
নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনা শনাক্তের পরীক্ষার জন্য রাজধানী ঢাকার পরীক্ষা কেন্দ্রেগুলোর সামনে দীর্ঘ অপেক্ষা যেন একটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। দিনের পর দিন অপেক্ষা করেও পাওয়া যাচ্ছে না টেস্টের সিরিয়াল। করোনার নমুনা টেস্ট যেন সোনার হরিণ হয়ে গেছে।
রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতাল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে করোনার টেস্ট করানোর জন্য রাতের পর রাতও অপেক্ষা করছে অনেকেই। তবে এই দৃশ্য এখন রাজধানীর বাইরেও দেখা যাচ্ছে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানাধীন তেঁতুইবাড়ি এলাকায় অবস্থিত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেমোরিয়াল কেপিজে বিশেষায়িত হাসপাতালে গিয়ে করোনার টেস্ট করাতে আসা মানুষদের আরও করুণ অবস্থায় পাওয়া যায়।
ইংরেজি দৈনিক নিউ এইজের আজকের সংখ্যায় ছাপানো ফটো সাংবাদিক সৌরভ লস্করের একটি ছবিতে দেখা যায়, করোনার টেস্ট করানোর জন্য সিরিয়ােল পেতে হাসপাতালটির সামনে খোলা আকাশের নিচে রাত্রিযাপন করছেন অনেকেই।
সৌরভ লস্কর বুধবার সকালে জুমবাংলাকে জানান, তিনি ছবি তুলতে গিয়ে দেখতে পান হাসপাতালটির বাইরে দু-তিন ফুট দূরত্বে পত্রিকা বিছিয়ে বসে আছেন কেউ কেউ। অধিকাংশেরই টানা দু-তিন রাত নির্ঘুম কেটেছে। ক্লান্ত শরীরে কেউ কেউ ঘুমাচ্ছেন। বসে বসে ঝিমাচ্ছেন অনেকেই। করোনার উপসর্গ সর্দি, জ্বর ও মাথাব্যথা নিয়ে যারা এসেছেন তাদের অবস্থা খুবই করুণ। ঠিকমতো বসতেও পারছেন না অনেকেই।
তিনি বলেন, যারা করোনার টেস্ট করাতে এসেছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই পোশাক শ্রমিক। হাসপাতালটির বাইরে কোনও টয়লেট সুবিধা না থাকায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন মহিলা পোশাক শ্রমিকরা। হাসপাতাল এবং আশেপাশের বাসায় তাদের কেউ ঢুকতেও দিচ্ছে না। ফলে হাসপাতালটির আশেপাশে ঝোপঝাড়ের মধ্যে তাদের টয়লেট সারতে হচ্ছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, এখানে প্রতিদিন ১৮৪টি করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হয়। তবে প্রতিরাতেই পরীক্ষার জন্য আসেন কমপক্ষে পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি। যারা টেস্ট করাতে পান না তাদের অনেকেই ক্লান্ত শরীরে ঘরে ফিরে যান। আগেভাগে জায়গা দখল করতে কেউ কেউ আবার সেদিন বিকালেই চলে আসেন। অনেকে আবার সেখানেই থেকে যান।
করোনা আক্রান্ত সন্দেহে বাড়ির মালিক-প্রতিবেশী তাদের বাসায় প্রবেশ করতে দেন না বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে।
পোশাক শ্রমিক গোলাপী বেগম জানান, তিনি পুরাতন ইপিজেডে চাকরি করেন। কয়েকদিন হালকা জ্বর থাকার পর অফিসে গেলে করোনা টেস্ট ছাড়া তাকে অফিসে যোগ দিতে দেয়নি। গত চারদিন থেকে এখানে করোনার টেস্ট করাতে আসতেছি। রাতে এখানে অমানবিক কষ্ট করেও সিরিয়াল পাচ্ছি না।
করোনা সন্দেহে বাড়িওয়ালা তার স্বামীকে বাসার রুমের মধ্যে তালা দিয়ে রেখেছে বলেও জানান তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।