আগামী ১৪ নভেম্বর থেকে সারাদেশে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। ২০২১ সালের শিক্ষার্থীদের এই পরীক্ষায় অংশ নেবে মোট ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন। যা গত বছরের তুলনায় ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন বেশি।
বুধবার (২৭ অক্টোবর) সচিবালয়ে এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষা শুরু সংক্রান্ত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
তিনি জানান, এবার ২৯ হাজার ৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেবে। তার মধ্যে ৯টি সাধারণ বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হলো ১৮ লাখ ৯৯৮ জন। আর তিন লাখ এক হাজার ৮৮৭ জন দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেবে।
তিনি আরও জানান, গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষার্থী বেড়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন, প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ১৫১টি, কেন্দ্র বেড়েছে ১৬৭টি। এবারের পরীক্ষায় বিদেশ থেকে ৮টি কেন্দ্রে ৪২৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষার অংশগ্রহণ করবে।
তিনি বলেন, এবার সংশোধিত ও পুনর্বিন্যাসকৃত সিলেবাসে গ্রুপভিত্তিক তিনটি নৈর্বাচনিক বিষয়ে পরীক্ষা হবে। নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়সমূহ এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সংশ্লিস্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর অনলাইনে বোর্ডে পাঠাবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে এ পরীক্ষা শুরু হয়ে থাকলেও বৈশ্বিক অতিমারি করোনাভাইরাসের কারণে প্রায় দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ বছর যথাসময়ে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমানে করোনাভাইরাসের সংক্রমন সহনীয় হয়ে আসায় পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে অন্তত তিন ফুট দূরত্ব বজায় রেখে বসবেন শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষা শেষের ত্রিশ দিনের মধ্যে ফলাফল প্রকাশিত হবে। পরীক্ষার্থীদের মধ্যকার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এবার বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থীদের একই সময়ে পরীক্ষা গ্রহণ না করে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে পরীক্ষা নেওয়া হবে। পাশপাশি পরীক্ষার সময় ও নম্বর কমিয়ে আনা হয়েছে।
ডা. দীপু মনি বলেন, এবারও পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ত্রিশ মিনিট আগে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। তবে অনিবার্য কারণে কোনো পরীক্ষার্থীকে এর পরে প্রবেশ করতে দিলে তাদের নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময় দেরি হওয়ার কারণ সবকিছু রেজিস্ট্রারে লিখতে হবে। এবারও পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা শিক্ষক ছাড়া অন্য কেউ পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না। সকল বিষয়ে পরীক্ষা না হওয়ার কারণে পরীক্ষার ব্যয় কমে যাওয়ায় পরীক্ষার ফরম পূরণে আদায় করা অর্থের বাকি অংশ ফেরত দেওয়া হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আগের মতোই সকল নিয়ম কানুন থাকবে। এবারও যেন কেউ প্রশ্নপত্র ফাঁস না করতে পারে সেজন্য কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে। পাশাপাশি কোনোভাবে পরীক্ষা নিয়ে কোনো গুজব যেন ছড়াতে না পারে সেদিকেও গোয়েন্দাদের নজরদারি রয়েছে।
এসময় তিনি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে বলেন, সতর্কতা অবলম্বন করার পরও যদি কোনো শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন, তাহলে বাসা কিংবা চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে তার পরীক্ষা নেওয়া হবে। কারণ এবার একটা অস্বাভাবিক ব্যবস্থার মধ্যে পরীক্ষা হচ্ছে।
প্রশ্ন ফাঁসের গুজব বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, যারা গুজবে এবং প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরীক্ষার পুরো সময় কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এবার এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল মিলিয়ে এবার সারাদেশে ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। এদের মধ্যে ১৮ লাখ ৯৯৮ জন, দাখিলে ৩ লাখ ১ হাজার ৮৮৭ জন এবং ভোকেশনালে ১ লাখ ২৪ হাজার ২২৮ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিলো ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন। শিক্ষামন্ত্রী জানান, এবার গত বছরের তুলনায় ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩৪ জন শিক্ষার্থী বেড়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে পরীক্ষা না হওয়ার কারণে। এবার মোট ২৯ হাজার ৩৫ টি প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। আর কেন্দ্র ৩ হাজার ৬৭৯টি।এখানেও কেন্দ্রের সংখ্যা বেড়েছে ১৬৭টি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।