বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : যে দেশের বেশির ভাগ মানুষ কৃষি পেশায় জড়িত সেই পেশার অর্থনৈতিক চিত্র পরিবর্তন করতে হলে খরচ কমাতে হবে কৃষকের। কৃষিতে যুক্ত করতে হবে প্রযুক্তির ছোঁয়া। সেই চিন্তা থেকে জমি থেকে গোলায় ধান তোলা পর্যন্ত ব্যয়ের চিত্র পাল্টে দিতে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিআরআরআই বা ব্রি) বিজ্ঞানীরা ‘খামার যন্ত্রপাতি গবেষণা কার্যক্রম বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পের অর্থায়নে উদ্ভাবন করেছেন ‘ব্রি হোলফিড কম্বাইন হারভেস্টার’ নামের একটি যন্ত্র। এর মাধ্যমে প্রায় ১৭ গুণ কম খরচে ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াই সম্ভব বলে মনে করছেন ব্রির বিজ্ঞানীরা।
হারভেস্টারটি উদ্ভাবনে নেতৃত্ব দিয়েছেন ব্রির জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (এসএসও) ড. মো. আশরাফুল আলম। তিনি জানান,
এই যন্ত্র বা হারভেস্টারটির দাম আমদানি করা হারভেস্টারের তুলনায় অর্ধেক, কিন্তু প্রচলিত যন্ত্রের চেয়ে ধান কাটার সক্ষমতা বেশি এবং সময়ও কম লাগে। যন্ত্রটি উদ্ভাবনের সময় মোট ১৯টি বৈশিষ্ট্যের দিকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এরই মধ্যে চুয়াডাঙ্গার নুরনগরে পরীক্ষা করা হয়েছে হারভেস্টারটি। মাঠে পরীক্ষা করে কার্যকারিতা প্রমাণের ফল পেয়েছেন গবেষকরা। এরপর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় ৩১ ডিসেম্বর। তবে এখনই বাজারে মিলবে না এই যন্ত্র। এ ধরনের যন্ত্র বাণিজ্যিক উৎপাদন করতে বড় ওয়ার্কশপ প্রয়োজন। এ নিয়ে সরকারি পর্যায়ে ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট স্থাপনের বিষয়ে কয়েকটি বৈঠক হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।
‘ব্রি হোলফিড কম্বাইন হারভেস্টার’-এর দৈর্ঘ্য পাঁচ হাজার ২০০ মিলিমিটার, প্রস্থ এক হাজার ৮০০ মিলিমিটার এবং উচ্চতা দুই হাজার ৬০০ মিলিমিটার।
ঘণ্টায় তিন থেকে চার বিঘা ধান কাটতে পারে যন্ত্রটি। এক ঘণ্টায় জ্বালানি খরচ হবে চার লিটার। এই যন্ত্র দিয়ে ধান কাটা থেকে মাড়াই-ঝাড়াই পর্যন্ত করা যাবে। শুধু সময় না, বাঁচাবে কৃষকের খরচও। তিন বিঘা জমির ধান কাটতে পুরো প্রক্রিয়ায় খরচ হবে ৫০০ টাকার মতো। কম্বাইন হারভেস্টারের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, এটি কাদায় চলবে। তাই ছোট জমির ধান কাটতে বেশ কার্যকর। ফোর সিলিন্ডার মেশিন, তাই শব্দও অনেক কম হবে বলে দাবি গবেষকদের।
গবেষণা প্রকল্পের পরিচালক এ কে এম সাইফুল ইসলাম জানান, দেড় বছর ধরে গবেষণা করে যন্ত্রটি উদ্ভাবন করা হয়েছে। বিশেষ করে হাওর অঞ্চলকে টার্গেট করে যন্ত্রটি উদ্ভাবন করা হয়। কারণ বোরো মৌসুমে শ্রমিক সংকট এবং পাহাড়ি ঢলে প্রচুর ফসল নষ্ট হয়। তবে আমন এবং বোরো উভয় মৌসুমে যন্ত্রটি দিয়ে ধান কাটা যাবে।
তিনি বলেন, কম্বাইন হারভেস্টারটি দিয়ে দিনে ২০-৩০ বিঘা জমির ধান কাটা যাবে। জ্বালনি খরচও খুব কম। ঘণ্টায় মাত্র চার লিটার। এ ধরনের মেশিনের আমাদানি মূল্য ২৫-৩০ লাখ টাকা। শিগগিরই যন্ত্রটি বাজারজাতকরণের জন্য একটি ভালো মেশিনারি উৎপাদক কম্পানিকে দেওয়া হবে।
‘সবচেয়ে নির্ভুল’ মিথ্যা শনাক্তকরণ যন্ত্র আবিষ্কার ইসরায়েলের!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।