ঢাকা, বাংলাদেশ: ঐতিহাসিক জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে আজ একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে জুলাই রেভ্যুলুশনারি অ্যালায়েন্স (জেআরএ) একটি বিস্তৃত তালিকা প্রকাশ করেছে। এই আন্দোলন অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত, যেখানে অসংখ্য মানুষ ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতার জন্য তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
আন্দোলনের ইতিহাস সংরক্ষণের আহ্বান
জেআরএ জানায়, “এই গণঅভ্যুত্থান নির্যাতিত মানুষের জন্য একটি আলোকবর্তিকা। আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যে এই আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অক্ষুণ্নভাবে পৌঁছে দিতে হবে।”
তারা শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ভূষিত করার এবং শহীদ পরিবারগুলোর পুনর্বাসন ও আর্থিক সহায়তার দাবিও জানায়।
আন্দোলনের প্রেক্ষাপট
জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল একটি ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার আন্দোলন, যা বৈষম্যের বিরুদ্ধে সরব হয়ে সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। আন্দোলনটি ১ জুলাই শুরু হয় এবং ৭ জুলাই থেকে বাংলা ব্লকেড আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন গতি পায়। সারা দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা এতে অংশগ্রহণ করেন।
১৫ জুলাইয়ের পর সশস্ত্র হামলা, বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণ, দেশজুড়ে মানুষকে স্তব্ধ করে দেয়। এরই প্রতিক্রিয়ায় আন্দোলন তীব্রতর হয় এবং ৫ আগস্ট পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে।
শহীদদের তালিকা ও পরিসংখ্যান
জেআরএ জানিয়েছে, এই আন্দোলনে প্রায় ২,০০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৩০,০০০ এরও বেশি আহত হয়েছেন। শুধু উত্তরা এলাকায় ৯২ জন শহীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এই তালিকায় ছাত্র, চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী এবং অন্যান্য পেশার মানুষ অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন।
বয়সভিত্তিক শহীদদের সংখ্যা:
১০ বছরের নিচে: ১ জন
১০-২০ বছর: ১৭ জন
২১-৩০ বছর: ২৬ জন
৩১-৪০ বছর: ১৮ জন
৪১-৫০ বছর: ১১ জন
৬০ বছরের বেশি: ১ জন
পেশাভিত্তিক শহীদদের সংখ্যা:
ছাত্র: ২৫ জন
চাকুরিজীবী: ১৯ জন
ব্যবসায়ী: ১০ জন
ড্রাইভার: ৫ জন
ইমাম: ২ জন
ন্যায়বিচারের জন্য আহ্বান
জেআরএ সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন আন্দোলনের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরে এবং শহীদদের আত্মত্যাগকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়।
জেআরএ’র এক মুখপাত্র বলেন, “যদি বাঙালি জুলাইকে ভুলে যায়, তাহলে বাংলাদেশ তার আত্মা হারাবে।”
জাতি যখন এই আত্মত্যাগকে স্মরণ করছে, তখন শহীদদের প্রতি সম্মান জানানোর মাধ্যমে তাদের ইতিহাস সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে জেআরএ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।