ক্যামেরা-ব্যাটারিসহ যত চমক নিয়ে আসছে আইফোন ১৫
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: নিত্যনতুন প্রযুক্তি নিয়ে প্রতি বছর আইফোনে হাজির হয় অ্যাপল। যা বরাবরই স্মার্টফোনের জগতে নতুন ধারার প্রবর্তনের পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বী ব্র্যান্ডগুলোর থেকে ব্যতিক্রম। নতুনত্বের কারণেই সব কিছু ছাপিয়েও ক্রেতাদের আগ্রহ এবং ক্রয় তালিকার শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে আইফোন।
আইফোনের অন্যতম মূল আকর্ষণ এর ক্যামেরা। বাজারের প্রায় সবার শেষে ৪৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা ফিচার যুক্ত হয়েছিল আইফোন ১৪ সিরিজের প্রিমিয়াম মডেলগুলোতে; যা এবার ১৫ সিরিজের সব ফোনে থাকবে বলে জানা যাচ্ছে। চলতি বছর থেকে সনি গ্রুপ অ্যাপলের কাছে তাদের ‘স্টেট-অব-দ্য-আর্ট’ ইমেজ সেন্সর সরবারহ করছে। সনির এই নতুন ইমেজ সেন্সর প্রচলিত সেন্সরগুলোর তুলনায় প্রতিটি পিক্সেলের স্যাচুরেশন সিগন্যাল লেভেলকে প্রায় দ্বিগুণ হারে বাড়াবে। ক্যামেরার অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে পেরিস্কোপ ক্যামেরার ব্যবহার এগিয়ে আছে। তবে, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যমতে, শুধু আইফোন ১৫ প্রো ম্যাক্সের টেলি-ফটো ক্যামেরার জন্য পেরিস্কোপ লেন্স সিস্টেম ব্যবহার করা হবে।
আইফোন ১৪ প্রো ম্যাক্সে ৩এক্স অপটিক্যাল জুম সুবিধা ছিল, কিন্তু ১৫ প্রো ম্যাক্সে ৬এক্স অপটিক্যাল জুম করা যাবে।
আইফোন ১৫ সিরিজের প্রিমিয়াম মডেল আইফোন ১৫ প্রো এবং প্রো ম্যাক্স অ্যাপলের পরবর্তী প্রজন্মের এ১৭ চিপ ব্যবহার করতে পারে। এ১৭ চিপটি তাইওয়ান সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির (টিএসএমসি) ৩-ন্যানোমিটার প্রক্রিয়ায় নির্মিত প্রথম এ-সিরিজ চিপ। ১৪ সিরিজের নন-প্রিমিয়াম মডেলে এ১৫ এবং প্রিমিয়াম মডেলে ছিল এ১৬ চিপ, যা ১৫ সিরিজের নন প্রিমিয়াম ফোনে পাওয়া যাবে।
৩ ন্যানোমিটারের এই চিপটি আগের ফোনগুলোর তুলনায় অনেক দ্রুত কাজ করবে, খুব অল্প ব্যাটারিতে চলতে সক্ষম বিধায় ফোন থাকবে ঠাণ্ডা। এ১৭ চিপ আইফোন ১৫ সিরিজের প্রিমিয়াম মডেলগুলোর কর্মক্ষমতা ও ব্যাটারির আয়ু উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি করবে। নতুন এই ৩ ন্যানোমিটারের চিপটি প্রসেসিং ক্ষমতা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বাড়ানোর পাশাপাশি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ খরচ কমিয়ে দিবে বলে আশা করছে উৎপাদক কোম্পানি টিএসএমসি।
২০২৩ সালে আইফোনের সবগুলো ফোনেই ইন্টারনেটের দ্রুত প্রসেসিং গতি, অধিক কভারেজ পরিসীমা, বর্ধিত পাওয়ার দক্ষতা এবং কম ল্যাটেন্সির জন্য উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই)-সহ কোয়ালকমের পরবর্তী প্রজন্মের এক্স৭০ চিপগুলো ব্যবহার করবে।
আইফোন ১৫ সিরিজে ১৪ সিরিজের মতো ২টা আকারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে, যার একটি ৬ দশমিক ১ ইঞ্চির এবং অন্যটি ৬ দশমিক ৭ ইঞ্চির। একই সঙ্গে ওলেড (অর্গানিক লাইট-এমিটিং ডায়োড) ডিসপ্লে সুবিধা থাকছে। এর পাশাপাশি ১৪ সিরিজে আসা ডাইনামিক আইল্যান্ডে ফ্রন্ট ক্যামেরা ও ফেস আইডি হার্ডওয়ার থাকছে।
১৪ প্রো মডেলের তুলনায় ১৫ প্রো মডেলে থিনার, কার্ভড বেজেল থাকতে পারে। এ ছাড়া প্রিমিয়াম মডেল দুটোর ফ্রেমে স্টেইনলেস স্টিলের বদলে টাইটানিয়াম চেসিস ব্যবহার হতে পারে বলে জানা গেছে। টাইটানিয়াম স্টিলের চেয়ে বেশি হাল্কা এবং মজবুত। অ্যাপল ইতোমধ্যে তাদের ঘড়িতে টাইটানিয়াম ব্যবহার করেছে।
প্রিমিয়াম মডেলের আরো একটা পরিবর্তন দেখা যেতে পারে এর সাইড বাটনে। অ্যাপল এই সিরিজের জন্য আগের সিরিজের ফিজিক্যাল বাটনের পরিবর্তে হ্যাপটিক প্রতিক্রিয়াসহ সলিড-স্টেট বাটনগুলো গ্রহণ করতে পারে। সলিড-স্টেট পাওয়ার ও ভলিউম বাটনগুলো দেখতে ফিজিক্যাল বাটনের মতোই, চাপ দিলে ফিজিক্যাল বাটনের মতোই অনুভূত হবে।
তবে সলিড বাটন স্পর্শ করার সময় অনুভূতি হলেও সেখানে বাস্তবে কোনো বাটন আসলে থাকবে না। এই প্রযুক্তি ইতোমধ্যে আইফোন এসই, ম্যাকবুক প্রো ও ম্যাকবুক এয়ারে দেখা গেছে। সলিড-স্টেট বাটন প্রযুক্তিতে স্পর্শ করলে বাটন অনুভূত হলেও সেখানে বাটন থাকবে না, বাটন থাকবে ফ্রেমের ভেতরে। ফলে, ফোন ধুলাবালি এবং পানি থেকে সুরক্ষা মিলবে।
আইফোন ১৫ মডেলগুলো দিয়ে অ্যাপল ইউএসবি-সি পোর্টের যুগে প্রবেশ করতে পারে। আইফোন-১৫ সিরিজের সব ফোনেই ইউএসবি-সি পোর্ট থাকলেও কেবল প্রিমিয়াম মডেলের ব্যবহারকারীরা উচ্চ-গতির ডাটা ট্রান্সফারের সুবিধা পাবে। প্রিমিয়াম মডেলে ইউএসবি ৩ দশমিক ২ বা থান্ডারবোল্ট ৩ ট্রান্সফার সুবিধা দেয়া হবে।
সবশেষ আইফোন-১৪ সিরিজের ফোনে রিভার্স ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধা থাকার গুঞ্জন থাকলেও তা পিছিয়ে যায়। আইফোন-১৫ সিরিজের ফোনে এই প্রযুক্তির দেখা পাওয়া পাওয়া যেতে পারে। এটি এমন এক ফিচার যার মাধ্যমে কেউ তার ফোনের পেছনে ওয়্যারলেস-চার্জ-যোগ্য ইয়ারবাড রাখলে ইয়ারবাডগুলো চার্জ হবে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে অন্য ফোন এবং ডিভাইস চার্জ দেওয়া সম্ভব। অর্থাৎ, এই প্রযুক্তির ফোন পাওয়ার ব্যাংকের মতো কাজ করবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।