গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেয়ার নয় মাস পার হলেও একটি সুপারিশও বাস্তবায়ন না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ।

তিনি বলেছেন, কমিশনের কোনও প্রস্তাবই এখনও কার্যকর হয়নি- এটি দুঃখজনক।
শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টারের (বিজেসি) ষষ্ঠ সম্প্রচার সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কামাল আহমেদ।
কামাল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের যেসব প্রস্তাব ছিল, তার একটি প্রস্তাবও এ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়েছে- এমন কথা আমি বলতে পারছি না। এ জন্য আমি দুঃখিত।’
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদ্য দায়িত্ব পাওয়া তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তাকে উদ্দেশ করে কামাল আহমেদ বলেন, ‘তার ঘাড়ে হয়তো দোষ চাপানো যাবে না। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের ঘাড়ে দোষ চাপানো যাবে। অন্তর্বর্তী সরকার যে কিছুই করেনি, এটাই সত্য।’
তিনি বলেন, গত ২২ মার্চ গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দেয়া হয়। তখন আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলোর একটি আলাদা তালিকা দিতে বলা হয়েছিল। কমিশন ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেই তালিকা জমা দেয়। প্রধান উপদেষ্টা একাধিকবার বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন বলে শোনা গেলেও বাস্তবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
কামাল আহমেদ অভিযোগ করেন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা প্রতিবেদন নিয়ে ব্যস্ততা দেখালেও শেষ পর্যন্ত সুপারিশগুলো বিভিন্ন দপ্তর ও অধিদপ্তরে মতামতের জন্য পাঠানো হয়। সেখান থেকে জানানো হয়েছে, এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করা যাবে না।
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) একীভূত করে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান গঠনের সুপারিশের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, সরকার সেই উদ্যোগ নিতেও ব্যর্থ হয়েছে।
কামাল আহমেদ জানান, উপদেষ্টাদের নিয়ে দুই দফায় দুটি কমিটি গঠন করা হলেও ফলাফল শূন্য। একবার শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরারকে আহ্বায়ক করা হয়, আরেকবার পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের নেতৃত্বে কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু কোনো সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়নি।
তিনি বলেন, ‘এখন আর সময়ও নেই। চাইলে সরকার শুধু একটি নির্দেশনা জারি করেই অন্তত ২০টি সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে পারত। কিন্তু তা করা হয়নি। এটাই হতাশা ও ক্ষোভের কারণ।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী সারা হোসেন, বিজেসির উপদেষ্টা খায়রুল আনোয়ারসহ গণমাধ্যমের বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



