মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের রায় ঘোষণার আগের রাত—আর ঠিক সেই সময়েই উত্তেজনার আগুন ছড়িয়ে দেয় টানা ককটেল বিস্ফোরণ। মাত্র দুই ঘণ্টায় রাজধানীর আটটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ঘটে এসব বিস্ফোরণ, যা মুহূর্তেই ঢাকাজুড়ে তৈরি করে চরম আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তার আবহ।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় ঘোষণার আগের রাতে উত্তেজনায় টগবগ করে রাজধানী ঢাকা। রোববার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টার মধ্যে দুর্বৃত্তরা ঢাকার অন্তত আটটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ককটেল ছুড়ে বিস্ফোরণ ঘটায়।
বিস্ফোরণের ঘটনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত একটি হলো পরিবেশ, জলবায়ু ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নিউমার্কেট থানাধীন বাসভবনের সামনে ককটেল হামলা। এই ঘটনায় এলাকায় মুহূর্তেই তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ জানায়, বিস্ফোরণ ঘটেছে—
মিরপুর-১২ মেট্রো স্টেশনের নিচে,বাংলামোটর,গাবতলী,মহাখালী ফ্লাইওভার,মধ্য বাড্ডা,জুরাইন,কারওয়ান বাজারের সার্ক ফোয়ারা মোড় এবং
নিউমার্কেট এলাকায়।
এ ছাড়া রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাজধানীর ব্যস্ততম বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দে পথচারী ও যানবাহনের যাত্রীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, অনেকে নিরাপদে আশ্রয় নিতে চারদিকে দৌঁড়াতে শুরু করেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাস্থলগুলো ঘিরে তদন্ত শুরু করেছে। রায় ঘোষণার আগের রাতেই এমন ধারাবাহিক বিস্ফোরণ শহরজুড়ে নিরাপত্তা নিয়ে নতুন প্রশ্ন তুলেছে।
গাবতলীতে একটি ব্যাগ থেকে তিনটি ককটেল উদ্ধার করা হয়; এর মধ্যে একটি বিস্ফোরিত হয় এবং বাকি দুটি অবিস্ফোরিত অবস্থায় বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট উদ্ধার করে। জুরাইন এলাকা থেকে একজনকে আটক করেছে শ্যামপুর থানা পুলিশ। বাকি সব ঘটনায় হামলাকারীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে পুরো ঢাকা জুড়ে তীব্র উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। সবকটি ঘটনাস্থলে পুলিশ ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট কাজ করছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা হবে আগামীকাল সোমবার। এই রায়কে কেন্দ্র করে গত সপ্তাহে কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ডাকার পর থেকে ১০ নভেম্বর থেকে ঢাকাসহ সারাদেশে বাস-ট্রেনে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, রায় ঘোষণার দিন আজ সোমবার আরও বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। রাজধানীবাসী উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



