বছর দেড়েক পরে দেখা। মিনিট চল্লিশের বৈঠক। তুমুল জল্পনার আবহে হওয়া সেই বৈঠক সেরে বেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে খুব ভাল আলোচনা হয়েছে।’’
কী নিয়ে হল কথা? সরকারের সঙ্গে সরকারের বৈঠক, তাই কোনও রাজনৈতিক কথা হয়নি, বললেন মমতা। আর জানালেন, বীরভূমের দেউচা-পাচামিতে কয়লা ব্লকের উদ্বোধনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে পশ্চিমবঙ্গে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তিনি। আরও জানালেন যে, আগামী কাল যদি অমিত শাহ সময় দেন, তা হলে বৈঠক করবেন তাঁর সঙ্গেও।
মোদির সঙ্গে বৈঠক নিয়ে অনেক কৌতূহল ছিল। কারণ হঠাৎ নির্ধারিত হয়েছে ওই বৈঠক। কৌতূহলের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিলেন মমতা বৈঠক থেকে বেরিয়ে। যে মোদির সঙ্গে তার এতো বাদানুবাদ, সেই মোদির সঙ্গে বৈঠক শেষে বেরিয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ কথা বললেন মমতা।
প্রায় ৩০ মিনিট বৈঠকের পর মমতা বলেন, রাজনীতি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, একটা সরকারের সঙ্গে আরেকটা সরকারের মিটিং হলো। বীরভূমের দেউচা-পাচামি কয়লাখনির উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, পূজা-নবরাত্রি মিটে গেলে একটা দিন সময় দিলে উদ্বোধনের কাজটা একসাথে সেরে ফেলা যাবে।
মমতা বলেন, রাজ্যের অন্যান্য দাবি-দাওয়া নিয়েও মোদির সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ মমতার? অবাক হওয়া এখানেই শেষ নয়। গত কয়েকদিন নানাভাবে এনআরসি নিয়ে মোদিকে আক্রমণ করেছেন মমতা এবং তৃণমূলের নেতৃবৃন্দ। আজ মুখ্যমন্ত্রীকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেন, দিদি এনআরসি নিয়ে কোনো কথা হয়েছে?
তিনি বলেন, না এনআরসি নিয়ে কোনো কথা হয়নি। এনআরসি তো শুধু আসামের বিষয়। পশ্চিমবঙ্গে তো এখন কিছু হচ্ছে না! এখানে রাজনৈতিক কোনো ব্যাপারে আলোচনা হয়নি।
পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি করতে দেব না, এনআরসি করে কাউকে দেশ থেকে বের করতে দেব না, সাহস থাকলে করে দেখাক। মমতা এইসব কথা বলতেন, কিন্তু আজ হঠাৎ যেন অন্য সুর।
অবাক করা এখানেই শেষ নয়। যে অমিত শাহকে ধান্দাবাজ গুন্ডা বলেছিলেন মমতা, আজ তার সাথে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন তিনি। মমতা বলেন, সময় দিলে কালকেই তার সঙ্গে দেখা করব।
আজ বৈঠক শেষে মুখ্যমন্ত্রীর ‘রাজনীতি নিয়ে কথা হয়নি’ মন্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না বিরোধীরা। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, আসলে ম্যানেজ করতে দিল্লি গেছেন। যাতে সারদা চিটফান্ড মামলায় তাকে এবং তার ভাইপো অভিষেককে নিয়ে টানাটানি না হয়, তাই এত সুর নরম।
তৃণমূল নেতারাও একান্ত স্বীকার করেন তারা মমতার এই রূপ দেখে অবাক। কিন্তু এক নেতা বলেন, তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে গেছেন। সেখানে গিয়ে তিনি ঝগড়া করবেন সেটা তো হতে পারে না, এটা সৌজন্যের রাজনীতি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।