পৃথিবীতে কুকুরের মতো প্রভুভক্ত প্রাণী খুব বেশি নেই। এই প্রভুভক্তির কারণে মানুষের কাছে কুকুর প্রিয়। কিন্তু এই কুকুর সব সময় গৃহপালিত ছিল না। এককালে অন্য বন্য প্রাণীর মতো তারাও থাকত বনে-জঙ্গলে। গবেষকরা বলেন, জীবজন্তুদের মধ্যে কুকুরই প্রথম মানুষের বশ্যতা স্বীকার করেছিল। সেটা আজ থেকে প্রায় ১৫ হাজার বছর আগে।
কুকুরের প্রভুভক্তির লক্ষণ টের পাওয়া যায় তার লেজ নাড়া দেখে। বিজ্ঞানীরা এ ব্যাপারে গবেষণা করে দেখেছেন, কুকুরের লেজ নাড়া আর চোখের দৃষ্টির নানা ভঙ্গি আসলে কুকুরের দলের মধ্যে ভাববিনিময়ের জন্য জন্মগত এক জটিল পদ্ধতি।
শান্তির প্রতীক হিসেবেও লেজের ব্যবহার করে কুকুর। প্রতিটি পুরুষ কুকুরের নিজস্ব এলাকা থাকে। সেই এলাকায় সে-ই রাজা। নিজের এলাকায় এই কুকুর তার লেজ সবসময় উঁচু করে রাখে। কিন্তু অন্য কোনো কুকুর এলাকায় গেলে তাকে লেজ নামিয়ে রাখতে হয়। এর অন্যথা হলে দুই কুকুরের মধ্যে বেঁধে যায় ধুন্ধুমার যুদ্ধ। তাই শান্তির স্বার্থে কুকুর এ সময় লেজ নামিয়ে রেখে অন্য কুকুরের বশ্যতা স্বীকার করে নেয়। শান্তির জন্য এটুকু আর এমন কী!
আবার একদল কুকুরের মধ্যে দলপতি চেনা যায় তাদের লেজের অবস্থান দেখে। যেমন প্রতিপক্ষের হুমকির মুখেও যার লেজ খাড়া ওপরে তোলা থাকে, সে-ই ওই দলের নেতা। আর যার লেজ নিচের দিকে থাকে, ধরে নিতে হবে সে অন্যদের বশ্যতা মেনে নেওয়ার সংকেত দিচ্ছে। আমরা অনেক সময় বলি ‘লেজ গুটিয়ে পালিয়েছে’—সেটা এখান থেকেই এসেছে। সাধারণভাবে কুকুরের লেজ নাড়ার মধ্য দিয়ে আবেগের প্রকাশ ঘটে। অনেক সময় একে উত্তেজনার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখা চলে।
অবশ্য বাসায় পোষ মানা কুকুরের ক্ষেত্রে এত সব বোঝা যায় না। কারণ মানুষের সঙ্গে থাকতে থাকতে তাদের আদি ভাবভঙ্গি অনেকাংশে বদলে গেছে। এখন কুকুরকে ‘তুতু তুতু’ বললেও লেজ নাড়ে, আবার সাবধান বলে সতর্ক করে দিলেও লেজ নাড়ে!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।