জুমবাংলা ডেস্ক : সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আল আমিন মহিলা দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির কথা বলে ২১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এখন এমপিওভুক্তি তো দূরের কথা, টাকাগুলো ফেরতও দিচ্ছে না প্রতারকচক্র। এরই মধ্যে টাকা ফেরত পেতে মাদ্রাসা সুপার ও শিক্ষকরা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে অভিযোগ করেছেন। সেখানে কোনো ফল না পেয়ে তারা সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন টাকা আদায়ের জন্য।
মাদ্রাসা সুপার গোলাম রসুল তার লিখিত বক্তব্যে জানান, সদর উপজেলার চুপড়িয়া গ্রামের মোশাররফ হোসেন এই চক্রের প্রধান। তার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন তার বাবা মুজিবর রহমান ও বোন নাহার। মোশাররফ নিজেকে সরকারের কাছের লোক দাবি করে জানিয়েছিলেন, তার সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিব এবং অর্থ উপদেষ্টার আলোচনা হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে ৩০ লাখ টাকা দিলে এমপিওভুক্ত হবেন মাদ্রাসার ওই ১১ শিক্ষক।
মাদ্রাসা সুপার আরো জানান, ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে টাকাগুলো নেন মোশাররফ ও তার বোন। এখন টাকা ফেরত চাইলে তিনি নানান তালবাহানা শুরু করেন। মোশাররফ নিজেকে কখনও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক, কখনও বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির পরিচালক এবং কখনও প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব পরিচয় দিয়ে এই প্রতারণা চালিয়েছেন।
তবে চুপড়িয়া গ্রামের অধিবাসীরা জানায়, মোশাররফ ঢাকায় সবজির ব্যবসা করেছেন। সচিবালয়ের আশপাশের এলাকায় থাকতেন।
মাদ্রাসা সুপার গোলাম রসুল অভিযোগ করে বলেন, ‘টাকা চাওয়ার পর মোশাররফ ফেরত দেবেন বলে সময় নিচ্ছেন বারবার। গত ৩০ অক্টোবর টাকা পরিশোধের সর্বশেষ দিন ছিল। কিন্তু মোশাররফের বাবা মুজিবর রহমান এখন গ্রাম থেকে পালিয়ে গেছেন। তাঁকে মোবাইলে পাওয়া যাচ্ছে না। অপরদিকে তার বোন নাহারও রয়েছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোশাররফ শুধু শিক্ষকদের ওই ২১ লাখ টাকাই না, চুপড়িয়া গ্রামের মো. আবু তাহেরকে বিদেশে পাঠানোর নামে এক লাখ, আকলিমা খাতুন নামের এক নারীকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি দেওয়ার নামে হাতিয়ে নিয়েছেন আরো দুই লাখ টাকা। এভাবে অনেকের কাছ থেকেই মোশাররফ প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিয়ে এখন তা আর ফেরত দিচ্ছেন না।
আল আমিন মহিলা দাখিল মাদ্রাসার পরিচালনা পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিল সানা জানান, মোশাররফ সবার চোখে ধুলো দিয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে এই টাকা আদায় করেছেন। ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মাদ্রাসার শিক্ষকরা প্রায় সবাই দরিদ্র। তারা তাদের এমপিওভুক্তির জন্য সহায়সম্পদ বিক্রি করে প্রতারক মোশাররফ হোসেনের হাতে টাকা তুলে দিয়েছেন। তিনি অবিলম্বে প্রতারক মোশাররফকে গ্রেপ্তার করে দরিদ্র শিক্ষকদের টাকা আদায় এবং তাকে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানান।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।