জুমবাংলা ডেস্ক: সম্পূর্ণ কাঠ-বাঁশ দিয়ে তৈরি তিন তলা ভবন। দেখতে অভিজাত কারো বাড়ি মনে হলেও এটি আসলে একটি রেস্তোরাঁ। দেশীয় বিভিন্ন কারুকাজ আর নান্দনিকতায় নির্মিত এই রেস্তোরাঁটি খুলনার আড়ংঘাটার তেলিগাতী বাইপাস সড়কের পাশেই অবস্থিত। রাতের আঁধারে বাইরের দৃশ্যকে ফুটিয়ে তুলতে প্রায় লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে মরিচবাতির টিস্যুবক্সের আকর্ষণীয় আলোকসজ্জার কাজও করা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন ও ব্যয়বহুল কাঠমান্ডু রেস্তারাঁটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
গত বছরের প্রথম দিকে রেস্তোরাঁটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। স্থাপনাটি আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে শুরু থেকে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ১২ জন কাঠমিস্ত্রি ও পরবর্তিতে অরও ৬ জন মিস্ত্রি মিলে কাজ করেন। প্রায় এক বছর চার মাস তারা তিন শতাংশ জমির ওপর এই কাঠমান্ডু রেস্তোরাঁটি নির্মাণে কাজ করেছেন। ভবনটি কাঠ ও বাঁশ দিয়ে সাদা ও লাল রঙের সংমিশ্রণে তৈরি করা হয়েছে।
বিশ্ব কবি রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিরবাড়ি এবং শরৎচন্দ্র চট্টপাধ্যায়ের কাঠের তৈরী স্থাপনা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে খানজাহান আলী টেকনিক্যাল এন্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ বিশ্বাস প্রায় ২৯ লাখ টাকা ব্যয় করে এই রেস্তোরাঁটি তৈরি করেন। নান্দনিকতায় নির্মিত রেস্তোরাঁটি দেখতে প্রতিদিনই দূর দূরান্ত থেকে দর্শণার্থীরা এখানে ভিড় করছেন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর পলিশসহ ফিনিশিংয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৬ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যায় রেস্তোরাঁটি উদ্বোধন করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফুলবাড়ীগেট-তেলিগাতী বাইপাস সড়কের শেষ প্রান্তে কাঠমান্ডু রেস্তোরাঁটির অবস্থান। এটি নির্মাণে অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ বিশ্বাস প্রায় ২১ লাখ টাকা দিয়ে ৩ শতাংশ জমি কেনেন। গত বছরের প্রথম দিকে এই কাঠমান্ডু রেস্টুরেন্টটির স্থাপনার কাজ শুরু করেন তিনি। প্রায় এক বছর চার মাসের কাজ শেষে এখন সম্পূর্ন প্রস্তুত ব্যতিক্রমি এই আকর্ষণীয় দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাটি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয়েছে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। ২৫ ফুট উচ্চতার তিনতলা বিশিষ্ট এই স্থাপনাটিতে ব্যবহার করা হয়েছে কাঠ ও বাঁশ এবং এটিকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করতে চালে ব্যবহার করা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ক্যাঙ্গার ব্রান্ডের লাটিন। রেস্তোরাঁটিতে ৫০০ সিএফটির বেশি কাঠ, ২০০’র বেশি বাঁশ ব্যবহৃত হয়েছে। বাঁশ ও কাঠ দিয়ে দৃষ্টিনন্দন এই স্থাপনাটির কারুকাজ ও নংকশা তৈরিতে কুড়িগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দক্ষ ও অভিজ্ঞ কারিগররা কাজ করেছেন।
ভোজনরশিকদের জন্য শুরুতে এখানে থাকছে খুলনার ঐতিহ্যবাহী চুইঝাঁলের গরুর মাংশ, হাঁসের মাংশ দিয়ে কালাই রুটি, চালের গুড়ার রুটি, কয়লার আগুনে মাটির হাড়িতে দেশীয় খাঁটি শরিষার তেল দিয়ে তৈরি বিহারী মাটন হান্ডি, বিফ, ফাস্টফুড, হালিমসহ বাহারি খাবারের সমারহ। রেস্তোরাঁটি উদ্বোধনের পর বাণিজ্যিকভাবে চালু করা হবে।
কাঠমান্ডু রেস্তোরাঁর মালিক অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ বিশ্বাস বলেন, বড়বড় কবি ও সাহিত্যিকদের কাঠের তৈরী স্থাপনা দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যটকরা ভিড় জমায়। চেষ্টা করেছি কাঠের তৈরি স্থাপনা করে সবার নজর কাড়তে। অভ্যন্তরীণ কাজের আকর্ষণীয়তা শেষে রাতের আধারে দৃষ্টিনন্দন করতে প্রায় লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে করা হয়েছে বিশেষ আলোকসজ্জা।
তিনি আরও জানান, এক পর্যায়ে আর্থিক সমস্যার কারণে কাজ থেমে যায়। তখন বন্ধু হিসাবে পাশে দাঁড়ান জনতা ব্যাংক কুয়েট শাখার ইনচার্জ মো. আব্দুল হামিদ শেখসহ কিছু ব্যক্তি। তাদের সহযোগিতায় আর্থিক সমস্যার সমাধান হলে কাজটি আমার মনের মতো করে সম্পন্ন করি। রেস্তোরাঁটিতে এক সঙ্গে ১৫০ জন বসতে পারবেন। আগামী ৬ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যায় জমকালো উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে রেস্তোরাঁটি বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু করবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।