নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক লেনদেন, বেতন পরিশোধসহ আয়ন-ব্যয় সংক্রান্ত যাবতীয় দায়িত্ব পালন করে আসছেন হাসপাতালের পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম। অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এই দায়িত্ব হাসপাতালের উপপরিচালকের ওপর ন্যস্ত থাকার কথা।
প্রায় দুই বছর ধরে হাসপাতালের উপপরিচালক থাকা সত্ত্বেও এই দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি, যা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশ্ন তুলেছে সংশ্লিষ্ট মহলে।
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে পরিচালক হিসেবে যোগ দেন মো. আমিনুল ইসলাম। তখন দায়িত্বে থাকা উপপরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলমও ছিলেন আয়ন-ব্যয় কার্যক্রম থেকে বিচ্ছিন্ন। পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট যোগ দেন বর্তমান উপপরিচালক মুহাম্মদ আব্দুস সালাম সরকার। তিনিও প্রায় এক বছর দায়িত্বে থেকেও একইভাবে এ দায়িত্ব থেকে বঞ্চিত।
উল্লেখ্য, সরকারি হাসপাতালে আয়ন-ব্যয় কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাজের পরিধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর। এর মধ্যে রয়েছে ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী ক্রয়ের বিল পরিশোধ, স্টাফদের বেতন প্রদান, বাজেট ব্যবস্থাপনা, দৈনন্দিন নগদ লেনদেনের হিসাব রাখা, বিল যাচাই, নিরীক্ষা সহায়তা এবং হিসাব সংরক্ষণ ও হালনাগাদ করা।
কিন্তু এসব দায়িত্ব বর্তমান পরিচালক নিজেই পালন করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি একাধিকবার দায়িত্ব হস্তান্তরের অনুরোধ জানানো হলেও তিনি তা মেনে নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সব সরকারি হাসপাতালেই পরিচালক নিজেই আয়ন-ব্যয় সংক্রান্ত দায়িত্বে থাকেন। এটি প্রচলিত প্র্যাকটিস।’ তিনি আরও দাবি করেন, ‘শুধুমাত্র সামরিক বাহিনীর পরিচালনায় থাকা হাসপাতালে এ দায়িত্ব উপপরিচালকের হাতে থাকে। কাজেই এখানে নিয়ম লঙ্ঘনের কিছু হচ্ছে না।’
তবে ভিন্ন মত দিয়েছেন বর্তমান উপপরিচালক মুহাম্মদ আব্দুস সালাম সরকার। তিনি বলেন, ‘সরকারি বিধি অনুযায়ী এই দায়িত্ব আমার হওয়া উচিত। কিন্তু বারবার বলার পরও পরিচালক তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন না।’
নিয়ম, বাস্তবতা ও দায়িত্ববণ্টনের মধ্যে এই অসঙ্গতি কেবল প্রশাসনিক শৃঙ্খলাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে না, বরং আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার ক্ষেত্রেও তৈরি করছে সন্দেহ ও উদ্বেগ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।