার ঈদের দিন রাজধানী খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগের বেশির ভাগ জায়গায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কম।
আবহাওয়াবিদ মি. ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ঈদের দিন তুলনামূলক ভাল আবহাওয়া থাকবে বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহীতে। কেননা আমরা মনে করছি ঈদের দিন কিংবা তার আগের দিন এই তিন তেমন কোন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। যদিও হয় সেটি সামান্য দু’য়েক জায়গায়”।
আবহাওয়া অফিস বলছে, ঈদের দিন পর্যন্ত ওই তিন বিভাগে বৃষ্টিপাত না থাকা কিংবা কম হওয়ার কারণে মৃদু তাপপ্রবাহ থাকলেও ঈদের পর ওই বিভাগগুলো ছাড়াও সারাদেশে বাড়বে বৃষ্টির প্রবণতা।
শনিবার ৭২ ঘণ্টার পূর্বাভাস দেয়ার পাশাপাশি আরও ৫ দিনের অর্থাৎ আগামী শনিবার পর্যন্ত যে পূর্বাভাস দিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ঈদের পরপরই সারাদেশে বৃষ্টি হবে।
ভারি বৃষ্টিপাতের এই প্রবণতা অন্তত আগামী শনিবার অর্থাৎ ২২ জুন পর্যন্ত থাকবে বলেও জানাচ্ছে বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস।-বিবিসি বাংলা
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।