কুঁচো চিংড়ি দিয়ে ‘গোয়ালন্দ স্টিমার চিকেন’ একবার খেলে বার বার খেতে ইচ্ছে করবে
লাইফস্টাইল ডেস্ক : গোয়ালন্দ ঘাট থেকে স্টিমারে চেপে পদ্মা পেরোলেই নারায়ণগঞ্জ। আর সেখান থেকে সোজা ঢাকা। এই পথে রেল চলাচল শুরু হওয়ায় গোয়ালন্দ ঘাট হয়ে ওঠে এক জমজমাট স্থান। ট্রেন যাত্রী এবং স্টিমার যাত্রীদের ভিড়ে সদাই মুখরিত থাকত এই স্থান। এই ঘাটে মাঝিমাল্লাদের সবসময় থাকতে হত। আর সেই মাঝিমাল্লাদের রান্নার কথাই আজ বলব।
মাঝিরা বলতেন মুরগির ঝোল। যদিও লোকমুখে সেই মুরগির ঝোল হয়ে ওঠে, ‘গোয়ালন্দ স্টিমার চিকেন’। মূলত দরিদ্র মুসলমান মাঝিরাই এই মুরগির ঝোল রাঁধতেন। শোনা যায়, সেই রান্নার গন্ধে নাকি চারদিক ম ম করত। জিভের জল আটকে রাখতে পারতেন না সনাতনী হিন্দুরাও। সেই চিকেন কারি এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে পরবর্তী সময়ে সেই গোয়ালন্দ ঘাটে হোটেল খুলে সেই মাংস রান্না বিক্রি হত রমরমিয়ে। শুধু বাংলাদেশই নয়, সুন্দরবনের মাঝিদের মধ্যেও এই চিকেন কারি বেশ প্রচলিত ছিল। রান্নার উপকরণ ছিল অতি সামান্য। গরিব মাঝিদের পক্ষে যতটুকু জোগাড় করা সম্ভব হত ঠিক ততটুকুই। সাবেকি এই পদে কোনও মশলা ফোঁড়ন, মশলা বাটা ইত্যাদি কিছুই ব্যবহার হত না। টম্যাটো ছিল সাহেবসুবোদের খাবার। এসব রান্নায় ব্যবহারের কথা মাঝিরা কল্পনাও করতে পারতেন না। পরবর্তী সময়ে অবশ্য এই রান্নায় আলু এবং ডিম দেওয়ার প্রচলনও হয়। তবে সাবেকী রান্নায় এসব দেওয়া হয় না। তাহলে আর সময় নষ্ট করে লাভ কী! চলুন এই সুস্বাদু পদটি কী ভাবে রান্না করবেন, তা জেনে নেওয়া যাক।
গোয়ালন্দ স্টিমার চিকেন
উপকরণ-
- মুরগির মাংস
- কুঁচো চিংড়ি
- পেঁয়াজ
- আদা কুচি
- রসুন কুচি
- শুকনো লঙ্কা কুচি
- কাঁচালঙ্কা কুচি
- নুন
পদ্ধতি
– মাংস ভালো করে ধুয়ে নিন।
– চিংড়ি মাছের খোসা ছাড়িয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন। এবার চিংড়িগুলো বেটে নিন।
– পেঁয়াজ, আদা এবং রসুন যতটা সম্ভব মিহি করে কুচিয়ে কাটুন। তিনটি উপকরণই অনেকটা লাগবে।
– কাঁচালঙ্কা এবং শুকনো লঙ্কা দুটোই কুচিয়ে নিন।
– এবার একটি পাত্রে চিকেন, পেঁয়াজ কুচি, আদা কুচি, রসুন কুচি, শুকনো এবং কাঁচা লঙ্কা কুচি নিয়ে খুব ভালো করে কচলে মাখতে থাকুন। কম করে দশ মিনিট ধরে সমস্ত উপকরণ মাখতে হবে।
– এবার এতে দিয়ে দিন বেশি খানিকটা পরিমাণ সর্ষের তেল, স্বাদ অনুসারে নুন এবং হলুদ। ফের মাখুন।
– ঘণ্টা দুয়েক ম্যারিনেটেড মাংস ঢাকা দিয়ে রেখে দিন।
– ঘণ্টা দুয়েক ম্যারিনেট করার পর এবার এতে দিন চিংড়ি বাটা এবং আরও খানিকটা সর্ষের তেলে। ফের সেগুলি মেখে নিন।
– এবার কড়াইয়ে সর্ষের তেল গরম করে তাতে মাখা মুরগির মাংস দিয়ে নাড়তে থাকুন। খুব ভলো করে মাংস কষাতে হবে।
– মাংস ঢাকা দিয়ে রাখুন। মাঝে মাঝে নেড়ে দিন। যাতে কড়ায়েই লেগে না যায়। মোটামুটি আধ ঘণ্টা ধরে মাংস কষাতে হবে। মাংস সিদ্ধ হয়ে গেলে এবং তা থেকে তেল বের হতে শুরু করলে সামান্য জল দিয়ে ফের নাড়তে থাকুন।
– মিনিট দশেক ঢাকা দিয়ে রাখুন। শেষে ওভেন বন্ধ করে দিয়ে আরও দশ মিনিট ঢেকে রাখুন।
– গরম গরম ভাতের সঙ্গে গোয়ালন্দ স্টিমার মেখে যখন মুখে তুলবেন, তখন দেখবেন রীতিমতো আবেগতাড়িত হয়ে গেছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।