জুমবাংলা ডেস্ক: ঢাকা ও কক্সবাজারের পর কুড়িগ্রামে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে চালু হয়েছে এক টাকার রেস্তোরাঁ। কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চর সুভার কুঠি গ্রামে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন স্থায়ীভাবে এই রেস্তোরাঁ চালু করেছে।
এই রেস্তোরাঁয় এক টাকায় পাওয়া যাচ্ছে বিরানি, পোলাও, ভাত, মাছ, মাংস, ডিমসহ ১২ পদের খাবার। ৫০ জন মানুষের বসে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে সেখানে।
রেস্তোরাঁয় খেতে আসা স্মৃতি বেগম বলেন, ‘এক টাকার রেস্টুরেন্টে নাতি-নাতনি,বিয়াইন,বোনসহ আসছি। হামরা গ্রামের মানুষ কোনোদিন চিন্তা করতে পারি নাই যে রেস্টুরেন্টে বসে খাবার খামো। আজকে এক টাকায় পেট ভরে খেতে পেরে সবাই খুশি হয়েছে।’
সত্তোর ঊর্ধ্ব বৃদ্ধা কাশেম আলী বলেন, ‘বাবা মোর বয়স মেলা হইছে। কোনো দিন টাকার অভাবে বড় বড় হোটেলে খাবার খেতে পারি নাই। চা-বিস্কুট ৫ টাকা দিয়ে খাইছি। এখন জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় সেটাও হয় না। কিন্তু বউসহ এসে এক টাকায় এমন দামী খাবার খেতে পারব ভাবতেই পারিনি। এক টাকায় মনমতো খেতে পেরে খুব খুশি হয়েছি বাবা।’
বুবলি আক্তার বলেন, ‘বাচ্চা নিয়ে এসেছি এক টাকার হোটেলে। ভাত, মাছ, মাংস, ডিম, সালাদ, ফল, মিষ্টি পেলাম। কামলা দেওয়া সংসারে শহরের হোটেলে গেলে কম করে হলেও ৪-৫শ টাকা খরচ হতো। কিন্তু এখানে এক টাকায় খেতে পেরে স্বপ্নই মনে হচ্ছে।
রেস্তোরাঁর স্বেচ্ছাসেবক হৃদয় বলেন, ‘আজ জীবনে প্রথমবারের মতো রেস্টুরেন্টে ওয়েটারের কাজ করছি। সেটিও বিনা পয়সায়। এতে উপলদ্ধি করতে পারব নিয়মিত হোটেলের ওয়েটার,বাবুর্চিসহ কর্মচারীদের ঘাম ঝরানো শ্রম। সত্যি আমি বেশ গর্বিত প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের জন্য এমন কষ্ট করতে পেরে।’
স্বেচ্ছাসেবক প্রধান আকরাম হোসেন বলেন, ‘বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দরিদ্র, এতিম, অসহায়দের খুঁজে বের করে তাদের টোকেন দেয়। পরে তারা এসে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সুবিধা নেন।’
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ প্রধান সালমান খান ইয়াছিন বলেন, ‘বর্তমানে সপ্তাহে দুই দিন এই রেস্টুরেন্টের কার্যক্রম চলবে। তবে এই কাজে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে প্রতিদিন করার পরিকল্পনা আছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫০০ মানুষ এই রেস্টুরেন্ট থেকে সেবা দেওয়া সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘কুড়িগ্রামে এই রেস্টুরেন্ট একটি মডেল মাত্র। দেশের বিভিন্ন দরিদ্র এলাকায় এই ধরনের কার্যক্রম চালু করা গেলে ক্ষুধায় মানুষের কষ্ট থেকে মুক্তির পাশাপাশি পুষ্টিজনিত অভাবের রোগ থেকে মুক্তি মিলবে এই জনপদের মানুষের।’ (কালবেলা)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।