আজকের বিশ্বে যেখানে সংঘাত, বিদ্বেষ ও যুদ্ধের মেঘে বাসা বেঁধেছে, সেই প্রেক্ষিতে একজন সংগীত শিল্পীর বক্তব্য আমাদের হৃদয়কে স্পর্শ করে। কবীর সুমন, একজন বিশিষ্ট ভারতীয় সংগীত শিল্পী, সম্প্রতি পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত-পাকিস্তানের পাল্টাপাল্টি হামলার বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। তাঁর কথা, যুদ্ধের পরিবর্তে শান্তির পথ বেছে নেওয়ার আহ্বান, যেন মানবজাতির বিরুদ্ধে চলমান অমানবিকতার এক শক্তিশালী প্রতিবাদের আওয়াজ।
যুদ্ধবিরোধী অবস্থান ও সুমনের চিন্তার গভীরতা
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনা নতুন কিছু নয়। চলতি মাসের ৭ তারিখে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণাধীন কাশ্মীরের ৯টি স্থানে হামলা চালানোর পর এই সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করে। بھارت এই অভিযানকে নাম দিয়েছে ‘অপারেশ সিঁদুর’। সুমন এই অভিযানের পরিসর নিয়ে জানতে পেরে বলেন, “আমি যুদ্ধের বিরুদ্ধে। যুদ্ধের ফলে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ প্রান হারাচ্ছে।” তাঁর এই বক্তব্যে প্রতিফলিত হয় এক গভীর মানবিকতা।
এখনো পর্যন্ত এই সংঘাতের জেরে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, এবং এ সংখ্যা দিন দিন বাড়তে পারে। সুমন জানান, “আমি যুদ্ধের বিরুদ্ধে এবং আমি এটি সন্ত্রাসবাদের প্রতীক হিসেবে দেখি। এই সন্ত্রাস জীবনের জন্য বিপজ্জনক।” তিনি যুদ্ধের বিরুদ্ধে গান লিখেছেন, যা দেশের মানুষের মধ্যে শান্তির বার্তা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করেছে।
দেশভাগ ও মানবিক প্রেমের খোঁজে কবীর সুমন
সুমন নিজের দেশের ভাগ হয়ে যাওয়ার ইতিহাস নিয়ে ভেবেছেন, “এই দেশ যখন ভাগ হয়েছিল, আমার অনুমতি নিয়েছিল কেউ?” এই প্রশ্নে তিনি দেশপ্রেমের ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। “বিভাজনের সময় দেশের নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জনগণের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন অনুভূত হয়নি,” বলেন তিনি। দেশভাগের এক গভীর শোক ও ক্ষোভ সুমনের কথায় উঠে আসে।
তিনি মানুষের জন্য প্রেম এবং মানবিক ভালোবাসার ধারণাটিকে আরও মূল্যবান মনে করেন। তাঁর মতে, “দেশপ্রেমের নামে যুদ্ধ হওয়া অযৌক্তিক। যারা গাছের, প্রাণীর ও পরিবেশের প্রতি যত্নশীল নন, তারা প্রকৃত দেশপ্রেমিক হতে পারেন না।” সুমনের বক্তব্যে নিহিত রয়েছে এক মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা সবসময় শান্তির পক্ষে কাজ করে।
দেশপ্রেম, ধর্ম ও যুদ্ধের বিপদ
সুমন দেশের ভিতরে ঘুর্ণনশীল রাজনৈতিক পরিবেশের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “যে ধর্মের নামে যুদ্ধ হয়, আমি সেই ধর্মের বিরুদ্ধে।” তিনি ধর্মীয় বিদ্বেষ ও বিভেদকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। বিশেষ করে, ধর্মকে ব্যবহার করে যে যুদ্ধগুলো ঘটে, তাই তাঁর প্রেরণার উৎস।
“আমি সম্পূর্ণরূপে এই ‘দেশপ্রেমের’ বিরুদ্ধে এবং এই যুদ্ধবিরোধী অবস্থানে,” বলেন সুমন। তাঁর বক্তব্যের এই অংশে ভারতীয় গান ও সংস্কৃতির চরিত্রের অপমান এবং যুদ্ধের ধ্বংসাত্মক প্রভাবের ইতিবাচক উল্লেখ উপস্থিত রয়েছে।
সংশ্লিষ্টতা ও পরবর্তী পদক্ষেপের গুরুত্ব
এই অবস্থানে, কিছু প্রশ্ন ওঠে। কীভাবে শিল্পীরা এই যুদ্ধের নিন্দা জানাতে পারেন? এবং আমাদের কি করা উচিত যুদ্ধ-নির্ভর রাজনীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াতে? সুমনের বক্তব্য আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, একটি জাতি তাদের শিল্পীদের কণ্ঠস্বর শুনলে যে পরিবর্তন আসতে পারে, সেই পরিবর্তনের জন্য আমাদের সকলকে সোচ্চার হতে হবে।
শান্তির পথে যুদ্ধের কোনো স্থান নেই। কবীর সুমনের মতো শিল্পীদের ধারণা ও বক্তব্য অবশ্যই আমাদের পথে নির্দেশনা দেবে, শুধু শাস্ত্র বাণী নয়, বরং জীবনের বাস্তবতা। আমাদের অবশ্যই একসঙ্গে হয়ে শান্তি ও মৈত্রী প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
FAQs
- কবীর সুমন কেন যুদ্ধের বিরুদ্ধে মতামত দিয়েছেন?
কবীর সুমনের মতে, যুদ্ধের ফলে নিরীহ মানুষের প্রানহানি হয়, এবং এটি মানবতার বিরুদ্ধে এক ধরনের অপরাধ। - তিনি দেশের ভাগ হয়ে যাওয়ার বিষয়ে কী বলেন?
তিনি দেশের ভাগ বয়সার সময় জনগণের অনুমতি নেওয়ার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং দেখেন যে দেশের নেতাদের এই সিদ্ধান্ত নেওার প্রয়োজন ছিল। - সুমনের ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি কেমন?
তিনি ধর্মকে হত্যার প্রধান কারণ হিসেবে দেখতে পান এবং ধর্মের নামে যুদ্ধের বিরোধিতা করেন। - কবীর সুমনের গানগুলোতে কী বার্তা রয়েছে?
সুমনের গানগুলোতে শান্তি ও মানবিক প্রেমের বার্তা রয়েছে, যা মানুষের মনে যুদ্ধ বিরোধী মনোভাব তৈরি করে।
৫. ভারত-পাকিস্তানের বর্তমান সংঘাতের কারণ কী?
এই সংঘাতের মূল কারণ হচ্ছে সীমান্তের উত্তেজনা এবং সন্ত্রাসী হামলার পাল্টা জবাব হিসেবে সামরিক অভিযান।
Disclaimer: This article is intended for informational purposes only and should not be construed as professional advice. Content accuracy is checked to the best of our ability but is subject to change. Always verify directly with official sources.
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।