জুমবাংলা ডেস্ক : কুমিল্লা জেলার লালমাই পাহাড়ের পরিত্যক্ত জঙ্গল ঘিরেই এখন খুলেছে সম্ভাবনার নতুন দ্বার। পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার নেয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ।
সদর দক্ষিণ উপজেলার বড় ধর্মপুর গ্রাম। গ্রামটির পাশেই সদর দক্ষিণ ও বরুড়া উপজেলার সীমান্তে রয়েছে লালমাই পাহাড়ের চন্ডিমুড়া এলাকা। পাহাড়ের মাথায় চন্ডিমুড়ায় অবস্থান করছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান। এই তীর্থস্থানের পাশেই বড় ধর্মপুর এলাকায় লালমাই পাহাড়ে ৬১ একর জায়গাজুড়ে ছিল পতিত জমি আর জঙ্গল। তবে কয়েক বছরের মধ্যে পাল্টে গেছে পুরনো দৃশ্যপট। লালমাই পাহাড়ের সেই পরিত্যক্ত জঙ্গল ঘিরেই এখন খুলেছে সম্ভাবনার নতুন দ্বার।
বন বিভাগের ৫২ একর আর স্থানীয়দের ৯ একর সম্পত্তি ইজারা নিয়ে পতিত জমির ব্যবহার ও বেকারদের কর্মমুখী করতে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে ‘বড় ধর্মপুর মানবিক উন্নয়ন সংস্থা’ নামে একটি সংগঠন। মূলত ওই সংগঠনের ৮১ সদস্যের মাধ্যমেই লালমাই পাহাড়ের সেই পরিত্যক্ত জঙ্গল ঘিরে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চন্ডিমুড়ার ওই তীর্থস্থানের পূর্ব পাশ ঘেঁষে পাহাড়ে একটি ইট বিছানো সড়ক প্রবেশ করেছে। সড়কটি দিয়ে একটু সামনে গেলেই চোখে পড়ে পাহাড়। সেখানেই বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন ফলের গাছ লাগানো হয়েছে। রোপণ করা হয়েছে হাজার হাজার বনজ ও ঔষধি গাছ।
পাহাড়ের মাথায়ও রয়েছে ইট বিছানো পথ। মানুষ সেখানে ঘুরতে আসছে। তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম লেক। বড় ধর্মপুর মানবিক উন্নয়ন সংস্থার ব্যবস্থাপক আবুল কাশেম বাসসকে বলেন, আমাদের সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার। মূলত তার উদ্যোগের কারণেই সেই পরিত্যক্ত জঙ্গল ঘিরে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, ওই এলাকায় চার একর ভূমিতে জেলায় প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে আনারসের চাষ করা হয়েছে। পাশেই করা হয়েছে ড্রাগন ফলের বাগান। আম্রপালি গাছ লাগানো হয়েছে এক হাজার ২০০-এর বেশি। এ ছাড়া দেশি-বিদেশি আরো বিভিন্ন প্রকার ১ হাজার ৫০০ আমগাছ, ১ হাজারের বেশি কাঁঠালগাছ লাগানো হয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির লেবুগাছ লাগানো হয়েছে ৮ শতাধিক, ঔষধি গাছ লাগানো হয়েছে ১ হাজারের বেশি। ওখানে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বড় ধর্মপুর মানবিক উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু মিয়া বলেন, গতবছরের ৩০ ডিসেম্বর আমাদের এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু। যদিও আমরা ২০২০ সাল থেকেই এ নিয়ে কাজ করছি। আমাদের এই প্রকল্পের কারণে পাহাড়ও রক্ষা পাচ্ছে। বড় ধর্মপুর এলাকাটি পড়েছে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে।
স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এম এম শাহারিয়ার ভূঁইয়া বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত এই এলাকাটি পরিদর্শন করছি। তাদের পরামর্শ দেয়াসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছি।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির খান বলেন, দুই থেকে তিন বছর আগেও স্থানটি ছিল পরিত্যক্ত জঙ্গল। আর এখন সেখানে সৃষ্টি হয়েছে সম্ভাবনার নতুন দ্বার। এই উদ্যোগের কারণে এলাকায় বেকারত্ব দূর হচ্ছে।
বড় ধর্মপুর মানবিক উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার বলেন, আশা করছি কয়েক বছরের মধ্যে লালমাই পাহাড়ের এই অংশটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।