কাশফুলে ভেসে যাওয়া শরৎ এখন পূর্ণ যৌবনা, হৃদয় কাড়ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের

রঞ্জু খন্দকার : আকাশজুড়ে এখন সাদা মেঘের ওড়াউড়ি। হারিয়ে গেছে কালো মেঘের দাপট। কাশফুলে ছেয়ে গেছে নদীর কিনার। ফুটেছে শিউলি। শরৎ যে এসেছে ধরায়। প্রায় মাস ছুঁইছুঁই বয়সী ঋতুর রাণী এখন পূর্ণ যৌবনবতী!

ছবি : কমল দাশ

গ্রামে চোখ মেলে তাকালে এখন দেখতে পাব, মাঠ ছেয়ে আছে সবুজ ধানখেতে। কিছুদিন আগেই রোপন করা হয়েছে এসব চারা। তাই এখনো গোড়া শক্ত হয়নি এগুলোর। তবে এখনই এগুলোতেই দেখা মিলছে ‘রৌদ্র-ছায়ার খেলা’, যেমনটা শরতে মেলে দেখা।

রবি ঠাকুর তো এই শরতেই গেয়েছেন,

‘আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায়
লুকোচুরি খেলা রে ভাই, লুকোচুরি খেলা।
নীল আকাশে কে ভাসালে
সাদা মেঘের ভেলা রে ভাই- লুকোচুরি খেলা।।’

আকাশে সাদা মেঘের ভেলা যদিও এখন পুরোদমে। কদিন আগেও বাংলার আকাশে ছিল ‘দুর্যোগের’ ঘনঘটা। কারণ, নিয়ম মেনে ঘোর বর্ষা এবার দেরিতেই নেমেছে। বিলম্বিত বর্ষায় শরতকে তো কিছুটা ছাড় দিতেই হচ্ছে!

আস্তেধীরে কমে গেছে কালো মেঘের দাপট। তার বদলে জায়গা করে নিচ্ছে সাদা তুলোর মতো নরম মেঘ। নীলাকাশজুড়ে তার ওড়াউড়ি।

শরতের আকাশে সাদা মেঘের ওড়াউড়ি দেখেই কবিগুরু লিখেছেন, ‘অমল ধবল পালে লেগেছে মন্দ মধুর হাওয়া…’।

নদীর কিনারে কাশফুল অবশ্য ফুটে গেছে। সামান্য বাতাসে এখন সেগুলো যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে। শরতের যে আবাহন, সে তো কাশফুলেই। তাই তো কবিও লিখেছেন, ‘শরৎ এলো কাশের বনে/ নদীর কিনারায়…’।

গ্রামে কাশবন দেখতে এই মুহূর্তে যেকোনো নদীর চরে গেলেই চলবে। আর রাজধানীতে? যেকোনো বিকেলেই আপনি যেতে পারেন আফতাবনগর অথবা একটু দূরে উত্তরার দিয়াবাড়ি কিংবা ডেমরার আমুলিয়া এলাকায়।

শরতের সকালে শিউলিতলা ভরে যায় ফুলে-ফুলে। সে ফুল কুড়িয়ে মালা গাঁথেনি, এমন শৈশব-কৈশোর কমজনেরই কেটেছে। আর সকালে দূর্বাঘাসের ডগায় জমানো শিশির বিন্দু না দেখলে তো দেখা হয়নি কিছুই!

রবীন্দ্রনাথ শরতসকালের রূপে মুগ্ধ হয়ে লিখেছেন, ‘আজি কি তোমার মধুর মূরতি/ হেরিনু শারদ প্রভাতে…’

এ তো গেল ঋতুরানি শরতের রূপের বর্ণনা। কিন্তু শরতের আবহাওয়া? এটা বুঝতে শুধু তালপাকা গরমের কথা মাথায় রাখলেই যথেষ্ট। তালপিঠার স্বাদ নিতে চাইলে তো ভাদ্রের এই ভ্যাপসা আবহাওয়া মেনে নিতেই হবে!

শরৎকে ফসলের আবাহনেরও ঋতু বলা হয়। এই সময়ে যথেষ্ট পরিচর্যা করলে হেমন্তে বাঙালির গোলা ভরে উঠবে ধনধান্যে। সে পর্যন্ত তাহলে অপেক্ষা করতেই হয়!

মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন, দুই সেনাসদস্যের ভূয়সী প্রশংসা করলেন সেনাপ্রধান