Close Menu
Bangla news
    Facebook X (Twitter) Instagram
    Bangla news
    • প্রচ্ছদ
    • জাতীয়
    • অর্থনীতি
    • আন্তর্জাতিক
    • রাজনীতি
    • বিনোদন
    • খেলাধুলা
    • শিক্ষা
    • আরও
      • লাইফস্টাইল
      • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
      • বিভাগীয় সংবাদ
      • স্বাস্থ্য
      • অন্যরকম খবর
      • অপরাধ-দুর্নীতি
      • পজিটিভ বাংলাদেশ
      • আইন-আদালত
      • ট্র্যাভেল
      • প্রশ্ন ও উত্তর
      • প্রবাসী খবর
      • আজকের রাশিফল
      • মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার
      • ইতিহাস
      • ক্যাম্পাস
      • ক্যারিয়ার ভাবনা
      • Jobs
      • লাইফ হ্যাকস
      • জমিজমা সংক্রান্ত
    • English
    Bangla news
    Home কে এই ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী
    জাতীয় মুক্তমত/ফিচার/সাক্ষাৎকার স্বাস্থ্য

    কে এই ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

    May 25, 2020Updated:May 25, 20209 Mins Read

    জুমবাংলা ডেস্ক: নিজের প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নির্ণায়ক কিট নিয়ে আবারও আলোচনায় আসা মহান মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তি যোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবার (২৫ মে) সন্ধ্যায় তিনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আসুন আজকে জেনে নেই বাংলাদেশের এই  আলোচিত ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে।

    ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ১৯৭১ সালে রণাঙ্গনে ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে প্রাণ বাঁচিয়েছেন অসংখ্য আহত ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধার। জাতির যেসব সূর্যসন্তান আজকের এই স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ার নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এবং রাজনীতির বুদ্ধিবৃত্তিক অঙ্গনে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন তাদের অন্যতম তিনি।

    স্বাধীন দেশে তিনি হতে পারতেন দেশসেরা সার্জন। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারতেন চিকিৎসাখাতের প্রধান ব্যবসায়ী। কিন্তু ভিন্নধাতুতে গড়া এক লড়াকু মানুষ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। স্বাধীন দেশে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন গণমানুষের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে।

    প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীদের করেছেন প্রাথমিক স্বাস্থ্যকর্মী। প্রথম উদ্যোগ নিয়েছেন জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের। জনকল্যাণধর্মী চিকিৎসানীতির মাধ্যমে দেশে ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার নীতি প্রণয়ন, জাতীয় শিক্ষা কমিটির সদস্য হিসেবে অগ্রসর শিক্ষা নীতি প্রণয়ন ও নারী উন্নয়নে রেখেছেন যুগান্তকারী ভূমিকা। সরকার ও রাষ্ট্রের, ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর যেকোনো অনিয়মের বিরুদ্ধে তিনি দাঁড়িয়েছেন বুকচিতিয়ে। দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ-পরিস্থিতি যখন উত্তপ্ত, অনিশ্চিত তখনই বিবদমান পক্ষের মাঝখানে সমঝোতার সেতুর ভূমিকা নিয়েছেন।

    রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে থেকে একজন ব্যক্তিমানুষের পক্ষে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য যতটুকু কাজ করা সম্ভব তার সর্বোচ্চটাই করেছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সাম্প্রতিক সময়েও তিনি অবস্থান নিয়েছেন কোটাবিরোধী ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনে। সবমিলিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ব্যক্তিত্বের শিখরস্পর্শী এক উচ্চতায়। মহান এ ব্যক্তিত্বকে আজ অপমান, মানহানি আর অব্যাহতভাবে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হচ্ছে মামলা।

    দেশের মানুষকে কম পয়সায় চিকিৎসা দিতে তিলতিল করে যে হাসপাতালটি তিনি গড়ে তুলেছেন সেটির ওপর দুর্বৃত্তদের হাত পড়ছে। ছাত্রজীবনে চড়তেন দামি গাড়িতে। ছিল পাইলটের লাইসেন্স। লন্ডনে পড়াশোনা অবস্থায় রাজকীয় দর্জি তার বাসায় এসে মাপ নিয়ে স্যুট তৈরি করতেন বলে অতিরিক্ত পরিশোধ করতেন ২০ পাউন্ড। বাস্তবজীবনে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী এ মহান চিকিৎসক বর্তমানে যাপন করেন সাধারণ জীবন। দেশে-বিদেশে কোথাও তার একটি ফ্ল্যাট পর্যন্ত নেই। বোনকে দান করে দিয়েছেন পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমিজমা। মরণোত্তর দেহদান করায় দাফনের জন্যও প্রয়োজন হবে না জমির। অথচ তার বিরুদ্ধেই অভিযোগ তোলা হয়েছে ভূমি দখলের।

    ১৯৪১ সালের ২৭শে ডিসেম্বর চট্টগ্রামের রাউজানে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ও পৈত্রিক নিবাস। বড় হয়েছেন ঢাকায়। তার বাবার শিক্ষক ছিলেন বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন। পিতামাতার দশজন সন্তানের মধ্যে তিনি সবার বড়। পড়াশোনা করেছেন বকশীবাজার স্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা মেডিকেলে। ছাত্র ইউনিয়নের মেডিকেল শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছাত্র অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দুর্নীতির বিরুদ্ধে করেছিলেন সংবাদ সম্মেলন। ১৯৬৪ সালে ডিএমসি থেকে এমবিবিএস ও ১৯৬৭ সালে বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে জেনারেল ও ভাস্কুলার সার্জারিতে এফআরসিএস প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কিন্তু চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে দেশে ফিরে আসেন। বৃটেনে প্রথম বাংলাদেশি সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিডিএমএ)’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক তিনি।

    মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বাংলাদেশে ফেরার গল্পটি সিনেমার কাহিনীকে হার মানায়। পাকিস্তানি বাহিনীর নির্মমতার প্রতিবাদে লন্ডনের হাইড পার্কে যে কয়েকজন বাঙালি পাসপোর্ট ছিঁড়ে আগুন ধরে রাষ্ট্রবিহীন নাগরিকে পরিণত হয়েছিলেন তাদের একজন ডা. চৌধুরী। তারপর বৃটিশ স্বরাষ্ট্র দপ্তর থেকে ‘রাষ্ট্রবিহীন নাগরিকের’ প্রত্যয়নপত্র নিয়ে সংগ্রহ করেন ভারতীয় ভিসা। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম তার কালজয়ী সৃষ্টি ‘একাত্তরের দিনগুলি’র ১৬১-১৬২ পৃষ্ঠায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়ে লিখেছেন- ‘চেনা হয়ে উঠেছে ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ডা. এমএ মোবিন। এরা দুজনে ইংল্যান্ডে এফআরসিএস পড়ছিল। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে বিলেতে চার বছর হাড়ভাঙা খাটুনির পর যখন এফআরসিএস পরীক্ষা মাত্র এক সপ্তাহ পরে, তখনই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ শুরু। ছেলে দুটি পরীক্ষা বাদ দিয়ে বাংলাদেশ আন্দোলনে অংশ নিলো, পাকিস্তানি নাগরিকত্ব বর্জন করলো, ভারতীয় ট্রাভেল পারমিট যোগাড় করে দিল্লিগামী প্লেনে চড়ে বসলো। উদ্দেশ্য ওখান থেকে কলকাতা হয়ে রণাঙ্গনে যাওয়া। প্লেনটা ছিল সিরিয়ান এয়ারলাইন্স-এর। দামাস্কাসে পাঁচ ঘণ্টা প্লেন লেট, সবযাত্রী নেমেছে। ওরা দুইজন আর প্লেন থেকে নামে না। ভাগ্যিস নামেনি। এয়ারপোর্টে এক পাকিস্তানি কর্নেল উপস্থিত ছিল ওই দুইজন ‘পলাতক পাকিস্তানি নাগরিককে’ গ্রেপ্তার করার জন্য।

    প্লেনের মধ্য থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় না, কারণ প্লেন হলো ইন্টারন্যাশনাল জোন। দামাস্কাসে সিরিয়ান এয়ারপোর্ট কর্মকর্তা ওদের দুইজনকে জানিয়েছিল- ওদের জন্যই প্লেন পাঁচ ঘণ্টা লেট। এমনিভাবে ওরা বিপদের ভেতর দিয়ে শেষ পর্যন্ত মে মাসের শেষাশেষি সেক্টর টু রণাঙ্গনে গিয়ে হাজির হয়েছে।’

    যুদ্ধ যখন বিস্তার লাভ করে যুদ্ধক্ষেত্রে হতাহত যোদ্ধা, উদ্বাস্তু ও নির্যাতনের শিকার অসংখ্য নর-নারীর জরুরি চিকিৎসাসেবায় প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় একটি হাসপাতালের। মুক্তিযুদ্ধের ২ নং সেক্টরের কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফ ও  ভারতের জিবি হাসপাতালের প্রধান সার্জন ডা. রথিন দত্তের সহযোগিতায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদের প্রথম জিএস ডা. এমএ মবিনকে নিয়ে আগরতলার বিশ্রামগঞ্জের মেলাঘরে হাবুল ব্যানার্জির আনারস বাগানে গড়ে তোলেন প্রথম ফিল্ড হাসপাতাল- ‘বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল’। হাসপাতালটির কমান্ডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন ডা. সিতারা বেগম বীরপ্রতীক। সেসময় প্রশিক্ষিত নার্স না থাকায় নারী স্বেচ্ছাসেবীদের প্রাথমিক চিকিৎসার প্রশিক্ষণ দেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সে হাসপাতালের দুই স্বেচ্ছাসেবী ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল ও তার বোন সাঈদা কামাল। মুক্তিযুদ্ধের সময় অসংখ্য মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে ৪৮০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতাল। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনি ওসমানীকে বহনকারী যে হেলিকপ্টারটি হামলার শিকার হয়েছিল তাতে অন্যদের মধ্যে ছিলেন- ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

    দেশ স্বাধীন হওয়ার পর গ্রামে ফিরে গিয়ে স্বাস্থ্যযুদ্ধ শুরু করেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধের ফিল্ড হাসপাতালটি গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র নামে গড়ে তুলেন কুমিল্লায়। পরে সেটা স্থানান্তর করেন ঢাকার অদূরে সাভারে। এ ‘গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র’ নামটি দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কেন্দ্রের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডের জন্য বরাদ্দ দিয়েছিলেন প্রায় ৩১ একর জমি সরকারিভাবে। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পাইলট প্রজেক্ট গণস্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রাইমারি কেয়ার কনসেপ্ট মাঠে প্রমাণ করে এবং এর ভিত্তিতে হু আর ইউএনও আলমাআতা কনফারেন্সের মাধ্যমে গ্লোবাল ইউনিভার্সাল প্রাইমারি কেয়ার প্রকল্পের ঘোষণা দেয়। গ্লোবাল প্যারামেডিক যে কনসেপ্ট ও ট্রেইন্ড প্যারামেডিক দিয়ে মিনি ল্যাপারোটমির মাধ্যমে লাইগেশন সার্জারির উদ্ভাবক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এ সংক্রান্ত তার পেপারটি বিশ্ববিখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেট মূল আর্টিকেল হিসেবে ছাপা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের মূল পেডিয়াটিক্স টেক্সট বইয়ের একটা চ্যাপ্টার ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী লিখতেন অনেক বছর ধরে। দেশে-বিদেশে তার লেখা বই ও পেপারের সংখ্যা প্রচুর। প্রাইমারি কেয়ার নিয়ে লেখা তার সম্পাদিত ও প্রকাশিত একটি বই ‘যেখানে ডাক্তার নেই’-একসময় অবশ্য পাঠ্য ছিল বাংলাদেশের ঘরে ঘরে।

    স্বাধীনতা যুদ্ধের পর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ গঠনের লক্ষ্যে প্রথম বৈঠকটিতে সভাপতিত্ব করেছিলেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। পরে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রধান ছিলেন তিনি। ‘সাপ্তাহিক বিচিত্রা’ ছিল এদেশের মধ্যবিত্তের মৌলিক একটি প্রকাশনা। সর্বোচ্চ প্রচারণা ছিল বিচিত্রার প্রধান হাতিয়ার। সত্তর দশকের বিচিত্রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, মওলানা ভাসানী প্রমুখ ছাড়া হাতেগোনা যে ক’জন বিচিত্রার প্রচ্ছদে স্থান পেয়েছিলেন- ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাদের একজন। সোনালী ধানক্ষেতের ব্যাকগ্রাউন্ডে দাঁড়িয়ে আছেন ঝাঁকড়া চুলের তরুণ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এমন একটি ছবি প্রচ্ছদ করেছিল বিচিত্রা। ১৯৭৯ সাল থেকেই তিনি জাতীয় শিক্ষা কমিটির ও নারী কমিটির সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বাংলাদেশে শিক্ষা ও নারীনীতি প্রণয়নে। তবে গণস্বাস্থ্যের পর তার ম্যাগনাম ওপাস হচ্ছে ১৯৮২ সালের জাতীয় ঔষুধ নীতি। স্বাধীনতার পর স্বাস্থ্যখাতে যেটাকে বিবেচনা করা সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হিসেবে। তার প্রচেষ্টায় আমদানি ওষুধের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ২২৫। বর্তমানে ৯০ শতাংশ ওষুধই দেশে তৈরি হচ্ছে এবং বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে একটি ওষুধ রপ্তানিকারক দেশে। অথচ জাতীয় স্বাস্থ্যনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় ১৯৯২ সালে তার সদস্যপদ বাতিল করেছিল বিএমএ। বিনা বিচারে তার ফাঁসি চেয়ে পোস্টারও সাঁটিয়েছিল। তাকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা-বিশ্বাস করেন রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধারা। ফিল্ড হাসপাতালের সহযোগী চিকিৎসক ও গেরিলা যোদ্ধা ডা. মোরশেদ চৌধুরী আমৃত্যু কাজ করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। ফিল্ড হাসপাতালের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত চিকিৎসক এমএ মুবিন বাংলাদেশে এলে এখনো চিকিৎসা দেন গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে।

    স্বাধীন বাংলাদেশে বিভিন্ন সরকারের সময়ে মন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব পেয়েও ফিরিয়ে দিয়েছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। কিন্তু অনুপ্রাণিত করেছেন বহু ভালো পদক্ষেপ গ্রহণে। তার পরামর্শে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্রের পক্ষে পাসপোর্ট ইস্যু করে বিলেতের এক লাখ বাঙালির কাছ থেকে আবু সাইয়িদ চৌধুরীর সংগ্রহ করেছিলেন ১০ লাখ পাউন্ড চাঁদা। বঙ্গবন্ধুকে বহুজাতিক কোম্পানির দুর্নীতির বিষয়ে অবহিত করে সমাজতান্ত্রিক দেশ থেকে ঔষুধ আমদানিতে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। বাকশালে যোগ দিতে বঙ্গবন্ধুর অনুরোধ উপেক্ষা করেছিলেন। জিয়াউর রহমান মন্ত্রিত্বের প্রস্তাব দিলে বিএনপিতে স্বাধীনতাবিরোধী থাকায় চার পৃষ্ঠার চিঠির মাধ্যমে সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাধ্যমে নাগরিকের পাসপোর্ট পাওয়াকে সহজলভ্য ও নিশ্চিত করেছিলেন। ১৯৮০ সালে জিয়ার গড়া প্রথম জাতীয় মহিলা উন্নয়ন কমিটির দুই পুরুষ সদস্যের একজন হিসেবে প্রাথমিকে ৫০ শতাংশ মহিলা শিক্ষক ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ ছাত্রী নেয়ার সুযোগ করেছিলেন, যা কার্যকর হয়েছিল এরশাদ আমলে। জিয়াউর রহমানের আমলে পুলিশে মহিলা নিয়োগ দেয়া শুরু হলে দেশের প্রথম দুই নারী পুলিশ- হিসেবে নিয়োগ পান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মী হোসনে আরা ও চামেলী বেগম। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হতে উপেক্ষা করেছিলেন এরশাদের প্রস্তাব। তার পরামর্শেই এরশাদ আমলে পোস্টার, বিলবোর্ড বাংলায় লেখা ও সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলন, উপজেলাব্যবস্থা ও সফল জাতীয় ঔষুধনীতি ও জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি করেছিলেন।

    বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যেমন সর্বোচ্চ শ্রদ্ধার আসনে রাখেন, তেমনি কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে জিয়াউর রহমানের প্রতিও রয়েছে তার অকুণ্ঠ সম্মান। ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিহত হওয়ার পর সেদিন দুপুরে লন্ডনের হিথ্রো এয়ারপোর্টে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বৃটিশ সাংবাদিকদের বলেছিলেন- ‘তিনি নিজের রক্ত দিয়ে জাতির ঋণ পরিশোধ করে গেলেন।’

    শারীরিকভাবে খুব একটা সুস্থ নন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সপ্তাহে তিন দিন ডায়ালাইসিস’র ওপর নির্ভর করে একরকম বেঁচে আছেন। কিন্তু জনগণের অধিকার আদায়ের তাড়না যার হৃদয়ে- তাকে কি আদৌ ডায়ালাইসিস দমাতে পারে? তাকেও পারেনি! শরীরের এমন নাজুক অবস্থার মধ্যেও তিনি ছুটে বেড়াচ্ছেন অফুরন্ত মানসিক শক্তি নিয়ে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের রাজনীতিতে একটি সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে নানাভাবে তৎপরতা চালিয়ে আসছেন। রাজনৈতিক সংস্কারের দাবি জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে খোলা চিঠি দিয়েছেন। বৈঠক করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিও নানা পরামর্শ দিয়েছেন।

    বামপন্থি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন প্রথম জীবনে। দেশে-বিদেশে রয়েছে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা। জাতীয় সংকটে নিজের দায়বোধ থেকে তিনি উদ্যোগী হয়েছেন জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলায়। তিনি সুবিধাবাদী সুশীল নয়, একজন বিবেকবান বুদ্ধিজীবী। তিনি কোনো ‘বাঁকা চোখের’ পরোয়া করেননি। সম্প্রতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সেনাবাহিনী প্রধান সম্পর্কে একটি ভুল তথ্য উপস্থাপন করে একটি বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেটা উপলব্ধি করে তিনি পরদিনই সংবাদ সম্মেলন করে এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর চাঁদাবাজি, জমিদখল, পুকুরের মাছ চুরির অভিযোগসহ একের পর এক মামলা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দুটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের এন্টিবায়োটিকের কাঁচামাল জব্দ ও এন্টিবায়োটিক বিভাগ সিলগালা ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করে ১৫ লাখ টাকা। গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখার অভিযোগে হাসপাতালকে আরো ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে। অথচ সাধারণ মানুষকে কমদামে ওষুধ সরবরাহ করতে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দামি অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের বদলে ট্যাবলেট তিনি প্যাকেট করার প্রচলন করেন সাধারণ কাগজে।

    ২০১৫ সালে বৃটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানের আদালত অবমাননার সাজায় উদ্বেগ জানিয়ে বিশিষ্ট নাগরিকদের বিবৃতি দেয়ার ঘটনায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে এক ঘণ্টার কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল। তার প্রতিষ্ঠিত গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে মাত্র এক হাজার ২০০ টাকায় ডায়ালাইসিস করতে পারেন দরিদ্র মানুষ। তার প্রতিষ্ঠিত গণবিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর স্বামী প্রয়াত বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া। যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীকে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস, জেন্ডার ইস্যু, নীতিবিদ্যা ও সমাজ, পরিবেশবিদ্যা, ইংরেজি এবং বাংলা অবশ্যই পড়তে হয়। দরিদ্র ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে সংরক্ষিত আসন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দাপ্তরিক কাজ হয় বাংলাভাষা ও বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসারে। বাংলাদেশের পাবলিক হেলথ সার্ভিসের এই আইকন সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক স্বাধীনতা পদক পান ১৯৭৭ সালে পদকটি প্রবর্তনের বছর। বিকল্প নোবেল খ্যাত র?্যামন ম্যাগসাই পান  ১৯৮৫ সালে। এ ছাড়া ১৯৭৪ সালে সুুইডিশ ইয়ুথ পিস প্রাইজ, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার, ১৯৯২ সালে সুইডেনের লাইভ লাই হুড পুরস্কার, ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইন্টারন্যাশনাল পাবলিক হেলথ হিরোজ’ পুরস্কার লাভ করে।

    ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে নিয়ে করা মূল প্রতিবেদনটি সাংবাদিক কাফি কামালের লেখা। প্রকাশিত হয়েছিল বাংলাদেশের একমাত্র ট্যাবলয়েড পত্রিকা মানবজমিনে। 

    জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।
    Related Posts
    সাবেক সেনাদের আন্দোলন

    সাবেক সেনাদের আন্দোলন ঘিরে আইএসপিআরের অবস্থান পরিষ্কার

    May 19, 2025
    দুই ঘূর্ণিঝড় এক সপ্তাহে

    দুই ঘূর্ণিঝড় এক সপ্তাহে, উপকূলে আঘাত হানবে কবে?

    May 19, 2025
    বিকেএসপি

    ‘আমরা সরকার গঠন করলে প্রতিটি বিভাগে একটি করে বিকেএসপি প্রতিষ্ঠা করব’

    May 19, 2025
    সর্বশেষ সংবাদ
    জো বাইডেন প্রোস্টেট
    জো বাইডেন প্রোস্টেট ক্যানসারে আক্রান্ত, ছড়িয়ে পড়েছে হাড় পর্যন্ত
    নুসরাত ফারিয়াকে
    নুসরাত ফারিয়াকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন পুলিশের
    স্নাতক থাকলেই আল-আরাফাহ
    স্নাতক থাকলেই আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে চাকরি
    বীরগ‌ঞ্জে ট্রাক
    বীরগ‌ঞ্জে ট্রাক-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে প্রাণ গেল ২ জনের
    আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায়
    আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান তারেক রহমানের
    আদালতে নুসরাত ফারিয়া
    আদালতে নুসরাত ফারিয়া
    সাবেক সেনাদের আন্দোলন
    সাবেক সেনাদের আন্দোলন ঘিরে আইএসপিআরের অবস্থান পরিষ্কার
    বিশ্ববিদ্যালয়
    নতুন বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রম শুরু না হওয়া পর্যন্ত ইউজিসির অধীনে চলবে ৭ কলেজ
    জুলুম
    ইসলামে জুলুম এক মহা অপরাধ
    কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায়
    কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় ফের উত্তেজনা, নিহত ভারতীয় সেনা
    • About Us
    • Contact Us
    • Career
    • Advertise
    • DMCA
    • Privacy Policy
    © 2025 ZoomBangla News - Powered by ZoomBangla

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.