নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বিদ্যালয় থেকে বাড়ী ফেরার পথে এক ছাত্রীকে অপহরণের তিনদিন পর কাপাসিয়া থানায় মামলা হয়েছে। ছাত্রীর বড় ভাই বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় এজাহার নামীয় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। অন্য আসামীদের গ্রেফতার ও ছাত্রীকে উদ্ধারে কাজ করছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বক্কর মিয়া।
অভিযোগে থেকে জানা যায়, কাপাসিয়া উপজেলার শহর টোক গ্রামের রশিদ সরকারের ছেলে মোঃ রাফি’র (২৩) ও লোহাদী গ্রামের মোঃ রফিকের পুত্র ফয়সালের (৩৫) নেতৃত্বে ৩/৪ জন ব্যক্তি দশম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে ২০ মে বিকাল ৩টার দিকে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায়। ওই শিক্ষার্থী স্থানীয় টোক সূর্যবালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেনির শিক্ষার্থী। বিদ্যালয় ছুটির পর বিদ্যালয় থেকে বাড়ী যাওয়ার পথে শহর টোক গ্রামের চাঁনখার বিল নামক স্থানে পৌছালে ঐ ছাত্রীকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করা হয়।
অপহরণের পর ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও ওই শিক্ষার্থী এখনো উদ্ধার না হওয়ায় ছাত্রীর পরিবারে উদ্বেগ বাড়ছে। শিক্ষার্থীর পরিবারের দাবি অপহরণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও অপহৃতা স্কুল শিক্ষার্থী ৩ দিনেও উদ্ধার হয়নি। অভিযোগের পরও আসামী পক্ষের লোকজন মামলা না করার হুমকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীর বড় ভাই মনির হোসেন বলেন, আমার ছোট বোনকে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পথে প্রায় সময় মোঃ রাফি উত্ত্যক্ত করত। আমার বোন প্রতিবাদ করিলে মোঃ রাফি আমার বোনকে জোরপূর্বক অপহরণ করার হুমকি দেয়। পরে আমার বোন অপহরণের হুমকির বিষয়টি আমাদেরকে জানায়। আমরা তাকে সাবধানে বিদ্যালয়ে যাওয়া আসার পরামর্শ দেই এবং বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানালে তিনিও অপারগতা প্রকাশ করেন।
শিক্ষার্থীর বড় ভাই মোঃ ইমরান বলেন, আমার বোনের অপহরণের বিষয়টি নিয়ে প্রথমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জানাই। পরে তিনি বিষয়টি কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানাতে বলেন। পরে ২২ মে কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালে, থানায় জানানোর পরামর্শ দেন। আমরা বিষয়টি থানায় লিখিতভাবে জানাই।
তিনি আরো বলেন, ২২ মে অপহরণকারী রাফির মামা ফয়সাল অভিযোগ উঠিয়ে নিলে আমার বোনকে ফেরত দিবে বলে জানায়। এই বিষয়টি টোক তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ উপ-পরিদর্শক সুজন রঞ্জন তালুকদারকে জানাই। তিনি বলেন, তাহলে আপনি মামলা উঠিয়ে নেন, মামলা উঠিয়ে নিলে যেহেতু আপনার বোনকে ফেরত দিবে, তাহলে আপনি বলেন যে মামলা উঠিয়ে নিবেন।
ইমরান আরো বলেন, অপহরণকারীরা এলাকায় অপরাধের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাদের এক বিশাল চক্র আছে। তাদের ভয়ে কেউ কথা বলতে চায় না।
কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম লুৎফর রহমান জানান, অপহরণকৃত শিক্ষার্থীর বড় ভাই মোবাইল ফোন আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। বিষয়টি নারী গঠিত তাই নারী ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি এবং এই বিষয়টি নিয়ে কাপাসিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে বলেছি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।
অপরদিকে, অভিযুক্ত রাফির পিতা রশিদ সরকার বলেন, ছেলে মেয়ে একে অপরকে পছন্দ করে পালিয়ে গেছে। আমাদেরকে কিছু বলে যায়নি আমরাও তাকে খুঁজছি।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর মিয়া জানান, অপহরণের ঘটনায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে এজাহার নামীয় ফয়সাল নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। আমরা আসামী গ্রেফতার ও ছাত্রীকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।