জুমবাংলা ডেস্ক : সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ থেকে তুলে নিয়ে ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রলীগের ছয় কর্মীর নাম উঠে এসেছে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের ছবি ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এখন পর্যন্ত ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত কাউকে আটক করা যায়নি। বরখাস্ত করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির দুই নিরাপত্তাকর্মীকে।
একই সঙ্গে মামলার আসামি ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমানের সিট বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভা শেষে ছাত্রাবাসের নিরাপত্তাকর্মী রাসেল মিয়া ও সবুজ আহমদকে বরখাস্ত করা হয়। তারা দুজনই চুক্তিভিত্তিক নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এমসি কলেজের অধ্যক্ষ সালেহ আহমদ।
এ প্রসঙ্গে সালেহ আহমদ বলেন, বরখাস্তকৃত দুই নিরাপত্তাকর্মীর দায়িত্ব পালনে গাফিলতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণ হলে মামলার আসামি ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী মাহফুজুর রহমানকে কলেজ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।
জানা গেছে, ছাত্রাবাসে ধর্ষণকাণ্ডে কলেজের গণিত বিভাগের প্রধান আনোয়ার হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটির অন্যান্যরা হলেন- ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক (হোস্টেল সুপার) মো. জামাল উদ্দিন এবং কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক জীবন কৃষ্ণ ভট্টাচার্য। তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন অধ্যক্ষ।
এদিকে ফেসবুকে সরব এমসি কলেজে গণধর্ষণের আসামিরা। তারা ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। আজ শনিবার সকালেও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিতে দেখা গেছে এই মামলার দুই আসামিকে। গণধর্ষণের মামলার ৫ নম্বর আসামি রবিউল ইসলাম শনিবার সকাল ১১টার দিকে ফেসবুকে লেখেন, ‘আমিএই নির্মম গণধর্ষণের সাথে জড়িত নই, আমাদের পরিবার আছে। যদি আমি এই জঘন্য কাজের সাথে জড়িত থাকি তাহলে প্রকাশ্যে আমাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। আমাকে এবং আমার প্রাণের সংগঠন ছাত্রলীগের নামে কোনো অপপ্রচার করবেন না।’
অন্যদিকে, মামলার ৬ নম্বর আসামি মাহফুজুর রহমান মাসুম ফেসবুকে লেখেন, ‘এরকম জঘন্য কাজের সাথে আমি জড়িত না। যদি জড়িত প্রমাণ পান প্রকাশ্যে আমাকে মেরে ফেলবেন।’
ফেসবুকে সরব থাকার পরও আসামিদের গ্রেপ্তার করতে না পারা প্রসঙ্গে শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা তাদের গ্রেপ্তারে সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি প্রাইভেটকার যোগে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন ওই তরুণী। সন্ধ্যা হয়ে এলে ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগের ছয় কর্মী মিলে স্বামীসহ তরুণীকে তুলে নেন পার্শ্ববর্তী কলেজ ছাত্রাবাসে। পরে তারা স্বামীকে বেঁধে মারধর করে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করা হয়। বর্তমানে ওই তরুণী সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।