স্পোর্টস ডেস্ক : সাত ম্যাচে তিন জয়, ফল বিবেচনায় একেবারে মন্দ না। এরচেয়ে বড় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য, এর আগে তারা কখনই তিনটি ম্যাচ জিততে পারেনি। এমন ফলের পরও এবারের বিশ্বকাপটা বাংলাদেশের জন্য ব্যর্থ মিশন। কারণটা তাদের পারফরম্যান্স, লড়াই করার মানসিকতা। দল, ক্রিকেটারদের নিয়ে সবখানে সমালোচনার ঝড়। এর মাঝে আগামী শুক্রবার সকালে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ দল।
সবচেয়ে বেশি সমালোচনা আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে। ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশের সামনে সুযোগ আসে সেমি-ফাইনালে ওঠার। এর জন্য আফগানিস্তানের দেওয়া ১১৬ রানের লক্ষ্য ১২.১ ওভারে তাড়া করতে হতো শান্ত-সাকিবদের। কিন্তু সেই চেষ্টাই করেনি বাংলাদেশ, স্বাভাবিক গতিতে ব্যাটিং করে ম্যাচ জেতার চেষ্টা করে উল্টো ৮ রানে (বৃষ্টি আইনে) হারে বাংলাদেশ।
চরম হতাশার ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত বলেন, ‘ব্যাটিং বিভাগ হিসেবে আমরা কিছু খারাপ সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বিশেষ করে মাঝের ওভারগুলোতে। সাধারণ পরিকল্পনা ছিল, প্রথম তিন উইকেট নিয়ে আমরা চড়াও হবো, বিশেষ করে প্রথম ছয় ওভারে। আমরা যদি শুরুতে উইকেট হারাই, তবে আমরা স্বাভাবিক খেলা খেলব। কিন্তু আমরা সেটা বাস্তবায়ন করতে পারিনি।’ তার এমন বক্তব্য শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন।
ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গড়পড়তা পারফরম্যান্স, যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজ হার, ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে বেহাশ দশা হওয়ার পর বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভালো করার সম্ভাবনার আগে বসে গিয়েছিল প্রশ্নবোধ চিহ্ন, জেগেছিল শঙ্কা। যদিও সব শঙ্কা উড়িয়ে জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করে বাংলাদেশ। নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারায় ২ উইকেটে।
পরের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও দারুণ লড়ে বাংলাদেশ, কিন্তু একেবারে কাছে গিয়েও হেরে যায় ৪ রানে। পরের দুই ম্যাচে নেদারল্যান্ডস ও নেপালকে হারিয়ে সুপার এইটে ওঠে বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বের সবগুলো ম্যাচই যুক্তরাষ্ট্রের মন্থর উইকেটে খেলে তারা, এমন উইকেট বাংলাদেশের জন্য অচেনা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু বোলাররা ভালো করলেও ব্যাটসম্যানরা হতাশার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিলেন।
সুপার এইট থেকে সব ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজে হচ্ছে, বাংলাদেশ তাদের প্রথম দুই ম্যাচ খেলে অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে। ভালো উইকেট পেয়েও অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের বিপক্ষে সামান্যতম লড়াইও করতে পারেনি তারা। প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা রানের ফোয়ারা বইয়ে দিলেও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা আগের কয়েক ম্যাচের মতো রান তুলতে সংগ্রামই করে গেছেন।
টানা দুই হারে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পরও সেমি-ফাইনালে ওঠার সুযোগ মেলে। কিন্তু বাংলাদেশ সমীকরণ মিলিয়ে প্রথমবারের মতো সেমিতে ওঠার স্বাদ নেওয়ার চেষ্টাই করেনি, উল্টো ১৯ ওভারে ১১৪ রান পাড়ি দিতে ব্যর্থ হয়ে হতাশার হারে শেষ করেছে বিশ্বকাপ মিশন। পুরো বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ২টি হাফ সেঞ্চুরি। সাত ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৫৩ রান করেছেন তাওহিদ হৃদয়। প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়া রিশাহ হোসেন ও তানজিম হাসান সাকিব বোলিংয়ে দারুণ করেছেন। রিশাদ ১৪টি ও তানজিম নিয়েছেন ১১ উইকেট।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।