আন্তর্জাতিক ডেস্ক: হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণের দাবি করে ইরান ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্দেশ্যে নতুন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছে৷ এর আগে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিকেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিল তেহরান৷ খবর ডিপিএ ও এএফপি’র।
ইউক্রেনের উপর হামলা শুরু করার পর রাশিয়ার মতো অস্ত্র উৎপাদনকারী দেশকেও ইরান ও উত্তর কোরিয়ার মতো সহযোগী দেশের কাছে সহায়তা চাইতে হয়েছে৷ বিশেষ করে ইরানে তৈরি আক্রমণাত্মক ড্রোন ইউক্রেনের শহরগুলিতে ধ্বংসলীলা চালিয়ে যাচ্ছে৷ এবার সে দেশের এক সামরিক কর্মকর্তা হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির দাবি করেছেন৷ রেভোলিউশনরি গার্ড বাহিনীর এয়ারোস্পেস ইউনিটের কমান্ডার জেনারেল
আমিরআলি হাজিজাদেহ বলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র বিশ্বের যে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ প্রণালী ভেদ করে আঘাত হানার ক্ষমতা রাখে৷ উল্লেখ্য, এখনো পর্যন্ত রাশিয়া, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করতে পেরেছে৷
রাশিয়া ও ইরান বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বের কড়া নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে আটকে রয়েছে৷ কোণঠাসা অবস্থায় মস্কো ও তেহরান আরও জোরালো সহযোগিতার পথে এগিয়ে চলেছে৷ বুধবার রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান নিকোলাই পাত্রুশেভ তেহরানে আলোচনার জন্য উপস্থিত ছিলেন৷ মস্কোর সূত্র অনুযায়ী ‘সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা’-র বিরুদ্ধে সংগ্রাম এবং পশ্চিমা জগতের হস্তক্ষেপের বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়েছে৷ এর ঠিক দিন পর হাইপারসোনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির ঘোষণা নিয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে৷
গত ৫ নভেম্বর ইরান জানিয়েছিল, যে সে দেশ মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠাতে সক্ষম এক রকেটের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে৷ মার্কিন প্রশাসন ইরানের এমন সব প্রচেষ্টা সম্পর্কে গভীর দুশ্চিন্তা প্রকাশ করে আসছে৷
শুধু আন্তর্জাতিক আঙিনা নয়, অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভ নিয়েও ইরানের নেতৃত্ব কোণঠাসা হয়ে পড়ছে৷ বৃহস্পতিবার জার্মানি জানিয়েছে, দমন নীতির জের ধরে ইরানের উপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর তোড়জোড় করছে ইইউ৷ জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক বলেন, ‘‘যত দিন সময় লাগুক না কেন, আমরা ইরানের নারীপুরুষের পাশে দাঁড়াচ্ছি৷’’ এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে জার্মানি তথা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে মানানসই ও জোরালো জবাব দেবার হুমকি দিয়েছে ইরানের সরকার৷ শুক্রবারই ব্রাসেলসে ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক বসছে৷
ইরান বুধবার সৌদি আরবসহ অন্যান্য আঞ্চলিক দেশগুলির উদ্দেশ্যেও স্থিতিশীলতা বিপন্ন করারা বিষয়ে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে৷ সে দেশের গোয়েন্দা বিষয়ক মন্ত্রী এসমাইল খাতিব বলেন, তেহরানের ‘কৌশলগত ধৈর্য্য’-এর সীমা রয়েছে৷ বৈরি পদক্ষেপ চলতে থাকলে সেই ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙে যেতে পারে বলে তিনি সতর্ক করে দেন৷ ফার্সি ভাষায় বৈরি সংবাদমাধ্যমকে সুযোগ দেবার জন্য তিনি ব্রিটেনকেও সতর্ক করে দিয়েছেন৷
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার পাশে দাঁড়ালেও ইরান এখনো ২০১৫ সালের আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে৷ আপাতত আলোচনা মুলতুবি থাকলেও কোনো এক সময় বোঝাপড়ার মাধ্যমে ইরান নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেতে আগ্রহী৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।