জুমবাংলা ডেস্ক : পাঁচ দিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার জয় বাংলা গ্রামের বাসিন্দা বাবুল (৪০)। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ঘণ্টাখানেক পর বাবুলের মৃত্যু হয়।
পরিবারের অভিযোগ- এই সময়টা তারা হাসপাতালের বহির্বিভাগ এবং জরুরি বিভাগে দৌড়াদৌড়িতেই পার করেছেন। করোনা সন্দেহে কোনো ডাক্তারই তাকে চিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসেননি। যার কারণে বাবুলের মৃত্যু হয়েছে।
বাবুলের বড় বোন জাহানারা বেগম বলেন, শুক্রবার থেকে বাবুল জ্বরে ভুগছিল। প্রথমে তাকে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। এতে জ্বর কমেনি। চারদিকে করোনার কথা শুনছি। এ কারণে উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ (বৃহস্পতিবার) ১২টার পর তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। হাসপাতালের বহিবির্ভাগ থেকে জানানো হয় ১২টার পর কোনো রোগী দেখা হয় না। তারা আমাদেরকে জরুরি বিভাগে যোগাযোগ করতে বলেন। জরুরি বিভাগে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশরাফুর রহমান রোগের লক্ষণ জানতে চান। আমরা তাকে জ্বরের কথা বলি। জ্বর শুনেই ডাক্তার আমাদেরকে দূরে সরে বসতে বলেন। এরপর তিনি বলেন, আপনারা হাসপাতালের আরএমওর কাছে যান। এরপর আরএমও অঞ্জন চক্রবর্তীর রুমে যাই।
তিনি রোগের লক্ষণ শুনে আমাদের আবারও বহির্বিভাগে যেতে বলেন। এর মধ্যে আমার ভাই বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। দ্রুত আমরা কর্মচারীদের স্ট্রেচারে করে নিয়ে যেতে অনুরোধ জানাই। তবে তারা আমাদের কাছে ভেড়েনি। বাধ্য হয়ে আমরা সেখান থেকে হেঁটে বহির্বিভাগের বারান্দায় যাই।
এ সময় আমার ভাই আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বহির্বিভাগের সিঁড়িতে লুটিয়ে পড়ে আমার ভাই। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমরা গত পাঁচ দিন একসঙ্গে রয়েছি। করোনা হলে তো আমরাও আক্রান্ত হতাম।
কিন্তু আমরা সবাই সুস্থ রয়েছি। শুধু সন্দেহের বশবর্তী হয়ে ডাক্তারদের এমন অবহেলার শিকার হলাম। মারা গেল আমার ভাই। তার দুটি সন্তান রয়েছে। একজনের বয়স পাঁচ। আরেকজনের তিন। ওদের এখন কী হবে?
রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে জরুরি বিভাগের ডাক্তার আশরাফুর রহমান বলেন, প্রথমত আমি মেডিসিনের ডাক্তার নই। ওই রোগী ইমার্জেন্সিতে এলে আমি রোগের বিবরণ শুনে আরএমওর কাছে যেতে বলি। এরপরের খবর আমি জানি না।
খুমেকের পরিচালক টিএম মনজুর মোরশেদ বলেন, আমি সারা দিন বাইরে আছি, ঘটনাটি শুনেছি। তবে করোনা আক্রান্ত হলেও খুমেকে রোগী ভর্তির ব্যবস্থা আছে। আমি যতটুকু শুনেছি আরএমও তাকে বহির্বিভাগে দেখাতে বলেছিলেন। ওই রোগী কোন রোগে আক্রান্ত ছিলেন, তা ডায়াগনোসিস করার আগেই তিনি মারা যান। এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।