জুমবাংলা ডেস্ক : জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকের পরও চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী ডিমের বাজারের ব্যবসায়ীরা দোকান ও আড়ত দুটোই বন্ধ রেখেছেন। নতুন ডিম সরবরাহ হয়নি— এমন অজুহাতে তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে ডিমের বৃহৎ এ পাইকারি বাজার।
আড়তদার ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের মোকামে নতুন ডিম আসেনি। যা আছে তা আগের কেনা, বেশি দামে কেনা ডিম কোনোভাবেই কম দামে বিক্রি সম্ভব না। যার কারণে তারা দোকান বন্ধ রেখেছেন।
বুধবার (১৬ অক্টোবরর) বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাহাড়তলী বাজারে ডিমের আড়ত রয়েছে ১৫টি।ছোট-বড় মিলিয়ে ৩০টি পাইকারি দোকান রয়েছে। এরমধ্যে সব আড়ত বন্ধ রয়েছে। দুয়েকটি পাইকারি দোকান খোলা থাকলেও বেচাবিক্রি বন্ধ রয়েছে। যেসব দোকান খোলা রয়েছে সেখানেও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দরে। এসব দোকানে শত প্রতি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকায়, যা পিস হিসেবে দাম পড়ে ১৪ টাকা।
পাহাড়তলী বাজারে ডিমের আড়তদার হুমায়ুন কবির বলেন, ‘শুধু উৎপাদক, পাইকার ও খুচরা পর্যায়ের দাম নির্ধারণ করে ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। মিডিয়া না থাকলে বিভিন্ন জায়গা থেকে ডিম সংগ্রহ করে আড়তে তোলা যায় না। তাই তাদের ক্রয়-বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে দিতে হবে।’
আশ্বাস অনুযায়ী আড়ত না খুলে অধিকাংশ দোকান বন্ধ রাখার কারণ জানতে চাইলে চট্টগ্রাম ডিম ব্যবসায়ী আড়তদার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল শুক্কুর লিটন বলেন, ‘এখন আমাদের সবার কাছে বিক্রি করার মত পর্যাপ্ত ডিম নাই। আর যা আছে, তার ক্রয়মূল্য বেশি। লস দিয়ে কতক্ষণ দোকান খোলা রাখবে? তাই অধিকাংশ দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে।’
সরকারি দামে ডিম পাবে না ভোক্তারা
সরকারি দামে কখনো ডিম বিক্রি সম্ভব না বলে মনে করছেন চট্টগ্রাম ডিম ব্যবসায়ী আড়তদার সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল শুক্কুর লিটন। তিনি বলেন, সরকার উৎপাদক পাইকার ও খুচরা দর নির্ধারণ করে দিলেও মাঝে আরো অনেক ব্যবসায়ী আছে। তাদের খরচ আছে। আর তাদের ছাড়া ডিমের যোগান দেওয়াও সম্ভব না। যার ফলে সরকারি দামে কখনো ভোক্তারা ডিম পাবে না।
‘গতকালও আমরা ডিম কিনেছি ১২ টাকা ৫০ পয়সায়। আজকে আমাদেরকে ১২ টাকায় ডিম দিতে রাজি হয়েছে।’ তাহলে কিভাবে ১১ টাকা ৮৭ পয়সায় ভোক্তারা ডিম পাবে প্রশ্ন রাখেন এ ব্যবসায়ী নেতা।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ভোক্তা পর্যায়ে ডিম তিন-চার দিনের মধ্যে ১৩ টাকায় পাওয়া যাবে। আজকে আড়ত ও দোকানগুলো বন্ধ থাকলেও কাল থেকে পুরোদমে বিক্রি শুরু হবে বলে আশা করছি।’
জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (চট্টগ্রাম বিভাগ) মোহাম্মদ ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘মধ্যস্বত্বভোগী আসলে আড়তদারেরাই। তারা একযোগে সব দোকান বন্ধ রেখে বাজারে সংকট তৈরি করার চেষ্টা করছে। বিষয়গুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করছি, এবং নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি।’
চট্টগ্রাম অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন, ‘চট্টগ্রামের আড়তদাররা বৈঠকে খামারি ও আড়তদারদের মাঝামাঝি কিছু টাঙ্গাইলের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। মূলত তারা দর বেশি রাখার কারণে আড়ত ও পাইকারদের বেশি দামে কেনাবেচা করতে হচ্ছে।’
অভিযোগ সমাধানে জেলা প্রশাসকের চেষ্টা করছেন জানিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘ আমাদের ডিসি স্যার টাঙ্গাইলের ডিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলেছেন। টাঙ্গাইলে আজকে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত দরে কেনাবেচা নিশ্চিত করতে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করছি। তারাও আশা করি, সরকার নির্ধারিত মূল্যে কেনাবেচা করবে।’
খুচরাতেও বাড়তি দাম
চট্টগ্রামে ডিমের সবচেয়ে বড় আড়ত নগরের পাহাড়তলী বাজারে কিছু কিছু দোকান খুললেও কমেনি ডিমের দাম। সরকার নির্ধারিত দরের প্রায় ৪ টাকা বেশিতে খুচরায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ডিম। এ নিয়ে ক্রেতাদের অসন্তোষ থাকলেও বিক্রেতারা সরবরাহ সংকটের দোহাই দিচ্ছেন।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) সকালে সিটি গেট থেকে পাহাড়তলী বাজার ঘুরে দেখা যায়, সিটি গেট সংলগ্ন উত্তর কাট্টলী, সিডিএ ও বিশ্বকলোনিতে খুচরা দোকানে ডিমের দাম প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। ডজন হিসেবে দাম পড়ছে ১৭৪ টাকা, যা পিস প্রতি দাম ১৪ টাকা ৫০ পয়সা। কর্নেলহাট ও অলংকার বাজারেও ডিমের দাম একই। সূত্র : সিভয়েস২৪
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।