জুমবাংলা ডেস্ক : ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সূচনা ঘটেছিল কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার সেই আন্দোলনে দমন-পীড়ন চালানোয় তা গণ-অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর পাঁচ মাসের বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। দেশে বদলে গেছে অনেক কিছু। তবে বদলায়নি গাজীপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি)। মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সব কোটা বহাল রেখেই ২৮টি পদের বিপরীতে ১৪৩ জনকে নিয়োগ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আজকের পত্রিকার প্রতিবেদন থেকে বিস্তারিত-
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, নানা মহল এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিদের আপত্তি সত্ত্বেও গত ২৬ ডিসেম্বর নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নিয়োগপ্রাপ্তদের নাম বারির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, কোটাবিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এ নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের জন্য বারির বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) ড. মো. আব্দুল্লাহ ইউসুফ আখন্দ, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন স্থানে লিখিত আবেদন করা হয়। নানা আপত্তি সত্ত্বেও বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাছাইকৃত লোকদেরই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যাঁরা নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁদের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছিলেন ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সমর্থক, মন্ত্রী-এমপিরা।
সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র বলেছে, ২০২৩ সালের ২৮ আগস্ট বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তৎকালীন ডিজি দেবাশিষ সরকার ২৮টি পদের বিপরীতে ১৪৩ জনকে নিয়োগের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সব কোটা বহাল রেখে একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে আবেদন আহ্বান করেন। পরে আওয়ামী লীগের মতাদর্শের লোকদেরই নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। বর্তমান ডিজি ড. মো. আব্দুল্লাহ ইউসুফ আখন্দ সে সময় বারির পরিচালক (গবেষণা) পদে কর্মরত ছিলেন। ৫ আগস্টের পর বারির বিজ্ঞানীরা নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে সাবেক ডিজি দেবাশিষ সরকারের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ৫ আগস্টের পর তিনি আর অফিসে যাননি।
গত ২২ অক্টোবর দেশপ্রেমিক সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিলের জন্য মো. রুকোনুজ্জামান সরকার ও নাজমুল খন্দকার সুমন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বিভিন্ন জায়গায় লিখিত আবেদন করেন। তবে সে আবেদন আমলে নেননি সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যেই বারির ডিজি হন ড. মো. আব্দুল্লাহ ইউসুফ আখন্দ। এ পদে আসীন হয়েই তিনি আগের সরকারের সময় জারি করা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির আলোকে নিয়োগ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে উদ্যোগী হন। বিভিন্ন মহলের দাবি উপেক্ষা করে গত ২৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত নিয়োগ তালিকা প্রকাশ করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানান এবং গত ২৯ ডিসেম্বর ছয় ছাত্র প্রতিনিধি ডিজির কাছে লিখিত আবেদন করেন।
এ বিষয়ে বারির ডিজি ড. মো. আব্দুল্লাহ ইউসুফ আখন্দ বলেন, ‘সব রকম কোটা বহাল রেখে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া আগেই চূড়ান্ত করা হয়েছিল। আমি শুধু পুলিশ ভেরিফিকেশন করার পর চূড়ান্ত নিয়োগপত্র দিয়েছি।’ তিনি দাবি করেন, চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়ার আগে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।