সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে এক কাপ চা বা কফি খাওয়ার অভ্যাস আমাদের অনেকেরই। চা-কফি খেলে স্নায়ু উদ্দীপ্ত হয়। আর, এই কাজটা করে ক্যাফেইন। জন্ম ও প্রক্রিয়াজাত কোথায় হয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে চা-কফিতে ক্যাফেইনের মাত্রা ভিন্ন হয়। তবে গড়ে ১০০ গ্রাম চা-তে প্রায় ১১ গ্রাম ক্যাফেইন থাকে, আর কফিতে প্রতি ১০০ গ্রামে থাকে ৪০ গ্রাম। সেজন্যই কফি ঘুম তাড়ানো বা স্নায়ু উদ্দীপ্ত করার কাজে বেশি কার্যকরী।
ক্যাফেইনের রাসায়নিক নাম ১-৩-৭ ট্রাইমিথাইলজ্যানথিন। সংকেত C8H10N4O2। খাওয়ার পর এটা দ্রুতই রক্তের মাধ্যমে চলে যায় যকৃতে। সেখানে ভেঙ্গে যায়। তারপর প্রভাব ফেলে বিভিন্ন অঙ্গ ও অঙ্গাণুতে। তবে এর মূল প্রভাব মস্তিষ্কে। অ্যাডেনোসিন নামে এক ধরনের নিউরোট্রান্সমিটার আছে মস্তিষ্কে।
এটি মস্তিষ্ককে শিথিল করে। ফলে দেহে ক্লান্তি বোধ হয়। সারাদিনব্যাপী অ্যাডেনোসিনের মাত্রা বেড়ে চলে। একসময় তাই ক্লান্তিতে ঘুম চলে আসে। ক্যাফেইন এই অ্যাডেনোসিনকে আটকে দেয়। ফলে শরীর ক্লান্ত হওয়ার সংকেত পায় না মস্তিষ্ক থেকে। পাশাপাশি, রক্তে অ্যাড্রেনালিন ক্ষরণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ক্যাফেইন।
এটি মানুষের উত্তেজিত বোধের জন্য দায়ী হরমোন। এছাড়াও, ডোপামিন এবং নর-এপিনেফ্রিন ক্ষরণের মাত্রাও বাড়িয়ে দেয়। নর-এপিনেফ্রিন অ্যাড্রেনালিনের সঙ্গে মিলে হার্টবিট বা হৃৎকম্পনের হার বাড়িয়ে দেয়। হৃৎপিণ্ড তখন দ্রুত সংকুচিত-প্রসারিত হয়। ফলে, দেহে উদ্দীপ্ত বোধ হয়।
পৃথিবীর প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ প্রতিদিন অন্তত একটি ক্যাফেইনযুক্ত খাবার খান বা পানীয় পান করেন। এক গবেষণা থেকে দেখা গেছে, ক্যাফেইনের বেশ কিছু উপকার আছে। এটি মস্তিষ্কে অ্যালঝাইমার বা এ ধরনের স্নায়বিক রোগ হওয়ার হার অনেক কমিয়ে দেয়। তবে দিনে ৩ কাপের (প্রতি কাপ ২৪০ এমএল ধরে) বেশি ক্যাফেইন (পড়ুন, কফি, যেহেতু ক্যাফেইন সরাসরি খাওয়া হয় না) খাওয়া অর্থহীন। এরকম এক কাপ কফিতে থাকা ক্যাফেইন প্রায় আটঘণ্টা সক্রিয় থাকে।
তবে অতিরিক্ত ক্যাফেইন গ্রহণে ক্যাফেইননির্ভরতা তৈরি হয়। তখন ক্যাফেইন না খেলে মাথাব্যথা, অস্বস্তি লাগা, হৃৎকম্পনের হার বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। সেজন্য চা-কফি অতিরিক্ত খাওয়া ও এর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া উচিৎ নয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।