জুমবাংলা ডেস্ক : রমজানকে ঘিরে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি বাড়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারী ও খুচরাতে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। পাইকারীতে কেজি প্রতি ৩/৬ টাকা করে কমলেও খুচরাতে কমেছে ৮/১০টাকা করে। এদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় মসল্লা জাতীয় পণ্যের দাম কমায় স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ মানুষের মাঝে। পেঁয়াজ আমদানির এমন ধারা অব্যাহত থাকলে রমজানে দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকগণ।
সরেজমিন হিলি বাজার ও আমদানিকারকদের গুদাম ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ পুর্বে হিলি স্থলবন্দরে পাইকারীতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২৩ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ২০ থেকে ২৩ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে হিলি বাজারে খুচরাতে এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২৮ থেকে ৩০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২২ টাকা। এছাড়া দেশিয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে। গত ৭দিনে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে সাড়ে ৩ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা গৃহবধূ নাজমা বেগম বলেন, কিছুদিন পুর্বে পেঁয়াজের দাম বেশ বেড়ে গিয়েছিল যার কারণে আমাদের মতো নিন্ম আয়ের মানুষজনকে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল। এখন পেঁয়াজের দাম অনেকটা কমে এসেছে যার কারনে আমাদের বেশ সুবিধা হয়েছে। পেঁয়াজের দাম আগামীতে যদি আরো কমাতে পারে বিশেষ করে রমজান মাসে যেন কম থাকে তাহলে আমাদের জন্য বেশ ভালো হবে।
হিলি বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা ভ্যান চালক রফিকুল ইসলাম জানান, সারাদিন ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয় তাই দিয়ে সংসার চালাতে হয় তাই জিনিসপত্রের দাম যতো কম হয় ততো আমাদের জন্য ভালো। কয়েকদিন আগে পেঁয়াজ কিনেছিলাম ২৮ থেকে ৩০ টাকা করে এখন সেটা কমে ২০ থেকে ২২টাকায় নেমেছে এতে করে আমাদের সুবিধা হয়েছে। রোজার আগে যদি আরো একটু কমে তাহলে আমাদের মতো খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষজনের ভালো হয়।
হিলি বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা শাকিল খান ও ফিরোজ হোসেন বলেন, পূর্বে বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় বাজার শুধুমাত্র দেশিয় পেঁয়াজের উপর নির্ভরশীল ছিল যার কারণে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তি ছিল। তবে বর্তমানে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় ও রমজানকে ঘিরে বাড়তি পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ার কারণে দাম কমতে শুরু করেছে। আগে দাম বেশি থাকার কারণে মানুষজন পেঁয়াজ কম কিনলেও এখন দাম কমার কারণে ও রমজানকে ঘিরে বেশি করে পেঁয়াজ কিনছেন। এক সপ্তাহ পূর্বে ভারতীয় পেঁয়াজ ২৮/৩০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ২০/২২ টাকায় নেমেছে। এছাড়াও দেশীয় পেঁয়াজ ২৮/৩০ টাকা বিক্রি হলেও দাম বেশি হওয়ার কারণে দেশিয় পেঁয়াজের বিক্রি নেই।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক হারুন উর রশীদ ও পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম জানান, ভারতের নিষেধাঙ্গা প্রত্যাহারের ফলে সাড়ে ৩ মাস বন্ধের পর ২ জানুয়ারী থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। তবে পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক আরোপ ও দেশিয় পেয়াজের দাম কম হওয়ার কারণে কয়েকদিন আমদানির পর পড়তা না থাকায় ২৭ জানুয়ারী থেকে পুনরায় আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি দেশিয় পেঁয়াজের সরবরাহ কম ও দাম উদ্ধমুখি হওয়ায় গত ৪ মার্চ থেকে পুনরায় বন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। শুরুতে পেঁয়াজের আমদানি কম হলেও আসন্ন রমজানকে ঘিরে দেশের বাজারে পেঁয়াজের বাড়তি চাহিদার কথা মাথায় রেখে পেঁয়াজ আমদানির পরিমান বাড়িয়েছেন আমদানিকারকরা।
পূর্বে বন্দর দিয়ে ৪/৫ ট্রাক করে পেঁয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ২০/২৫ ট্রাক করে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে এতে করে দেশের বাজারে সরবরাহ বাড়ায় পেঁয়াজের দাম আগের চেয়ে কমেছে। তবে পেঁয়াজ আমদানিতে সরকার আইপি ইস্যু বন্ধ রেখেছেন পুর্বে যাদের আইপি রয়েছে সেগুলোর মাধ্যমে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। এটি খুলে দেওয়া না হলে আইপি জটিলতার কারনে রমজানে পেঁয়াজ আমদানির পরিমান কমলে দেশে পেঁয়াজের দাম বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছেন তারা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।