কুবি প্রতিনিধি: গত ১৫ জানুয়ারি খাবারের দাম ও মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস সংলগ্ন খাবারের দোকান তালা দেয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সাথে দোকানি ও শিক্ষার্থীরা আলোচনার মাধ্যমে সকলের মতামতের ভিত্তিতে নতুন মূল্য নির্ধারণ করে।
নতুন মূল্য তালিকা ঘোষণা হওয়ার সাথে সাথে দোকানদাররা খাবারের মান ও পরিমাণও কমিয়েছে বলে অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ নতুন মূল্য তালিকা অনুযায়ী তারা লোকসানে দোকান চালাচ্ছেন। শিগগিরই নতুন মূল্য তালিকা চান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ১৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ফয়সাল আলম বলেন, ‘খাবারের দাম খুব একটা পরিবর্তিত হয়নি। যে ৫-১০ টাকা পরিবর্তিত হয়েছে, তার বিনিময়ে খাবারের পরিমাণ কমেছে। তাই আমাদের আন্দোলনের কোনো মূল্য থাকলো না। কারণ, দিনশেষে আমরা নির্দিষ্ট দামে গুণগত মান সম্পন্ন খাবার পাচ্ছি না।’
খাবারের মানের উদাহরণ টেনে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম আবর্তনের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ লাবিব আহমেদ বলেন, ‘যে খাবারের আইটেম উনারা ৪৫ টাকা রাখার কথা ওইটা উনারা ৫০ টাকা রাখছেন। মাংসের পিসও ছোট করে ফেলেছেন। আবার, সার্ভিসও আগের মতো পরিচ্ছন্নতা নেই।’
একই অভিযোগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসনের শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘সবজির সাথে যে ডাল ফ্রি দেওয়ার কথা ছিল সেটি আসলে উনারা দিচ্ছেন না, দিলে তার বিনিময়ে ৫ টাকা বাড়তি চাচ্ছেন।’
এইসব অভিযোগের বিপরীতে নির্ধারিত মূল্য তালিকায় স্বাক্ষর করা বিশ্ববিদ্যালয় ফটক সংলগ্ন মামা হোটেলের মালিক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘এই মূল্য তালিকার জন্য আমাদের প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা লস হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের কোনো ভর্তুকি দিচ্ছে না। আমরা এখানে ব্যবসা করে লাভের জন্যই দোকান নিয়ে বসছি। আমরা শিগগিরই প্রক্টর স্যারের সাথে এই তালিকা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য কথা বলব।’
একই প্রশ্নের উত্তরে আল মদিনা হোটেলের মালিক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি মূল্য তালিকায় নির্ধারিত দামে পূর্বেই বিক্রি করতাম, তাই আমার দোকানে তেমন একটা প্রভাব পড়েনি। শুধু সিঙ্গারা-সমুচার দাম কমাতে হয়েছে। তাই সমুচার সাইজও ছোট করে ফেলছি। কারণ, পেয়াজের দাম বেশি। আর ৪৫ টাকা প্রতি প্লেটমূল্যে তেহারি বিক্রি করা আমাদের লস হয়ে যায়। হয়তো সামনে নিম্নমানের চাল ব্যবহার করলে এই লস সামলানো যাবে।’
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ও ব্যবসায়ীদের অসন্তুষ্টতার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ‘প্রথমত আমরা যে দাম নির্ধারণ করেছি তা সম্পূর্ণ অনানুষ্ঠানিক। কারণ, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরের হোটেলের দাম আনুষ্ঠানিকভাবে কমাতে পারি না। যেহেতু শিক্ষার্থীরা অভিযোগ দিয়েছিল সেই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষার্থী এবং হোটেল মালিকেরাসহ আমরা সবাই মিলে আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই দামে বিক্রি করার জন্য। এটি শুধু নিজেদের মধ্যে একটি অনানুষ্ঠানিক আলোচনা। এখন যদি দাম কমে যাওয়ায় খাবারের মান কমে গেছে এমন কোনো অভিযোগ আসে তাহলে আমরা আবার হোটেল মালিকদের সাথে বসবো।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।