আন্তর্জাতিক ডেস্ক : দক্ষিণ কোরিয়ার তিনজন বিজ্ঞানীর দাবি একই! সেই তিনজন বলছেন, তাঁরা একটি সুপারকন্ডাক্টর তৈরি করেছেন, যা ঘরের তাপমাত্রা এবং পরিবেষ্টিত চাপ–উভয় ক্ষেত্রেই কাজ করে। সমস্যা হলো, বিষয়টি নিয়ে অনেক বিজ্ঞানী সন্দিহান। তাঁরা ওই তিন বিজ্ঞানীর গবেষণার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন।
ফলাফল যেহেতু এখনো জানা যায়নি, তাই বলা যাচ্ছে না কী হবে। তবে গবেষণা নিশ্চিত হলে এটি হবে বিজ্ঞানের বিপ্লবী অগ্রগতি। সুপারকন্ডাক্টরের প্রতিরোধক্ষমতা শূন্য হওয়ার কারণে প্রযুক্তিতে এর বহু উপযোগিতা রয়েছে। যেখানে নিরবচ্ছিন্নভাবে অনেক পরিমাণের বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা প্রয়োজন, সেখানে এর জুড়ি মেলা ভার।
শুধু একটিই ব্যাপার, যে সরঞ্জামের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ যাবে, তাকে বেশ ঠান্ডা করে রাখতে হবে। কারণ, আমাদের স্বাভাবিক জগতের তাপমাত্রায়, অর্থাৎ ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ২৯৩ কেলভিনের আশপাশে থাকলে সুপারকন্ডাক্টর দশা লোপ পাবে। সুপারকন্ডাক্টিভিটির ইতিহাসের একদম শুরুর দিন থেকেই চেষ্টা চলছে এমন বস্তু আবিষ্কার করার, যা এ রকম তাপমাত্রায়ও শূন্য প্রতিরোধক্ষমতায় বিদ্যুৎ বহনে সক্ষম হবে। সে রকম জিনিসের দেখা এখনো মেলেনি।
দক্ষিণ কোরিয়ার একাধিক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা দুটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন, যেখানে তাঁরা একটি কক্ষ-তাপমাত্রা ও পরিবেষ্টিত চাপে সুপারকন্ডাক্টর তৈরি করেছেন বলে দাবি করেছেন। এলকে-৯৯ নামের সুপারকন্ডাক্টিং উপাদান হলো সিসা, অক্সিজেন, সালফার ও ফসফরাসের গুঁড়া যৌগের মিশ্রণ। যে চাপ চেম্বারের প্রয়োজন ছাড়াই ১২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১৬১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের নিচে যেকোনো তাপমাত্রায় অতিপরিবাহী।
বিজ্ঞানীদের মতে, এলকে-৯৯-এ সিসার একটি ভগ্নাংশকে তামার আয়ন দিয়ে প্রতিস্থাপন করে, যাতে উপাদানটির আয়তন সামান্য হ্রাস পায়, ফলে ক্ষুদ্র কাঠামোগত বিকৃতি ঘটে। এ বিকৃতি সুপারকন্ডাক্টিং কোয়ান্টাম কূপ তৈরির দিকে পরিচালিত করে। এই কূপগুলোকে তাঁরা ব্যাখ্যা করেছেন সুপারকন্ডাক্টিভিটি অর্জনের চাবিকাঠি।
এলকে-৯৯ গবেষণাপত্র বেশ কয়েকটি পদার্থবিদ্যা বিভাগ এবং ল্যাবের কাছে পৌঁছেছে। সেখানকার বিজ্ঞানী ও গবেষকেরা জানিয়েছেন, গবেষণাপত্রটি আকর্ষণীয়, যদিও ফলাফলগুলো সম্পূর্ণ বিশ্বাসযোগ্য ছিল না।
অন্য একদল বিজ্ঞানীর মতে, এলকে-৯৯-এর সুপারকন্ডাক্টিভিটি নিশ্চিত করার জন্য দুটি গুরুত্বপূর্ণ ডেটা পয়েন্ট প্রয়োজন।
ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটির আরেক পদার্থবিজ্ঞানী সোভেন ফ্রাইডম্যান সেই মূল্যায়ন ভাগ করে বলেছেন, দক্ষিণ কোরিয়ার কাগজ থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না। ফ্রাইডম্যান আরও বলছেন, যে গবেষণায় চৌম্বকীয় ক্ষেত্রগুলো বহিষ্কারের কারণে মেসনার প্রভাব লেভিটেশন দেখানোর দাবি করা হয়েছে। তা-ও একটি অ-সুপারকন্ডাক্টিং উৎসের কারণে হতে পারে। সূত্র: (মিন্ট)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।