জুমবাংলা ডেস্ক : দীর্ঘায়ু, বার্ধক্যহীনতা এবং অমরত্ব হল এমন কিছু ধারণা যেগুলো মানুষের মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। যদিও এখনও পর্যন্ত, এমন কোন উত্তর পাওয়া যায়নি যা অমরত্বের গোপন রহস্য উন্মোচন করতে পারে। আপাতত এই প্রশ্নের উত্তরে জেলিফিশের দিকে তাকিয়ে বিজ্ঞানীরা। স্প্যানিশ গবেষকরা টারিটোপসিস ডোরনি নামের প্রজাতির এক জেলিফিশকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চর্চা করছেন ।
এদের ‘অমর জেলিফিশ’ বলেই চেনে সবাই। স্পেনের গবেষকরা এই মাছের জিনোম বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। যা এর মৃত্যু এড়াতে এবং দীর্ঘায়ু বাড়াতে অবদান রাখে।
ভূমধ্যসাগর ও জাপানের সমুদ্রে দেখা যায় টারিটোপসিস ডোরনি নামের জেলিফিস।
জাপানের কিয়োতো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা খোঁজ করেছেন এই জেলিফিসের অমরত্বের রহস্য।
তারা বলেন, কখনই বার্ধক্য আসেনা ব্যাকওয়ার্ড এজিং জেলিফিশের। বয়সের ভারে এদের মৃত্যু হয়না।
বয়সকে লুকিয়ে ফের যৌবনে ফিরে যাওয়ার অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে এই প্রাণীটির।
বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের এক দল গবেষক।
তারা এই জেলিফিশদের জীবনচক্রের ওপর নজর রেখে দেখেছেন, কখনও এসব জেলিফিশের দেহের কোনো অংশে আঘাত লাগলে বা অসুস্থ হয়ে পড়লে সঙ্গেসঙ্গে এরা ‘পলিপ দশা’ তে চলে যায়।
পলিপের আকারে দেহের চারপাশে মিউকাস মেমব্রেন তৈরি করে তারা।
এর পর ক্ষতিগ্রস্থ অংশ সেরে উঠলেই পলিপ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসে তারা।
তখন বিজ্ঞানীরা এটা দেখে অবাক হন যে, পলিপ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসা জেলিফিশগুলোর দেহের প্রায় সব কোষই নতুন ও সজীব।
আর এভাবেই নিজেদের বয়স কমিয়ে যৌবনে চলে আসে তারা।
সহজ ভাষায় বললে এই জিনোম যেন ওই প্রজাতির জীবনধারণের মূল রহস্য।
Oviedo বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর কার্লোস লোপেজ-ওটিনের নেতৃত্বে, দলটি মানুষের বার্ধক্যের নতুন সূত্র খুঁজে পাওয়ার আশায় জেলিফিশের জেনেটিক ক্রম ম্যাপ করেছে। যে কোনও প্রজাতির জীবের বংশগতির সব তথ্য জমা থাকে জিনে। বংশগত ভাবে জিনের যে ধারাবাহিক তথ্য তাকে একত্রে জিনোম বলা হয়।
গবেষণাটি প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সে প্রকাশিত হয়েছে। তারা টারিটোপসিস ডোরনি, এর বোন টারিটোপসিস রুব্রার সাথে একত্রে ক্রমবর্ধমান জিন সনাক্ত করতে বা উভয়ের মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে তা জানতে পেরেছেন । টারিটোপসিস রুব্রা হল একটি ঘনিষ্ঠ জেনেটিক কাজিন যার যৌন প্রজননের পরে পুনরুজ্জীবিত হওয়ার ক্ষমতা নেই। তারা উদ্ঘাটন করেছে যে T. dohrnii এর জিনোমের ভিন্নতা রয়েছে যা এটিকে ডিএনএ অনুলিপি এবং মেরামত করতে আরও ভাল করে তুলতে পারে। সর্বোচ্চ কত বছর বাঁচতে পারে মানুষ?
গত বছর ‘নেচার কমিউনিকেশনস’ জার্নালে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে গাণিতিক মডেলিং পদ্ধতির সাহায্যে মানুষের সর্বোচ্চ আয়ু কত হতে পারে তা নির্ণয় করেছিলেন গবেষকরা। আর সেই হিসেব বলছে, ১২০ থেকে ১৫০ বছরের বেশি আয়ু পাওয়া সম্ভব নয় মানুষের। কিন্তু মানুষ কিংবা জীবজগতের সকলের ক্ষেত্রে যে নিয়ম খাটে তা টারিটোপসিস ডোরনিদের ক্ষেত্রে খাটে না কেন? এই জেলিফিশদের জীবন মানুষকে বিস্মিত করত। কিন্তু এই রহস্যের কুলকিনারা করা যায়নি। এবার স্প্যানিশ গবেষকরা টারিটোপসিস ডোরনির ‘বোন’ টারিটোপসিস রুব্রার জিনগুলিও খতিয়ে দেখে বিষয়টি বিস্তারিত বুঝতে চেয়েছেন। টারিটোপসিস ডোরনির জিনোমে থাকা টেলোমের মানুষের মতো বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছোট হয়ে যায় না। এর মধ্যেই কি লুকিয়ে রয়েছে আসল রহস্য? আপাতত সেটাই বোঝার চেষ্টা করছেন গবেষকরা। তবে আস্তুরিয়ান ইউনিভার্সিটির বায়োকেমিস্ট্রি এবং মলিকুলার বায়োলজির অধ্যাপক কার্লোস লোপেজ-ওটিন বলেছেন, ” এখনই মানুষের অমরত্বের স্বপ্ন অর্জনের দিকে না ছোটাই ভালো। ”
সূত্র : ইন্ডিয়া টুডে
৩০৮ জন মহিলার মধ্যে এই ৬ জন নায়িকাও সঞ্জয় দত্তের সাথে বাস্তবে শুয়ে ছিলেন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।