জুমবাংলা ডেস্ক : রাজবাড়ী সদর থানার কক্ষে ঢুকে ওসি ইফতেখারুল আলম প্রধানকে রক্তাক্ত জখম করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তিন যুবকের বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
ওই ঘটনায় সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজবাড়ী সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নীহারিকা সরকার বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এর আগে রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ওসির নিজ অফিস কক্ষে মারধরের ঘটনা ঘটে।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, রাজবাড়ী সদর থানায় ঢুকে ওসি ইফতেখারুল আলম প্রধানকে বৈদ্যুতিক শকার মেশিন দিয়ে শক দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে কয়েকজন যুবক।
এদিকে মামলা দায়েরের পর ওই তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেপ্তাররা হলেন, রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের ডিগ্রীচর চাঁদপুর গ্রামের আজাদ শেখের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৪), একই গ্রামের আজিজ শেখের ছেলে লিটন শেখ (৪৫) ও শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের মোঃ ইউসুফ আলীর ছেলে আক্কাস আলী মিয়া (৪৩)। এদের মধ্যে আক্কাস আলী শহীদ ওহাবপুর ইউনিয়নের রূপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
পুলিশ জানায়, অফিস কক্ষে এসে ওসিকে মারধর ও হত্যাচেষ্টা, বিরল ঘটনা। এমন ঘটনা রাজবাড়ীতে এর আগে কখনোই ঘটেনি। এই দুর্ঘটনায় পুলিশের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ জনগণের বন্ধু। পুলিশ সবসময় মানুষের কল্যাণে কাজ করে থাকে। হঠাৎ করেই কেন এই ঘটনা, সেটি খুব দ্রুতই তদন্ত করে জড়িতদের কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার ওসি ইফতেখারুল আলম প্রধান জানান, রবিবার বিকেলের দিকে শফিকুল ইসলাম নামে এক যুবক থানা প্রাঙ্গণে এলোমেলোভাবে ঘোরাফেরা করছিল। ওই সময় থানা পুলিশের সদস্যরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার অফিস কক্ষে নিয়ে আসে। সে সময় ওই যুবকের শরীর তল্লাশি করে বৈদ্যুতিক শক দেওয়ার একটি মেশিন উদ্ধার করা হয়। এতে যুবক ক্ষিপ্ত হয় এবং হঠাৎ করেই ওই মেশিন দিয়ে তার ওপর আক্রমণ চালায়। এতে তার মুখের খানিকটা অংশ রক্তাক্ত জখম হয়। পরে পুলিশ শফিকুল ও তার অপর সহযোগী আক্কাসসহ অপর এক ব্যক্তিকে আটক করে। আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি আহতাবস্থায় প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ জানান, রবিবার বিকেলে লিটন থানায় একটি জিডি করতে যান। তার সঙ্গে থানায় যান শফিকুল। এ সময় লিটন ডিউটি অফিসারের কাছে গিয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে জিডি করতে চান। ৯ জনের বিরুদ্ধে জিডির বিষয়টি ডিউটি অফিসারের সন্দেহ হলে তিনি ওসি ইফতেখারুল আলম প্রধানকে জানান। তখন ওসি লিটন ও শফিকুলকে ডেকে তার রুমে নেন। শফিকুল ওসির রুমে ঢুকে আক্কাসকে ফোন করে লাইনে রেখে ফোন পকেটে ঢুকান।
‘এ সময় ওসির সন্দেহ হলে ওসি শফিকুলের পকেট চেক করতে যান। তখন শফিকুল তার পকেটে থাকা ৫ হাজার কিলোভোল্টের বৈদ্যুতিক শকার মেশিন বের করে ওসির মুখে শক দেন। এতে ওসির মুখ কেটে যায়। এ সময় শফিকুল ও লিটন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের আটক করে। পরে তাদের সহযোগী আক্কাসকেও আটক করা হয়। সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও ওসিকে হত্যাচেষ্টা এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। কেন এই ঘটনা সেটি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। পুলিশের তদন্ত চলছে এবং অবৈধ বৈদ্যুতিক শকার কীভাবে শফিকুল ইসলাম হাতে পেল, সেটিও খতিয়ে দেখার কাজ করছে পুলিশ।’
পুলিশ সুপার আরও জানান, আহত ওসির মুখে একটি সেলাই লেগেছে। এ ঘটনায় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নীহারিকা সরকার বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় সরকারি কাজে বাধা ও হত্যাচেষ্টা মামলা করেছেন। মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশ আটক তিন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।