নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক জেলা পুলিশের নির্দেশনা তো মানছেনই। এর বাইরেও তিনি ব্যতিক্রম কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন ব্যক্তিগতভাবে। নিজের ব্যক্তিগত এবং কালীগঞ্জ থানার অফিসিয়াল ফেজবুক আইডিতে এ উদ্যোগ লক্ষ্য করা গেছে। ছন্দে ছন্দে কবিতা লিখে ওই দুই এফবি আইডিতে পোষ্ট করে মানুষকে সচেতনতার এই প্রয়াস স্থানীয়ভাবে সারাও ফেলেছে বেশ।
করোনা ভাইরাস নামের দুই পর্বের এই কতিবার প্রথম পর্বে বিদেশ ফেরতদের প্রতি অনুরোধ জানানো হলেও দ্বিতীয় পর্বে জানানো হয়েছে সমাজের সকলের প্রতি অনুরোধ।
করোনা ভাইরাস (১ম পর্ব)
বিদেশ ফেরতদের প্রতি অনুরোধ
‘‘ বিশ্বলয়ে আজ “করোনা ভাইরাস” এক মহাআতংকের নাম
পারমানবিক বোমার চেয়েও ভয়াবহ হচ্ছে এর পরিণাম।
করোনার বাহক রূপে চিহিৃত মানুষই প্রধান আতংক
তাইতো সবাইকে দিচ্ছি বার্তা, থাকতে সদা জীবাণুমুক্ত।
চীনের উহানে এর উৎপত্তির কথা আমরা সবাই জানি
পাশাপাশি সারা বিশ্বে বর্তমানে এর বিস্তার তাও মানি।
বিদেশ ফেরতদের মাধ্যমেই বিস্তার ঘটছে নানা উপায়ে
থাকুন না ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে।
কেননা অদৃশ্য এই ভাইরাসের হতে পারেন আপনিই বাহক
তাইতো অনুরোধ বিস্তার না ঘটিয়ে হউনদেশের রক্ষক’’।
করোনা ভাইরাস (২য় পর্ব)
(সকলের প্রতি অনুরোধ)
‘‘করোনা ভাইরাস নাক-মুখ-চোখ দিয়ে ঢুকে শরীরে
অদৃশ্য এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
তার প্রমান বর্তমান বিশ্বের ১৯৯ দেশে লাশের সারি
যা পুরো বিশ্বের আকাশ বাতাসকে করে ফেলেছে ভারী।
বাংলার মাটিতে এর প্রভাব এখনো ততটা দেয়নি দেখা
সুযোগ হয়তো এখনো আছে প্রতিটি ঘর থেকে দেশ নিরাপদে রাখা।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন-করতে হবে মোদের যুদ্ধ
এই যুদ্ধের মূলমন্ত্রই হল-নিজেকে করে রাখা অবরুদ্ধ।
সেই সাথে বার বার হাত মুখ ধুয়ে থাকতে হবে জীবাণুমুক্ত
নয়তো যে কোন সময় হতে পারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ।
সকলের কাছে অনুরোধ-যুদ্ধে যোগ দিয়ে ঘরের ভিতর থাকি
নিজে, নিজের পরিবার ও দেশকে সবাই মিলে নিরাপদে রাখি।
লাশের মিছিল আর দেখতে চাইনা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায়
প্রয়োজনে ৯৯৯-এ কল করলেই পুলিশ পৌছবে আপনার দরজায়।
সরকার এবং জনপ্রতিনিধিরাও প্রয়োজনে আপনার পাশে আছে
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে এই ঘোষনা দিয়েছে’’।
অফিসার ইনচার্জ হিসেবে একেএম মিজানুল হক গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর কালীগঞ্জ থানায় যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পরই তার সাথে কথা বলে জানা যায় তিনি একটু-আধটু লেখালেখি করেন। বলেনও ভালো। কারো সাথে কথা বললে তিনি খুব গুছিয়ে কথা বলেন। কথার ছন্দে মানুষকে খুব সহজেই বিমোহিত করতে পারেন তিনি।
এত কিছু জানা থাকলেও জানা ছিলনা তার আবৃত্তি গুনের কথা। এবার জানা গেলে সেই গুনের কথাটিও। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি করোনা নিয়ে তার লেখা ২য় পর্বের কবিতাটি তিনি আবৃত্তি করে ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে স্থানীয়দের সচেতন করে চলেছেন। কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হকের ব্যতিক্রম এই উদ্যোগকে স্থানীয়রা স্বাগতও জানিয়েছেন তাই।
উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যপীঠ মসলিন কটন মিলস উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কালীগঞ্জ উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান আরমান বলেন, আসলে গতানুগতিক নিয়মের বাহিরেও যে ব্যতিক্রমভাবে মানুষকে সচেতন করা যায় কালীগঞ্জ থানার ওসি তাই প্রমান করলেন। ওসি একেএম মিজানুল হকের কবিতা ও আবৃত্তি স্থানীয়ভাবে সত্যি মাসুষকে খুব সচেতন করছে।
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ একেএম মিজানুল হক বলেন, আসলে আমি নিতান্তই ভাললাগা থেকেই লেখালেখি করি। তবে আমার লেখা করোনা নিয়ে দুই পর্বের কবিতায় যদি স্থানীয় একটি মানুষও সচেতন হয় তাহলেই নিজের স্বার্থকতা এবং ব্যতিক্রম এই উদ্যোগের সফলতা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।