জাহিদুল হক: গত ২৯ জুন ঢাকার সদরঘাটের কাছে ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় মর্নিং বার্ড নামে একটি ছোট লঞ্চ ডুবে যায়। এতে ৩৪ জন মারা যান। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সেদিন একে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ বলেছিলেন।
মঙ্গলবারও তিনি তার কথার পুনরাবৃত্তি করেন। দুর্ঘটনার পর নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। মঙ্গলবার তাদের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এই প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমি বলেছিলাম এটি হত্যাকাণ্ড এবং এখনও দেখলে আবারও বলবো হত্যাকাণ্ড। যেহেতু অবহেলাজনিত কারণে দুর্ঘটনার অভিযোগ এনে একটি মামলা করা হয়েছে, তদন্তে যদি হত্যাকাণ্ড প্রমাণিত হয়, তাহলে সেটা অবশ্যই ৩০২ ধারায় (হত্যা মামলা) আসবে।”
এই বক্তব্যের মধ্য় দিয়ে দুর্ঘটনার জন্য দায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে প্রতিমন্ত্রীর আগ্রহ ফুটে উঠেছে। এমন শাস্তির ব্যবস্থা করে তিনি হয়ত অন্য় লঞ্চ মালিক, চালক ও সংশ্লিষ্টদের একটি বার্তা দিতে চেয়েছেন।
সরকারি সূত্রের উল্লেখ করে দৈনিক যুগান্তর জানাচ্ছে, ১৯৯১ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত লঞ্চ দুর্ঘটনায় তিন হাজার ৬৫৪ জন মারা গেছেন।
এসব দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারায় নিয়মিত দুর্ঘটনা ঘটছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনা তদন্ত ও মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে মালিক ও শ্রমিক পক্ষের চাপ থাকে। ফলে দায়ীদের বেশিরভাগ পার পেয়ে যান।
নৌচলাচল আইন তৈরিতেও এমন চাপ দেখা যাচ্ছে। ২০১৭ সালে প্রণীত এই আইনের খসড়ায় নৌযান দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হলে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু মালিক-শ্রমিকদের চাপে শাস্তির মেয়াদ কমিয়ে পাঁচ বছর ও জরিমানা তিন লাখ টাকা করা হচ্ছে বলে জানাচ্ছে দৈনিক যুগান্তর।
এই খবর যদি সত্যি হয়, তাহলে মাননীয় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীকে আমরা বলতে চাই, আইন তৈরিতে যদি মালিক-শ্রমিকদের চাপ আপনি মেনে নেন, তাহলে ভবিষ্যতে সব বিষয়েই আপনাকে আপোস করতে হবে। এবং তখন দুর্ঘটনায় প্রাণহানির জন্য আপনিও দায়ী থাকবেন। সূত্র: ডয়চে ভেলে
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।