জুমবাংলা ডেস্ক : আকিজ বশির গ্রুপের সৌজন্যে আয়োজিত এসডিজি ব্র্যান্ড চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ডসের দ্বিতীয় সংস্করণে ৩৯টি টেকসই উদ্যোগকে সম্মানিত করা হয়েছে। গত ১০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর একটি হোটেলে ইনটেলিয়ার এর সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৬টি বিজয়ী এবং ২৩টি অনারেবল মেনশন প্রাপ্ত ব্র্যান্ডকে এই সম্মাননা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের উদ্যোগে আয়োজিত এই সম্মাননার মূল লক্ষ্য টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে স্বীকৃতি প্রদান করা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, এই সম্মাননাগুলো কেবল অর্জনের স্বীকৃতি নয়, বরং সহযোগিতা ও প্রতিশ্রুতির বাস্তব উদাহরণ। এসডিজি অর্জনে আমাদের সবাইকে আরও সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
এই বছর নয়টি ক্যাটাগরিতে সম্মাননাটি প্রদান করা হয়। ১২ মে থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত চলমান রেজিস্ট্রেশন সময়কালে মোট ৩৫৭টি মনোনয়ন জমা পড়ে, যেখান থেকে কঠোর মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিজয়ীদের নির্বাচন করা হয়। ৯-১৩ জুলাই পর্যন্ত ৮টি গ্র্যান্ডজুরি প্যানেলে ৩৭ জন ক্যাটেগরি বিশেষজ্ঞ বিজয়ী ব্র্যান্ডগুলো বাছাই করেন।
জুরিদের মধ্যে ছিলেন মো. রুবাইয়াত সারোয়ার, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ইনোভেশন কনসালটিং প্রাইভেট লিমিটেড; তৌফিকুজ্জামান চৌধুরী, পিএমপি, জেনারেল ম্যানেজার, সাসটেইনেবিলিটি, রবি আজিয়াটা লিমিটেড; নাজরা সাবেত, সিনিয়র ডিরেক্টর এন্ড সিইও, ফ্রেন্ডশিপ এনজিও; ড. রুবিনা হুসাইন, প্রেসিডেন্ট, সিড ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ; ইঞ্জিনিয়ার নাজনীন আক্তার, ডিরেক্টর, সোলারিক গ্রুপ; দিলরুবা এস খান, গ্রুপ হিউম্যান রিসোর্সেস ডিরেক্টর, আকিজ বশির গ্রুপ; আসিফ ইকবাল, গ্রুপ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, হামিদ গ্রুপ; সাইফ ময়নুল ইসলাম, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) প্রমুখ।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর শরিফুল ইসলাম বলেন, নতুন বাংলাদেশের উত্থানে ব্র্যান্ডগুলোর টেকসইতা চর্চার গুরুত্ব বর্তমানে অপরিসীম। ব্র্যান্ডগুলোর ক্ষমতা রয়েছে সমাজ ও পরিবেশের বৃহত্তর স্বার্থে মানুষের আচরণ প্রভাবিত করার, উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করার এবং শিল্পখাতগুলো রূপান্তর করার। তাদের মূল কার্যকলাপে টেকসইতা অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো কেবল একটি স্থিতিশীল অর্থনীতি গড়ে তুলছে না, বরং আগামী প্রজন্মের জন্য একটি আরও ন্যায় সঙ্গত, সমতা পূর্ণ এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করছে।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের পূর্বে আকিজ বশির গ্রুপের সৌজন্যে এবং ইনটেলিয়ার ও দ্য ডেইলি স্টারের সহযোগিতায় আয়োজিত হয় সাসটেইনাবিলিটি সামিট ২০২৪। সামিটের আলোচনায় ছিল ১টি কিনোট সেশন, ২টি প্যানেল ডিসকাশন, ৩টি ইনসাইট সেশন এবং ১টি কেস স্টাডি। এতে বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞরা, তাদের অভিজ্ঞতা ও ভাবনা শেয়ার করেছেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে আমাদের সম্মিলিতভাবে চর্চা করা ইতিবাচক পরিবর্তনের উপর। টেকসইতা এখন আর শুধু একটি ধারণা নয়, এটি প্রতিটি ব্র্যান্ড ও প্রতিষ্ঠানের ডিএনএর অংশ হওয়া উচিত।আমরা এখন পরিবর্তনের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের আজকের সিদ্ধান্তই পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমাদের ভূমিকাকে সুদৃঢ় করবে।
সম্মেলনটি শুরু হয় ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি জাভেদ আখতারের কিনোট সেশনের মাধ্যমে। তিনি বাংলাদেশের ব্যবসায় টেকসইতা এবং এর অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা বিষয়ে তার মতামত পরিবেশন করেন। এরপর আকিজ বশির গ্রুপের চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন আহমেদ প্রতিষ্ঠানটির টেকসই চর্চা নিয়ে একটি কেসস্টাডি উপস্থাপন করেন।
আয়োজনটির প্রথম প্যানেল আলোচনার শিরোনাম ছিল, “ভবিষ্যতের পৃথিবীর জন্য কেন বাংলাদেশি ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলোকে টেকসই হতে হবে,” যা পরিচালনা করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং এশিয়া মার্কেটিং ফেডারেশনের সভাপতি ও বিবিএফ একাডেমির চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ড. এ. কে. এনামুল হক, ডিন, ফ্যাকাল্টি অব বিজনেজ এন্ড ইকোনোমিকস, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি; সেলিম আর এফ হুসেইন, সিইও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি; ড. মেলিটা মেহজাবিন, প্রফেসার , ইন্সটিটিউট অব বিজনেজ এডমিনিস্ট্রেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; মো. সবুর খান, চেয়ারম্যান, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ); সায়েফ নাসির, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, সোশ্যাল মার্কেটিং এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড।
এছাড়াও তিনটি ইনসাইট সেশনে আলোচিত হয় আধুনিক ও টেকসই অর্থায়ন, ব্যবসায়িক খাতে নবয়ানযোগ্য জ্বালানি ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক নীতিমালা নিয়ে। সেশনগুলো পরিচালনা করেন লোপা রহমান, ইএসজি অফিসার, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কোরপোরেশন; শেহজাদ মুনিম, এডভাইজর এন্ড ফরমার প্রেসিডেন্ট, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি; এবং সাইফ ইসলাম, সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার, ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন।
সম্মেলনটির দ্বিতীয় প্যানেল আলোচনা বা সিইও প্যানেলে নেতৃত্বের ভূমিকা এবং টেকসই উন্নয়নকে ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যের সাথে সামঞ্জস্য স্থাপন করার বিষয়ে আলোচনা হয়। আলোচনাটি পরিচালনা করেন পরিবর্তনকামী ব্যবসায়িক নেতা আসিফ ইকবাল। এছাড়াও আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সাব্বির হাসান নাসির, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, এসিআই লজিস্টিকস লিমিটেড (স্বপ্ন); রূপালী চৌধুরী, ম্যানেজিং ডিরেক্টর, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড; আহসান খান চৌধুরী, চেয়ারম্যান এন্ড সিইও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ; কেএএম মাজেদুর রহমান, গ্রুপ সিইও, একে খানএন্ড কোম্পানি লিমিটেড; রুবায়েত সারওয়ার, ম্যানেজিংডিরেক্টর, ইনোভেশন কনসাল্টিং প্রাইভেট লিমিটেড, এবং সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর এন্ড সিইও, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি।
আয়োজনটির সহায়তায় আরো ছিলো ইন্টারন্যাশনাল এডভারটাইজিং এসোসিয়েশন বাংলাদেশ, এশিয়া মার্কেটিং ফেডারেশন (এএমএফ) এবং মার্কেটিং সোসাইটি অব বাংলাদেশ। সাপোর্টেড বাই পার্টনার– ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউট; টেকনোলজি পার্টনার– আমরা টেকনোলজিস লিমিটেড; হসপিটালিটি পার্টনার– লা মেরিডিয়ান ঢাকা; পিআর পার্টনার– ব্যাকপেজ পিআর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।