জুমবাংলা ডেস্ক : গরু চুরির অপবাদে ছৈয়দ আহমদ (১৮) নামের এক তরুণকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাতভর অমানুষিক নির্যাতন চালানোর অভিযোগ ওঠেছে। তার গলায় জুতার মালা ঝুলানো হয়েছে। এমনকি মাটি কাটার কোদাল দিয়ে কেটে দেয়া হয়েছে তার মাথার চুলও।
আর এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে এলাকার একজন ইয়াবা কারবারি ও মানবপাচারকারীর নেতৃত্বে। অন্যদিকে গ্রামের শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধরা প্রতিবাদ না করে এমন অমানবিক দৃশ্যটি উপভোগ করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের পশ্চিম সোনার পাড়া মোনাফ মার্কেট এলাকায়। গত শুক্রবার রাত ১০টা থেকে শনিবার সকাল ১১টা পর্যন্ত সময়ে এই ঘটনা ঘটেছে। পরে ঘটনাস্থল থেকে ওই কিশোরকে উদ্ধার করে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো হয়।
এলাকাবাসী জানান, নির্যাতনের শিকার ছৈয়দ আহমদ পশ্চিম সোনার পাড়া এলাকার বৃদ্ধ দিনমজুর জাকির হোসেনের ছেলে। মোনাফ মার্কেট নামক এলাকায় একটি ছোট চা দোকান আছে তার। ১২ ঘণ্টা ধরে তাকে নির্যাতন করা হলেও এলাকার লোকজন ভয়ে তাকে উদ্ধারে যেতে পারেনি।
ঘটনায় জড়িত একই এলাকার শামসুল আলমের ছেলে জালাল উদ্দিন (৩৫) এলাকার একজন দাপুটে ব্যক্তি হিসাবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে ইয়াবা ও মানবপাচারের বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এলাকার ‘রেবি ম্যাডাম’ হিসাবে পরিচিত একজন নারী মানবপাচারকারীর ভাই হচ্ছেন জালাল।
ঘটনার ব্যাপারে জালিয়া পালং ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার রফিকুল্লাহ জানান, ছৈয়দ আহমদ একজন ক্ষুদ্র চা দোকানি। মুহাম্মদ নামের এক ব্যক্তির গরু চুরির অভিযোগে তাকে বাজার থেকে ধরে নিয়ে বেঁধে রাখার খবর পেয়ে আমি নিজেই সেখানে যাই। বিষয়টি স্থানীয় ইনানী ফাঁড়ির পুলিশ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিক অবহিত করি।
তিনি আরো জানান, যে গরুটি চুরির অভিযোগ করা হয় সে গরুটি মুহাম্মদের বাড়িতেই ছিল। তবুও অপরাধী হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে মারধর না করতে অনুরোধ করি। কিন্তু তা অমান্য করেই নির্যাতনকারীরা তাকে মারধর করতে থাকে। গরুর মালিক মুহাম্মদের প্রতিবেশী জালাল উদ্দিন সেখানে গিয়ে নির্যাতনে যোগ দেয়। তার সঙ্গে যোগ দেয় আরো কয়েকজন।
ইউপি মেম্বার জানান, জালাল ইয়াবা ও মানবপাচারের মামলার আসামি।
তিনি আরো বলেন, রাতভর ওই ছেলেটিকে নির্যাতন করা হয়। জালাল নামের দাপুটে লোকটি এক পর্যায়ে মাটি কাটার কোদাল দিয়ে কিশোরের মাথার চুল কাটার চেষ্টা করে। কোদালে না পেরে পরে ক্ষুর দিয়ে তার মাথা ন্যাড়া করে দেয়। পরে গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) জাহাঙ্গীরকে ডেকে এনে আহমদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার ব্যাপারে অভিযুক্ত জালাল উদ্দিন কিশোর নির্যাতনের বিষয়টি অকপটে স্বীকার করে বলেন, এলাকায় গরু চুরি যাতে না হয় সেজন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ইনানী ফাঁড়ির দায়িত্বরত পরিদর্শক জিয়াউদ্দিন বলেন, কিশোর নির্যাতনের ঘটনার কথা শুনেছি। কিন্তু আমরা সবাই অন্যত্র বদলি হওয়ার কারণে মামলা মোকদ্দমা বুঝিয়ে দিতে একটু ব্যস্ত, তাই ঘটনা দেখার সময় করতে পারছি না। ফাঁড়িতে নতুন যোগ দিতে আসা পরবর্তী পুলিশ কর্মকর্তারা দায়িত্ব নিয়ে বিষয়টি দেখবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।