প্রশ্ন-১ : গত এক বছরে ফ্রিজের ব্যবহার কেমন বেড়েছে? ব্যবহার বৃদ্ধির পেছনে কী কী বিষয় কাজ করেছে?
তোফায়েল আহমেদ : ২০২২-২৩ অর্থবছরের তুলনায় ফ্রিজের ব্যবহার চলতি অর্থবছর (২৩-২৪) প্রায় ২০-২৫% শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
ফ্রিজ এক সময় বিলাসী পণ্য হিসাবে বিবেচনা করলেও এখন আর বিলাসী পণ্য নয়। প্রত্যেকের ঘরে ফ্রিজ এখন দৈনন্দিন ব্যবহার্য অতি প্রয়োজনীয় পণ্য হয়ে উঠেছে। এক সময় শুধু উচ্চ এবং উচ্চ-মধ্যবিত্তদের ঘরে ফ্রিজ ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন সব শ্রেণি-পেশা ও আয়ের লোকদের ঘরে ফ্রিজ ব্যবহৃত হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে ওয়ালটনের মতো দেশীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন শিল্পের বিকাশ। একদিকে দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, বিদ্যুতায়ন এলাকার সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি ফ্রিজের দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালের মধ্যে চলে এসেছে।
প্রশ্ন-২ : আপনার কোম্পানির ফ্রিজের কী কী বৈশিষ্ট্য এবং সুযোগ-সুবিধা রয়েছে?
তোফায়েল আহমেদ : ওয়ালটন ফ্রিজের প্রধান বৈশিষ্ট্য বা বিশেষ দিকগুলো মধ্যে রয়েছে-উচ্চ গুণগতমান, বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের ব্যবহার, টেকসই ও দীর্ঘস্থায়িত্ব।
ক্রেতাদের পছন্দ অনুযায়ী ডিজাইন ও ফিচারের ফ্রিজ তৈরি করে দিতে সক্ষম ওয়ালটনের রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন টিম। এদিক থেকেই বিশ্বের অন্যান্য ব্র্যান্ডের চেয়ে আলাদা ওয়ালটন ফ্রিজ। প্রিমিয়াম ক্যাটাগরির ফ্রিজে বর্তমানে বিশ্বসেরাদের মধ্যে অন্যতম ওয়ালটন।
ওয়ালটনের জায়ান্টটেক সিরিজের ৬৬০ লিটারের জিটি প্রো ম্যাক্স, ৬৪৬ লিটারের জিটি প্রো এবং ৬১৯ লিটারের জিটি মডেলের রেফ্রিজারেটর স্মার্টফোনে ‘ওয়ালটন স্মার্ট অ্যাপ্লায়েন্স’ অ্যাপসের মাধ্যমে বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে এসব ফ্রিজ পরিচালনা করার পাশাপাশি অনলাইন শপিং ও ইউটিউবে কুকিং রেসিপি ব্রাউজ করার সুবিধা রয়েছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও সর্বাধিক ফিচারসমৃদ্ধ ওয়ালটনের এসব ফ্রিজ বাড়িয়ে দেয় ঘরের আভিজাত্য। নতুন এসব মডেলের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার কম্পার্টমেন্টের জন্য রয়েছে টারবো ও ইকো ফিচারসমৃদ্ধ ডুয়ো কুলিং সেটিংস। এসব ফ্রিজের এমএসও (ম্যাট্রিক্স স্পিড অপটিমাইজেশন) ইনভার্টার টেকনোলজি বাইরের তাপমাত্রা অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে সবচেয়ে কম বিদ্যুৎ খরচে ফ্রিজের অভ্যন্তরীণ সর্বোচ্চ কুলিং পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। বিশ্বের সর্বোচ্চ কনভার্টিবল মুডসমৃদ্ধ ওয়ালটনের জায়ান্টটেক রেফ্রিজারেটরের ফ্রিজ ও ফ্রিজার কম্পার্টমেন্টের কুলিং পারফরম্যান্স গ্রাহক তার পছন্দমতো সেট করতে পারেন। এতে বিদ্যুৎ খরচ অনেক কম হয়। এসব ফ্রিজ নিশ্চিত করে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ামুক্ত স্বাস্থ্যকর ফ্রেশ খাবার।
প্রশ্ন-৩ : কিস্তিতে আপনার কোম্পানির ফ্রিজ ক্রয়ের কোনো সুবিধা আছে কি?
তোফায়েল আহমেদ : সারা দেশে সব ওয়ালটন প্লাজায় কিস্তিতে পণ্য কেনার সুবিধা রয়েছে। মাত্র ৩০ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে জিরো ইন্টারেস্টে ৬ মাসের কিস্তি সুবিধার পাশাপাশি সর্বোচ্চ ৩৬ মাসের কিস্তি সুবিধায় কেনা যাচ্ছে ওয়ালটন ফ্রিজ। এছাড়া, বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমেও জিরো ইন্টারেস্টে কিস্তিতে ওয়ালটন ফ্রিজ ক্রয়ের সুযোগ রয়েছে।
প্রশ্ন-৪ : আমদানি বিকল্প শিল্প হিসাবে স্থানীয় ফ্রিজ প্রস্তুতকারকরা কেমন করছে? পণ্যের মান বৃদ্ধি নিয়ে কী ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে?
তোফায়েল আহমেদ : দেড় দশক আগেও ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রি পুরোপুরি আমদানিনির্ভর ছিল। বাংলাদেশে ওয়ালটনই প্রথম ফ্রিজ ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন শিল্প স্থাপন করে। তারপর দ্রুত পালটে যায় স্থানীয় এ খাতের আমদানিনির্ভরতা। ওয়ালটনের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৫টির মতো প্রতিষ্ঠান দেশে ফ্রিজ উৎপাদন শিল্প গড়ে তুলেছে। ফলে, এ খাতে বাংলাদেশ এখন বহুদূর এগিয়ে গেছে।
গ্রাহকের হাতে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারসমৃদ্ধ নতুন উদ্ভাবিত পণ্য তুলে দিতে বাংলাদেশে দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন (আরঅ্যান্ডআই) সেন্টার ও প্রকৌশলী টিম গঠনে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে ওয়ালটন। সামর্থ্যরে সবটুকু দিয়ে প্রতিনিয়ত ব্যাপক গবেষণা চালাচ্ছে ওয়ালটনের গবেষণা ও উদ্ভাবন (আরঅ্যান্ডআই) টিমের প্রকৌশলীরা। ওয়ালটনের শক্তিশালী আরঅ্যান্ডআই এর দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীসহ প্রোডাকশন, কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টসহ সব বিভাগের সদস্যরা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচার নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করছেন। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমরা বিশ্বের সর্বাধুনিক ডিজাইন, প্রযুক্তি ও ফিচারের রেফ্রিজারেটর গ্রাহকদের হাতে তুলে দিতে সক্ষম হচ্ছি। ইতোমধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ফোর-ডোর ফ্রিজ উৎপাদনকারী দেশের মর্যাদা লাভ করেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বিশ্বের প্রথম 8in1 কনভার্টিবল সাইড বাই সাইড রেফ্রিজারেটর উৎপাদন ও বাজারজাতকারী দেশ হিসাবে বাংলাদেশের আবির্ভাব ঘটেছে। এর মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক ফ্রিজ উৎপাদনকারী দেশে রূপান্তর ঘটেছে বাংলাদেশের। আমাদের এ ধরনের উদ্ভাবনী প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমাদের আপকামিং প্রোডাক্ট লাইনে রয়েছে প্রিমিয়াম ক্যাটাগরির নতুন নতুন মডেলের ফ্রিজ।
প্রশ্ন-৫ : ঈদের মৌসুমে ফ্রিজ ও ফ্রিজারের চাহিদা কেমন থাকে? আপনাদের প্রস্তুতি কেমন এবং প্রত্যাশা কী?
তোফায়েল আহমেদ : ঈদের মৌসুমে দেশে প্রতি বছরই রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, ওয়াশিং মেশিন, এসি, টিভিসহ বেশকিছু হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সের চাহিদা বাড়ে। বাংলাদেশে ঈদের সময়টাকে ফ্রিজ বিক্রির প্রধান মৌসুম হিসাবে বিবেচনা করা হয়। সারা বছরের ফ্রিজ বিক্রির প্রায় ৭০ ভাগ ফ্রিজ বিক্রি হয় ঈুদল ফিতর ও ঈদুল আজহার সময়ে।
প্রতি বছরের মতো এ বছরও ঈদের মৌসুমে ফ্রিজের সিংহভাগ চাহিদা পূরণ ও বিক্রিতে শীর্ষস্থান বজায় রাখতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে ওয়ালটন। ঈদ বাজারে সব শ্রেণি, পেশা ও আয়ের ক্রেতাদের জন্য ওয়ালটনের রয়েছে ৩০০টিরও বেশি ডিজাইন ও মডেলের রেফ্রিজারেটর এবং ফ্রিজার।
ঈদকে সামনে রেখে ১ মার্চ থেকে সারা দেশে শুরু করা হয়েছে ডিজিটাল ক্যাম্পেইন সিজন-২০। ঈদ উপলক্ষ্যে ক্রেতাদের জন্য বিশেষ উপহার হিসাবে সিজন-২০ এ ‘ননস্টপ মিলিয়নিয়ার’ সুবিধা দিচ্ছে ওয়ালটন। সিজন-২০ চলাকালীন দেশের যে কোনো ওয়ালটন প্লাজা, পরিবেশক শোরুম ও অনলাইন সেলস প্ল্যাটফর্ম ‘ই-প্লাজা’ থেকে ফ্রিজ, এসি, টিভি, ওয়াশিং মেশিন এবং ফ্যান কিনে আবারও মিলিয়নিয়ার হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন ক্রেতারা।
এছাড়াও রয়েছে কোটি কোটি টাকার নিশ্চিত উপহার। চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ‘ননস্টপ মিলিয়নিয়ার’ হওয়ার এ সুযোগ পাবেন ক্রেতারা।
ডিজিটাল ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে এর আগেও ওয়ালটন পণ্য কিনে মিলিয়নিয়ার হয়েছিলেন ৩০ জন ক্রেতা। সিজন-২০ এ ইতোমধ্যে ফ্রিজ কিনে সিলেটের ও কুমিল্লার দুজন ক্রেতা মিলিয়নিয়ার হয়েছেন।
প্রশ্ন-৬ : ফ্রিজের বর্তমান দরদাম, কিস্তিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে পাঠকদের সংক্ষেপে কিছু তথ্য দিন।
তোফায়েল আহমেদ : বর্তমানে বাজারে ওয়ালটনের বিভিন্ন ডিজাইনের ৩ শতাধিক মডেলের ফ্রিজ রয়েছে। এসব মডেলের সহস্রাধিক কালারের ফ্রিজ রয়েছে। এসব ফ্রিজের দাম ১৫ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার মধ্যে। আছে জিরো ইন্টারেস্টে ৬ মাসের সহজ কিস্তিসহ সর্বোচ্চ ৩৬ মাসের কিস্তি সুবিধা।
গ্রাহকের পছন্দমতো রং ও ডিজাইনে ফ্রিজ তৈরি করে দিতে ‘ড্রিমার্স ক্যানভাস’ প্রোজেক্ট চালু করেছে ওয়ালটন। বাংলাদেশে ওয়ালটনই প্রথম গ্রাহকদের কাস্টমাইজড ফ্রিজের এ সুবিধা দিচ্ছে। স্বপ্নবাজ গ্রাহকরা নিজের পছন্দমতো রং ও ডিজাইন দিয়ে ঘরে বসেই ওয়ালটন ফ্রিজ অর্ডার করতে পারছেন। গ্রাহকের দেওয়া কাঙ্ক্ষিত ডিজাইনের ফ্রিজ অল্প সময়ের মধ্যে তৈরি করে তাদের ঘরে পৌঁছে দিচ্ছে ওয়ালটন।
প্রশ্ন-৭ : আপনারা কী ধরনের বিক্রয়-পরবর্তী সেবা দিয়ে থাকেন? সে সম্পর্কে জানান।
তোফায়েল আহমেদ : ক্রেতাদের হাতে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, ফিচারসমৃদ্ধ উচ্চ গুণগতমানের ফ্রিজ তুলে দেওয়ার পাশাপাশি সর্বোচ্চ গ্রাহক সুবিধা এবং সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা প্রদানে বদ্ধপরিকর ওয়ালটন। ওয়ালটন ফ্রিজের আন্তর্জাতিকমানের আত্মবিশ্বাসে ক্রেতাদের ১ বছরের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি, ১২ বছরের কম্প্রেসার গ্যারান্টি এবং ৫ বছরের বিক্রয়োত্তর সেবা দিচ্ছে ওয়ালটন। দেশের প্রথম আইএসও সার্টিফাইড ও সর্ববৃহৎ সার্ভিস নেটওয়ার্কের আওতায় দেশব্যাপী বিস্তৃত ৮২টি সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে গ্রাহকদের দ্রুত ও সর্বোত্তম বিক্রয়োত্তর সেবা পৌঁছে দিচ্ছে ওয়ালটন। ঈদের সময় ক্রেতাদের নিশ্চিন্ত করতে সর্বোত্তম সার্ভিস নিশ্চিতে নিরলস কাজ করছে অভিজ্ঞ সার্ভিস টিম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।