রঞ্জু খন্দকার, গাইবান্ধা থেকে : প্রায় ২০ বিঘা জমির বিস্তৃত মাঠ। মালিকও অনেক। বছরে দুবার ধানচাষ ছাড়া বাকি সময় পড়েই থাকত জমিগুলো। এবার সেগুলো এক করার উদ্যোগ নিয়েছেন গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার একদল তরুণ-যুবক। এসব জমিতে ধানের পাশাপাশি মাছের চাষ শুরু করেছেন তাঁরা।
এ আয়োজন করেছে কুমারগাড়ী গ্রামের মণ্ডলপাড়া। এতে যোগ দিয়েছেন ৩৩ জন তরুণ-যুবক।
একতার এ শক্তি সমন্বয় করছেন আমিনুল ইসলাম মণ্ডল। তিনি জুমবাংলাকে বলেন, ‘জমিগুলো শুধু শুধু পড়ে থাকত। দেখে ভাবলাম, সবাই এক হয়ে যদি এতে আমরা মাছ চাষ করি, তবে এর সুফল পাবেন সবাই। এই কারণেই সবাইকে সমন্বয় করার এ উদ্যোগ নিই।’
উদ্যোক্তা কয়েকজন জানান, এর আগেও ফসলের জমিতে মাছ চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু তখন চাঁদার পরিমাণ কিছু বেশি ছিল। সে জন্য উদ্যোগ সফল হয়নি। এবার চাঁদার পরিমাণ কম। ফলে অনেকে অংশ নিয়েছেন।
আমিনুল বলেন, ‘যাতে সবাই এ প্রকল্পে অংশ নিতে পারেন, সে জন্য চাঁদার পরিমাণ কম ধরা হয়েছে। যত বেশি অংশগ্রহণ, তত বেশি শক্তি। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর চাঁদা ১ হাজার টাকা করে ধরা হয়েছে। সে কারণে ৩৩ জন এতে যুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজন বাইরের পাড়ারও রয়েছেন। এতে আমাদের শক্তি আরও বেড়েছে।’
সরজমিনে দেখা যায়, কুমারগাড়ী গ্রামের মণ্ডলপাড়া পার হয়ে দক্ষিণে ছাতিয়ানতলা বাজার হয়ে নাকাইহাট সড়ক। এর পশ্চিমপাশে বিস্তৃত মাঠ। এর পশ্চিম ও দক্ষিণে দুটি সড়ক দিয়ে মাঠে পানি যাতায়াতের পথ বন্ধ। উত্তর পাশে মন্ডলপাড়ার লোকজনের বসতবাড়ি। সেদিক দিয়েও মাঠে পানি যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ।
এলাকার কয়েকজন জানান, চারদিক বদ্ধ হওয়ায় এই মাঠে বন্যার পানি ঢোকার পথ নেই। ফলে এটি যেন প্রাকৃতিক পুকুরে পরিণত হয়েই আছে। তাই এখানে মাছ চাষ করা যাবে। সঙ্গে ধান তো হবেই।
সরেজমিনে আরও দেখা যায়, মণ্ডলপাড়া পার হয়ে নাকাইহাট সড়কের পশ্চিমপাশে একটি সাইনবোর্ড বসানো হয়েছে। এতে লেখা– কুমারগাড়ী মৎস্য চাষ প্রকল্প। আয়োজনে: মন্ডলপাড়া।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, গত জুন মাসে এ প্রকল্প চালু করা হয়েছে। মাঠে এখনো পর্যাপ্ত পানি জমেনি। ফলে এখনো পুরোদমে মাছের পোনা ছাড়া যায়নি। প্রকল্পের জমিগুলোর মধ্যে ৪টি পুকুরও পড়েছে। সেগুলোয় এ পর্যন্ত ৭২ কেজি পোনা ছাড়া হয়েছে। পানি বাড়লে আরও ২-৩ মণ পোনা ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
আমিনুল ইসলাম বলেন, তিনি এর আগে সিলেটসহ হাওর এলাকায় ওষুধ কোম্পানির চাকরি করেছেন। সেই সূত্রে হাওরে একত্রে মাছ চাষের বিষয়টি দেখে আসেন। কয়েক বছর আগে তিনি ছাতিয়ানতলা বাজারে ওষুধের দোকান দেন। এরপর থেকেই ভাবতে থাকেন, সবাইকে একত্র করলে এখানেও মাছ চাষ করা সম্ভব। সেই ভাবনা থেকেই তিনি এ উদ্যোগ নেন। আশা করছেন, তাঁরা একতার শক্তি দেখাতে পারবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।