লাইফস্টাইল ডেস্ক : কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্বজুড়ে একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সবাই উদ্বিগ্ন। বেশির ভাগ মানুষই হোম কোয়ারেন্টিনে বা আইসোলেশনে।
এই রোগটি বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য বিপজ্জনক কারণ তারা সহজেই করোনাভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হতে পারেন। কেননা বয়স্ক ব্যক্তিদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে।
তাদের অনেকেরই আনুষঙ্গিক কিছু রোগ যেমন- ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, ফুসফুসের রোগ, ক্যান্সার, হৃদরোগ ইত্যাদি, এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
কিছু ভিটামিন এবং খনিজসমৃদ্ধ খাবার প্রবীণদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম। তাদের খাদ্যে বিটা ক্যারোটিনযুক্ত খাবার, ভিটামিন সি এবং জিংকযুক্ত খাবার, ফল ও সবজি অন্তর্ভুক্ত করতে পারলে অবশ্যই সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
বিটা ক্যারোটিনযুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে- গাজর, লেটুস, পালং শাক, ব্রকোলি ইত্যাদি। প্রবীণদের ডায়েটে যুক্ত করতে হবে জিংকযুক্ত খাবার যেমন- ডাল, বাদাম, বিচিজাতীয় খাবার, ডিম, মটরশুটি ইত্যাদি।
খাবারে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কমলা, পেঁপে, পেয়ারা, আনারস, জাম্বুরা, আমড়া ভিটামিন সি’তে ভরপুর। তাছাড়া বেগুন, কাঁচামরিচ, বিট, পালং শাক ও ফুলকপিতেও রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি যা বয়স্কদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিডযুক্ত খাবার যেমন- মটরশুঁটি, তিসির বীজ, আখরোট, বাদাম, চিয়া বীজ, টুনা মাছ ইত্যাদি প্রবীণদের ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করুন। মাশরুম, পাতাকপি, আমলকী ও স্পিরুলিনার মতো কিছু অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার যাতে প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ রয়েছে। এগুলো খেতে পারলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
প্রবীণদের দৈনিক ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা প্রয়োজন, কারণ এটি মিউকাস মেমব্রেন আর্দ্র রাখবে এবং ঠাণ্ডা লাগা বা জ্বর হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে সক্ষম। তাছাড়া বিভিন্ন পানীয় যেমন স্যুপ, ডাবের পানি, দুধ, গ্রিন টি এবং বাসায় তৈরি ফলের রস দেয়া যেতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কিছু গুল্ম যেমন- রসুন, আদা, কালিজিরা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে যা অন্ত্রের উন্নতি সাধন করে এবং পরোক্ষভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
প্রবীণদের ডায়েটে চিনির ব্যবহার একদম সীমিত করে ফেলতে হবে, পারলে চিনি একদম বাদ দিতে হবে এবং চর্বি গ্রহণের পরিমাণ সীমিত করতে হবে। ভাজা খাবার এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার বর্জন করতে হবে। লবণের ব্যবহার সীমিত করতে হবে।
দুধ, টকদই, চিনি ছাড়া ছানা ইত্যাদি ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার ডায়েটে রাখুন। তাদের ডায়েটে ভিটামিন ই যুক্ত খাবার যা অত্যন্ত শক্তিশালী একটি এন্টি অক্সিডেন্ট- যা বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম। ভিটামিন ই যুক্ত খাদ্য যেমন ভেজানো কাঠবাদাম, চীনাবাদাম, সূর্যমুখীর বীজ ইত্যাদি।
মাছ, মুরগি, ডিমের মতো উচ্চমানের প্রোটিন খেতে হবে ঠিকমতো। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের ভিটামিন ডি তৈরি করার ক্ষমতা কমতে থাকে তাই ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার যেমন মাছের তেল, মাশরুম, ডিমের কুসুম ইত্যাদি গ্রহণের পাশাপাশি গায়ে রোদ লাগালে ভিটামিন ডি’র চাহিদা পূরণ হবে, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞ, গ্রিন লাইফ হাসপাতাল
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।