উইন্ডোজ ১১ ডাউনলোড
মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ১১ অপারেটিং সিস্টেম চালু করা হয়েছে মঙ্গলবার। যারা উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করছেন তারা বিনামূল্যে নতুন উইন্ডোজ ১১ অপারেটিং সিস্টেমটিতে আপগ্রেড করতে পারবেন। যদি উইন্ডোজ ১১ ডাউনলোড করতে চান বা উইন্ডোজ ১১ আপডেট নিয়ে সম্পূর্ণটা জানতে চান, তাহলে নিউজটি পড়ুন।
মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ ১১ অপারেটিং সিস্টেম চালু করা হয়েছে মঙ্গলবার। যারা উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করছেন তারা বিনামূল্যে নতুন উইন্ডোজ ১১ অপারেটিং সিস্টেমটিতে আপগ্রেড করতে পারবেন।
উইন্ডোজের প্রধান পণ্য কর্মকর্তা প্যানোস পানে বিবিসিকে বলেন, নতুন ভার্সনটি ব্যবহারকারীদের জন্য ‘পরিচ্ছন্ন এবং সহজতর’ করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রযুক্তি সম্পর্কে সবচেয়ে কম জানা মানুষেরাও সহজে নতুন এই সিস্টেমে আপগ্রেড করতে পারবেন।
তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞ ব্যবহারকারীরা এরই মধ্যে উইন্ডোজ ইনসাইডার ট্রায়াল প্রোগ্রাম ব্যবহার করে নতুন অপারেটিং সিস্টেমটি পরীক্ষা করেছেন এবং এতে কোন সমস্যা তারা পাননি। সিস্টেমটি এখন আপগ্রেডের জন্য সম্পূর্ণ তৈরি বলে জানান তিনি।
নতুন যেসব ফিচার ও যে পরিবর্তন: উইন্ডোজ ১১-এর নকশায় সুনির্দিষ্ট পরিবর্তন আনা হয়েছে। টাস্কবারের একেবারে কেন্দ্রে ডিফল্ট আকারে থাকবে স্টার্ট মেন্যু। পাশাপাশি থাকবে অন্যান্য আইকন।
স্টার্ট বাটনে ক্লিক করলে, এটি বারবার ব্যবহৃত অ্যাপসগুলো সম্বলিত একটি মেন্যু সামনে নিয়ে আসবে। কিছু ক্ষেত্রে এটা স্মার্টফোনের অ্যাপ মেন্যু কিংবা লঞ্চারের মত মনে হতে পারে। উইন্ডোজ ১০-এর স্টার্ট মেন্যুতে যে ‘টাইলস’ রয়েছে, নতুন অপারেটিং সিস্টেম থেকে সেটি বাদ দিয়েছে মাইক্রোসফট।
উইন্ডোজের প্রধান পণ্য কর্মকর্তা প্যানোস পানে বলেন, তারা উইন্ডোজ ৮ থেকে শিক্ষা নিয়েছেন, যেটি থেকে স্টার্ট মেন্যু পুরোপুরি বাদ দেয়া হয়েছিল। এর কারণে বহু ব্যবহারকারী অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। উইন্ডোজ ১১ তৈরির ক্ষেত্রে মানুষ কীভাবে কম্পিউটার ব্যবহার করে সেই বিষয়টা বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
পানে ব্যাখ্যা দেন, ‘ব্যবহারকারীরা কোথায় ক্লিক করতে চান, কম্পিউটারের কোন অংশে তাদের নজর থাকে আমাদের গবেষণাগারে সেটা আমরা দেখেছি।’ তিনি বলেন, ‘উইন্ডোজ ১১-এর ক্ষেত্রে স্টার্ট বাটন রয়েছে। এটা স্ক্রিনের একেবারে মাঝখানে রয়েছে। এটাকে বাদ দেয়া হয়নি।’
পুরো সিস্টেমজুড়ে গোলাকার কোনসমৃদ্ধ নকশা করা হয়েছে। এটির মেন্যু এবং ফোল্ডার দেখার ব্যবস্থা সহজ করা হয়েছে। উইন্ডোগুলোকে সাজানো এবং গ্রিডে ভাগ করার অপশনটি নতুন ও আরও উন্নত।
২০০৭ সালের উইন্ডোজ ভিস্তার গুরুত্বপূর্ণ একটি ফিচার উইজেট ফিরিয়ে আনা হয়েছে আবার। তবে তখন উইজেটকে স্ক্রিনে যে কোনো জায়গায় ইচ্ছেমত রাখা যেত, কিন্তু এখন উইজেটগুলো বামপাশের একটি সাইডবারে থাকবে। এগুলো যুক্ত থাকবে মাইক্রোসফট সার্ভিসের সাথে। ইন্টারফেস ও নকশায় পরিবর্তন ছাড়া আরো কিছু পরিবর্তনও আনা হয়েছে উইন্ডোজ ১১-তে।
স্কাইপের স্থান নেয়া মাইক্রোসফট টিমস এবং এক্সবক্স অ্যাপে যে সিস্টেম ইন্টেগ্রেশন করা হয়েছে সেগুলোর ব্যাপক প্রচারণা রয়েছে মাইক্রোসফটের বিজ্ঞাপনে।
অ্যাপ স্টোরের উইন্ডোজ ভার্সন, মাইক্রোসফট স্টোরকে সম্পূর্ণ নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। এখানে এখন থেকে তৃতীয় পক্ষকে তাদের অ্যাপ্লিকেশন বিক্রির সুযোগ দেয়া হবে।
তবে নতুন যে ফিচারটি প্রযুক্তিবিশ্বে ভ্রুকুঞ্চনের কারণ হয়েছে, সেটি হচ্ছে উইন্ডোজ ১১-তে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের জন্য তৈরি অ্যাপসগুলো চলবে। এটা হবে অ্যামাজন অ্যাপ স্টোরের মাধ্যমে।
প্রথম ব্যবহারকারী যারা তারা বলছেন, নতুন ভার্সনের অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান ব্যবস্থাটি আগের চাইতে দ্রুততর। তবে এটি ওয়েব অনুসন্ধানের ফলাফল প্রদর্শনের ক্ষেত্রে মাইক্রোসফটের নিজস্ব সেবা বিং এবং এজ ব্রাউজারকে অগ্রাধিকার দেয়।
গেমারদের জন্য মাইক্রোসফট প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, এটির নতুন ড্রাইভ প্রযুক্তি ডিরেক্ট স্টোরেজ গেম লোডের সময়ের ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা দেবে। তবে এ ফিচারের সুবিধা নিতে নতুন হার্ডওয়্যারের প্রয়োজন হবে। ফলে সব কম্পিউটার নতুন এই সুবিধার সুযোগ নিতে পারবে না।
এ সুবিধা নিতে কম্পিউটারে এক ধরণের সিকিউরিটি চিপ থাকতে হবে, যেটাকে বলা হয় টিপিএম। শুধুমাত্র আধুনিক কম্পিউটারগুলোতে এ চিপ যুক্ত করা হয়। মাইক্রোসফট নতুন কিছু হার্ডওয়্যারও উন্মুক্ত করেছে সম্প্রতি, যেগুলো উইন্ডোজের নতুন এ ভার্সনের সাথে সম্পর্কিত।
কিন্তু যেসব ব্যবহারকারী উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করছেন তাদের কম্পিউটার সচল থাকলে নতুন এ হার্ডওয়্যারগুলোর জন্য খরচ করতে হবে না। উইন্ডোজ ১০ই অক্টোবর ২০২৫ সাল পর্যন্ত নিরাপত্তা আপডেট ও সাপোর্ট পেতে থাকবে।
উইন্ডোজ ১১ ইনস্টলের জন্য কম্পিউটারে ন্যূনতম যা যা দরকার
* ১ গিগাহার্টজ বা তার বেশি গতির প্রসেসর
* কমপক্ষে ৪ গিগাবাইট র্যাম
* ৬৪ গিগাবাইট ফাঁকা স্টোরেজ
* সিস্টেম ফার্মওয়্যার UEFI মোডে থাকতে হবে এবং
* টিপিএম ২.০ চিপ থাকতে হবে
অনেক ক্ষেত্রে উচ্চ কনফিগারেশনের কম্পিউটারেও উইন্ডোজ ১১ ইনস্টল করা যাচ্ছে না। ঠিক যে কারণে সমস্যাটি হচ্ছে, এই লেখায় আমরা সেটারই সমাধান দেখব এবং সঙ্গে কী কী নতুন সুবিধা এসেছে, সেটাও জানব।
বেশির ভাগ ব্যবহারকারী প্রথম ও প্রধান সমস্যার মুখে পড়ছেন টিপিএম ২.০ নিয়ে। এই টিপিএম চিপ আপনার পিসিতে আছে কি না জানতে আপনার বর্তমান উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের পিসিতে Win + R বোতাম দুটি চাপুন।
রান ইন্টারফেস এলে সেখানে ‘tpm.msc’ লিখে এন্টার চাপুন বা ওকে বোতামে ক্লিক করুন। আপনার পিসিতে টিপিএম চিপ থাকলে নিচের ছবির মতো ইন্টারফেস দেখাবে।
আর যদি টিপিএম চিপ না থাকে, তাহলে দেখাবে এমন ইন্টারফেস।
সিংহভাগ ব্যবহারকারীর পিসিতে টিপিএম চিপ থাকা সত্ত্বেও দেখাচ্ছে তাদের পিসিতে উইন্ডোজ ১১ চলবে না। এ ক্ষেত্রে টিপিএম চিপের সংস্করণ হালনাগাদ করে নিতে হবে।
শুরুতে আপনার পিসির ডিভাইস ম্যানেজার থেকে দেখে নিশ্চিত হয়ে নিন টিপিএম চিপ আছে কি না। এ জন্য আবারও Win + R বোতাম দুটি চাপুন। রান ইন্টারফেস এলে তাতে ‘devmgmt.msc’ কমান্ড লিখে এন্টার করুন।
এরপর সিকিউরিটি ডিভাইস ট্যাবে টিপিএম চিপ দেখতে পাবেন। যদি tpm.msc কমান্ডে আপনার টিপিএম চিপ না দেখায় কিন্তু ডিভাইস ম্যানেজারে টিপিএম চিপ দেখায়, সে ক্ষেত্রে আপনাকে বায়োস থেকে টিপিএম চিপ সচল করে নিতে হবে।
বায়োস থেকে টিপিএম চিপ সক্রিয় করতে আপনার পিসি রিস্টার্ট দিন। আর বন্ধ থাকলে চালুর সময় F2 বোতাম (নির্মাতা প্রতিষ্ঠানভেদে F10, F2, F12, F1, অথবা DEL বোতাম হতে পারে) চেপে বায়োসে প্রবেশ করুন। এরপর সিকিউরিটি, অ্যাডভান্সড অথবা সেটিংস অপশনে গিয়ে মিসেলেনিয়াস অংশে ঢুকে ইনটেল প্ল্যাটফর্ম ট্রাস্ট টেকনোলজি (পিটিটি) চালু করে সংরক্ষণ করুন।
এরপর বুট মেনুতে গিয়ে সিকিউর বুট অপশন সচল করে ‘সেভ অ্যান্ড এক্সিট’ দিয়ে পিসি রিস্টার্ট করুন।
এরপরও যদি টিপিএম নিয়ে ত্রুটিমূলক বার্তা দেখায়, তবে সে ক্ষেত্রে আপনার মাদারবোর্ড ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইট থেকে আপনার মডেল অনুযায়ী টিপিএম চিপের ড্রাইভার নামিয়ে ইনস্টল করে দেখতে পারেন। ইনস্টল করতে গিয়ে যদি দেখায় একই মডেল ইতিমধ্যে ইনস্টল করা আছে, তখন রান ইন্টারফেস থেকে tpm.msc–তে গিয়ে ক্লিয়ার টিপিএম করুন।
এরপর আপনার পিসি রিস্টার্ট হবে এবং রিস্টার্ট হওয়ার পর আবার tpm.msc–তে গিয়ে প্রিপেয়ার দ্য টিপিএম অথবা সেটআপ টিপিএমে ক্লিক করুন।
টিপিএম চিপ না পেলে যেভাবে উইন্ডোজ ১১ ইনস্টল করবেন
প্রথমে Win + R বোতাম দুটি চেপে রান চালু করে ‘regedit’ কমান্ড দিন। এরপর HKEY_LOCAL_MACHINEYSTEMetup-এ গিয়ে Setup-এ মাউসের রাইট ক্লিক করে New > Key নির্বাচন করুন।
এরপর ফাইলের নাম ‘LabConfig’ দিয়ে এন্টার চাপুন।
এখন LabConfig-এর ওপর মাউসের রাইট ক্লিক করুন এবং New > DWORD (32-bit) value নির্বাচন করে তৈরি করুন এবং আরেকটি ভ্যালু তৈরি করুন ‘BypassTPMCheck’, এবং এটার ডেটা সেট করুন ‘1’। এখন BypassRAMCheck and BypassSecureBootCheck value তৈরি করে ডেটা ‘1’ সেট করুন, যেন এটা নিচের ছবির মতো দেখায়।
এবার রেজিস্ট্রি এডিটর বন্ধ করুন। আপনার পিসি উইন্ডোজ ১১–তে বুট করার জন্য তৈরি।
যাঁদের টিপিএম চিপ আছে, তাঁরা এবার ডিভাইস ম্যানেজারের ডিস্ক ম্যানেজমেন্টে যান। কাজটি করার জন্য যথারীতি Win + R বোতাম দুটি চেপে রান ইন্টারফেসে ‘diskmgmt.msc’ কমান্ড দিয়ে এন্টার করুন। এরপর আপনার হার্ডডিস্কের ওপর মাউসের রাইট ক্লিক করে প্রোপার্টিজে যান।
এরপর ভলিউমসে গিয়ে আপনার পার্টিশন স্টাইল দেখে নিন সেটি জিপিটি কি না। এমবিআর হলে জিপিটি মোডে হার্ডড্রাইভ কনভার্ট করুন। ভালো হয় যদি নতুন করে উইন্ডোজ ইনস্টল করা হয় জিপিটি মোডে, কারণ কনভার্ট করতে গেলে ডেটা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সবশেষে আপনার হার্ডড্রাইভের বুট স্টাইল যদি জিপিটি মোডে থাকে এবং টিপিএম চিপ সক্রিয় করা থাকে, তাহলে ধরে নেওয়া যায় আপনার পিসি উইন্ডোজ ১১–তে হালনাগাদের জন্য প্রস্তুত।
প্রথমে উইন্ডোজের সেটিংয়ে যান। সেখান থেকে আপডেট অ্যান্ড সিকিউরিটিতে গিয়ে উইন্ডোজ ইনসাইডার প্রোগ্রামে ক্লিক করুন। যদি আপনি ইতিমধ্যে ইনসাইডার প্রোগ্রামে যুক্ত না হয়ে থাকেন, তবে গেট স্টার্টেডে ক্লিক করুন।
এরপর লিংক অ্যান অ্যাকাউন্টে ক্লিক করুন এবং আপনার মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্ট দিয়ে সাইন-ইন করুন। সাইন-ইন হয়ে গেলে পরবর্তী উইন্ডোতে Dev Channel নির্বাচন করে কনফার্ম করুন।
পরবর্তী উইন্ডোতেও কনফার্মে ক্লিক করুন।
এরপর আপনার পিসি রিস্টার্ট করুন।
রিস্টার্ট দেওয়ায় পর আবার সেটিংসে গিয়ে আপডেট অ্যান্ড সিকিউরিটিতে গিয়ে উইন্ডোজ আপডেটে প্রবেশ করুন। এরপর চেক ফর আপডেটসে ক্লিক করুন।
কিছুক্ষণ লোড নেওয়ার পর কাঙ্ক্ষিত উইন্ডোজ ১১ ডাউনলোড হওয়া শুরু হবে।
এরপর যদি আর প্রিভিউ বিল্ড না পেতে চান, তাহলে সেটিংয়ে গিয়ে বাঁ দিক থেকে উইন্ডোজ আপডেট নির্বাচন করুন।
এরপর ইনসাইডার প্রোগ্রামে গিয়ে ‘স্টপ গেটিং প্রিভিউ বিল্ডস’-এ ক্লিক করে ‘আনএনরোল দিজ ডিভাইস ইমিডিয়েটলি’–তে ক্লিক করুন।
বর্তমানে সেটিংস থেকে আপডেট দেওয়ার আগে নতুন করে উইন্ডোজ ১০ ইনস্টল করে নিতে হবে। তবে বেটা সংস্করণে সচরাচর কিছু ত্রুটি থাকে। এই সমস্যাগুলো এড়াতে চাইলে উইন্ডোজ ১১-এর পূর্ণ সংস্করণের জন্য অপেক্ষা করুন। উইন্ডোজ ১১ ডাউনলোড।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।