বর্তমানে ডিজিটাল যুগে ইউটিউবার, ইনস্টাগ্রাম ইনফ্লুয়েন্সার, ভ্লগার- এই শব্দগুলো বেশ পরিচিত। অনলাইন ভিডিও শেয়ারিং ও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বহু আগে থেকেই নেটিজেনদের মধ্যে জনপ্রিয়, সেইসঙ্গে ইউটিউবাররাও। ইউটিউবারদের কাজ তো আমরা হরহামেশাই দেখে থাকি, কিন্তু এই কাজের মাধ্যমে তারা কত আয় করেন, সে ব্যাপারেও নিশ্চয়ই জানার কৌতূহল হয়! শুধু ইউটিউব থেকে মাসিক আয় দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করছেন এমন ইউটিউবারের সংখ্যাও কম নয়।
কিন্তু ইউটিউব থেকে টাকা উপার্জনের জন্যও পূরণ করতে হয় কিছু শর্ত। একজন ইউটিউবারের জন্য এক মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার পাওয়া অনেক বড় একটি মাইলস্টোন। কারো এক মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার রয়েছে মানেই সে এখান থেকে আয় করেই স্বচ্ছন্দ্যে দিন পার করতে পারবে।
যদিও ইউটিউবারদের আয়ের বিভিন্ন পন্থা থাকে, কিন্তু তাদের ভিডিওর মধ্যে প্রচারিত বিজ্ঞাপনই তাদের আয়ের একটি প্রধান উৎস বলা যায়। তাহলে এক মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার থাকলে একজন ইউটিউবারকে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ কত টাকা দেয়?
এক মিলিয়নেরও বেশি সাবস্ক্রাইবার রয়েছে এমন একজন জনপ্রিয় ইউটিউবার হলেন নেইট ও’ব্রিয়েন। চলতি বছরের তিনি ইউটিউব থেকে আয় করেছেন ৪৪০,০০০ ডলার! এই প্ল্যাটফর্ম থেকে তার মাসিক আয় ১৪,৬০০ থেকে ৫৪,৬০০ ডলার।
আরেকজন লাইফস্টাইল ক্রিয়েটর ইউটিউবার টিফানি মা ইনসাইডারকে বলেছিলেন যে, তিনি তার ভিডিওতে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মাসে ১১,৫০০ ডলারের মতো আয় করেন।
তবে ইউটিউব থেকে সরাসরি টাকা উপার্জন করতে চাইলে ক্রিয়েটরদের অবশ্যই পার্টনার প্রোগ্রাম-এর জন্য আবেদন করতে হবে। একইসঙ্গে ৫০০ সাবস্ক্রাইবারের একটা কোটা পূরণ করতে হবে, বিগত ৯০ দিনে তিনটি পাবলিক আপলোড থাকতে হবে অথবা বিগত বছরে ৩০০০ ওয়াচ আওয়ার কিংবা বিগত ৯০ দিনে ৩ মিলিয়ন ইউটিউব শর্টস ভিউ থাকতে হবে। আবেদন গৃহীত হওয়ার পর যাদেরকে যোগ্য হিসেবে বেছে নেওয়া হবে, সেসব ক্রিয়েটররা চ্যানেল মেম্বারশিপ, সুপার চ্যাট, সুপার স্টিকারস, সুপার থ্যাংকস-এর মতো ফিচারগুলো থেকে এবং ইউটিউব শপিং-এর মাধ্যমে নিজেদের পণ্যের প্রচারণা চালানোর মাধ্যমে আয় করতে পারবেন।
ইউটিউব অ্যাডসেন্স থেকে টাকা আয় করার জন্য এই প্রোগ্রামে থাকা ক্রিয়েটরদের অবশ্যই ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং গত এক বছরে ৪০০০ ওয়াচ আওয়ার থাকতে হবে। প্রতি ১০০০ অ্যাড ভিউ এর জন্য বিজ্ঞাপনদাতারা ইউটিউবকে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিয়ে থাকেন। আয়ের ৪৫ শতাংশ ইউটিউব নেয় এবং বাকিটা ক্রিয়েটররা পান।
ইউটিউবে অর্থ উপার্জন পরিমাপের দুটি প্রধান সিস্টেম হলো সিপিএম রেট বা বিজ্ঞাপনদাতারা প্রতি ১০০০ অ্যাড ভিউতে ইউটিউবকে কত টাকা দিচ্ছে; এবং আরপিএম রেট বা প্রতি ১০০০ ভিডিও ভিউতে ইউটিউব টাকা কেটে রাখার পর একজন ক্রিয়েটর কত পাচ্ছে।
পারসোনাল ফাইন্যান্স ও ব্যবসায়ের মতো বিষয়গুলো বিজ্ঞাপনদাতাদের নজর আকৃষ্ট করে একজন ক্রিয়েটরের বিজ্ঞাপনের রেট বাড়াতে পারে। কিন্তু ইউটিউবার মা যেহেতু লাইফস্টাইল নিয়ে কাজ করেন, তাই নিজের আয় বাড়ানোর জন্যে অন্য একটি কৌশল অবলম্বন করেছেন তিনি।
“ইউটিউব থেকে সেরাটা বের করে আনার জন্য আমার মনে হয়, ইউটিউবারদের ৩-৪টি বিজ্ঞাপন দেওয়া উচিত একটি ভিডিওতে”, বলেন মা।
ইউটিউব থেকে সরাসরি আসা টাকা অনেক ক্রিয়েটরদের আয়ের প্রধান উৎস।
নিচে এক মিলিয়ন ফলোয়ার্স আছে এমন আটজন ইউটিউবারের এই প্ল্যাটফর্ম থেকে এক্সক্লুসিভ আয়ের হিসেব দেওয়া হলো:
– ইউটিউবার নেইট ও’ব্রিয়েনের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ১.৩১ মিলিয়ন এবং তিনি পারসোনাল ফাইন্যান্স বিষয়ে ভিডিও তৈরি করেন।
– মেরিনা মোজিলকোর চ্যানেলে রয়েছে প্রায় ২ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার এবং তিনি ব্যবসা-সংক্রান্ত ভিডিও তৈরি করেন।
– মাইকেল গ্রথের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ২.০৫ মিলিয়ন এবং তিনি পোকেমন সংক্রান্ত ভিডিও বানান।
– শেলবি চার্চের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ১.৭৯ মিলিয়ন এবং তিনি প্রযুক্তি ও লাইফস্টাইল ভিডিও বানান।
– আন্দ্রেই জিক এর ২.২৫ মিলিয়ন সাবস্ক্রাইবার রয়েছে এবং তিনিও পারসোনাল ফাইন্যান্স বিষয়ক ভিডিও তৈরি করেন।
– টিফানি মা এর সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ১.৭৮ মিলিয়ন এবং তিনি লাইফস্টাইল ভিডিও বানান।
– আলি আবদালের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৪.৪৬ মিলিয়ন এবং তিনি প্রোডাক্টিভিটি ও শিল্পোদ্যোগ বিষয়ে ভিডিও তৈরি করেন।
– আর সবচেয়ে জনপ্রিয় ইউটিউবার নুসেইর ইয়াসিন, যিনি ‘নাস ডেইলি’ নামে অধিক পরিচিত, তার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা এখন ১২ মিলিয়ন। তিনি শিক্ষা বিষয়ক ও প্রাণবন্ত-বিনোদনধর্মী ভিডিও তৈরি করেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।