জুমবাংলা ডেস্ক : করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে যেখানে সারাদেশের মতো মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায়ও যানবাহনসহ সকল দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। থমকে গেছে নিম্ন আয়ের মানুষের চলার পথ। এরই মধ্যে হঠাৎ করে মৌলভীবাজার-২ আসনের সাংসদ সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদের সাথে এক ব্যক্তির একটি ফোনালাপের অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এদিকে এলাকা থেকে লাপাত্তা আলাপকারী ওই ব্যাক্তি। ওই ওডিওর পক্ষে বিপক্ষে চলছে সমালোচনা।

জানা গেছে, এক সময়ের ডাক সাইটের নেতা, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ ঐক্যফ্রন্ট থেকে ধানের শীষ নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে তাকে সরব থাকতে দেখা যায়নি। হিসেব কষে দেখা গেছে, এমপি হওয়ার দুই বছরের পথে। এরই মধ্যে প্রায় ৮-৯ বার তিনি নির্বাচনী এলাকায় এসেছেন। বছরের পুরো সময়টাই তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। তাকে এলাকায় না পেয়ে হতাশ রয়েছে জনগণ।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার কুলাউড়ার এক ব্যক্তির সাথে ত্রাণ চাওয়া নিয়ে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদের ৩ মিনিটি ১২ সেকেন্ডের একটি ফোঁনালাপ (ভয়েস রেকর্ড) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। মুহুর্তের মধ্যে বিষয়টি ভাইরাল হলে দেশ ও প্রবাস জুড়ে শুরু হয় পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনা। বিষয়টিকে সুলতান অনুসারীরা একটি গভীর ষড়যন্ত্র মনে করছেন। তারা মনে করছেন, ব্যক্তি সুলতান মনসুরের জনপ্রিয়তা ও মান সম্মান নষ্ট করার জন্য একটি বিশেষ মহল এসব নাটক সাজাচ্ছে এবং অপ্রচার চালাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফোঁন আলাপকারী ব্যক্তির নাম মুহিন আহমদ। তাঁর বাড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব প্রতাবী গ্রামে। তাঁর পিতার নাম রেজান মিয়া ঠিকাদার। এদিকে গভীর রাতে ওই ছেলে তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে সুলতান মনসুরের পক্ষে একটি ভিডিও বার্তা দেন। তিনি ওই ভিডিও বার্তায় দাবি করেন, এটা বানোয়াট। সুলতান মনসুর একজন ভালো মানুষ, জনপ্রতিনিধি, একজন এমপি। আমারে ফাঁসানোর জন্য এই ভয়েস রেকর্ড ভাইরাল করা হয়েছে।
কুলাউড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ বুধবার মুঠোফোনে বলেন, এমপি সুলতান মনসুরের সাথে ফোঁনালাপের বিষয়টি মুহিন তাকে অবগত করে। এটা মুহিন ও সুলতান মনসুরের বক্তব্য যে সেটা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। একজন জাতীয় নেতা এবং এমপি হয়ে তিনি একজন সাধারণ মানুষের সাথে যে আচরণ করেছেন সেটা কখনোই মেনে নেওয়া যায়না। তাঁর আচরণে আমরা সবাই সামাজিক ভাবে আহত হয়েছি। এলাকায় এটা নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করছে।
একটি সূত্র জানায়, ফোনালাপের বিষয়টি ভাইরাল হওয়ার পর সুলতান মনসুর এমপির অনুসারীরা ওই ছেলে মুহিনের সাথে যোগাযোগ করে তাকে অনেক চাপ প্রয়োগ করে। ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে বাড়ির বাইরে অন্য কোথাও নিয়ে সুলতান মনসুরের পক্ষে একটি ভিডিও বার্তা ফেসবুকে দিতে বাধ্য করে। অনেকেই মনে করছেন, যে ব্যক্তির ফোঁনালাপ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন সমালোচনা হচ্ছে সেই ব্যক্তিকে দিয়ে কিভাবে একটি ভিডিও বার্তা মুহুর্তের মধ্যে তৈরি করা যায়। বিশেষ করে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করতে শুধু সুলতান অনুসারীদের দেখা গেছে।
সরেজমিন বুধবার ওই ছেলে মুহিনের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, মুহিন আহমদ সকাল ৭টা থেকে বাড়ির বাইরে অবস্থান করছে। তার ব্যবহৃত মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে। পরিবারের স্বজনরা ফোনের ভয়েস রেকর্ডটি যে মুহিনের তারা সেটা নিশ্চিত করেন। তবে এমপির সাথে ফোঁনালাপের পর ফিরতি আবার কেন সে ভিডিওটি ফেসবুকে দিলো সেটার বিষয়ে পরিবারের স্বজনরা খুবই বিপাকে পড়েছেন এবং চিন্তায় পড়েছেন। এলাকার অনেকেই মনে করছেন, সুলতান মনসুরের অনুসারীদের ভয়ে মুহিন এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছে। আর মুহিন নিজে কয়েকদিন আগে বাড়ির পাশে একটি কালভার্টে বসে এমপি সুলতান মনসুরের সাথে কথা বলেছে। এ সময় তাঁর সাথে এলাকার কয়েকজন যুবক ছিলেন। পরে সে বিষয়টি এলাকার অনেকের সাথে অবগত করেছে বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বুধবার মুঠোফোনে বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না, আমি ওই ছেলেকে চিনি না, জানি না। আর আমিতো তার অথরিটি না। সে আমার অথরিটি না। আপনি তো এলাকায় নেই এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি যেখানে থাকার প্রয়োজন সেখানেই আছি। আপনাকে নিয়ে অনেকেই ফেসবুকে মন্তব্য করছে আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এক কথায় বললাম তো এসব বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। তুমি জিজ্ঞেস করেছো তাই বলেছি, ওকে ভালো থেকো, এসব বলে তিনি ফোন কেঁটে দেন।
সূত্র : কালের কণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



