আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও নির্বাহী বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধান অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ বলেছেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ দারিদ্র বিমোচনে ধারাবাহিকতা এবং জীবনমান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে কোভিড-১৯ অতিমারি ও এরপরবর্তী ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ দেশটির (বাংলাদেশ) দীর্ঘ দিনের ধারাবাহিক অর্থনৈতিক সাফল্য বাধাগ্রস্ত করেছে। এসব নানামুখী আঘাতে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন।’
বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদনের পর অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ এ কথা বলেছেন। আইএমএফের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিবৃতিতে এমনটি জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ সময় গতকাল সোমবার রাত ৯টায় অনুষ্ঠিত আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে এ ঋণ অনুমোদন করা হয়।
অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ বলেন, ‘বৈশ্বিক এসব অভিঘাতের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলার সঙ্গে সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনে দেশটির কর্তৃপক্ষের উচিত উচ্চাভিলাষী সংস্কার কর্মসূচিতে জোর দেওয়া। এক্ষেত্রে, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ও ২০৩২ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য পূরণে মানবসম্পদ ও অবকাঠামো খাতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ প্রয়োজন পড়বে। দেশটির কর্তৃপক্ষ এসব চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাও জরুরি কারণ এটি অর্থনীতিতে বড় ধরণের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। ফলে সামষ্টিক অর্থনীতি হুমকির সম্মুখীন হতে পারে।’
অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ আরও বলেন, ‘ইসিএফ/এএফএফের অর্থ সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে এবং একই সঙ্গে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নে সহায়ক হবে। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বৃদ্ধির কৌশল বাস্তবায়নেও সহায়ক হবে। কর নীতি এবং রাজস্ব প্রশাসনের সংস্কারের ফলে সামাজিক, উন্নয়নমূলক ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্যয় বাড়ানো সম্ভব হবে।’
আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘সরকারি ব্যয়, বিনিয়োগ ও ঋণ ব্যবস্থাপনার শক্তিশালীকরণে অর্থব্যবস্থার সংস্কারের ফলে সরকারি ব্যয় নির্বাহের কার্যকারিতা, সুশাসন ও জবাবদিহিতা জোরদার হবে। আর্থিক খাতের ঝুঁকি কমিয়ে, এ খাতে সুশাসন ও নিয়ন্ত্রণ কাঠামো জোরদার করে এবং শেয়ারবাজার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো গেলে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য উদ্দেশ্য পূরণে সহযোগিতা হয়।’
আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত এই প্রধান বলেন, ‘বাণিজ্য ও সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টিতে, আর্থিক খাতের সক্ষমতা গভীরতর করতে, মানবসম্পদের উন্নয়ন ঘটাতে এবং সুশাসন নিশ্চিত করতে কাঠামোগত সংস্কার জরুরি।’
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ যেসব প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আইএমএলের আরএসএফ তহবিলের অর্থ তাতে কাজে লাগবে বলে উল্লেখ করেন অ্যান্তইনেত মনসিও সায়েহ। তিনি বলেন, ‘জলবায় পরিবর্তন মোকাবিলায় বিনিয়োগ কার্যক্রমের উন্নতিতে এবং এর কার্যকারিতা নিশ্চিতে ইসিএফ/ইএফএফের আওতায় সংস্কারেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে আরএসএফ সংস্কারসমূহ। ফলে এ খাতে বেসরকারি অর্থায়নও সুরক্ষা পাবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।